কুমিল্লায় বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্যপরিষদের ছাত্র সংগঠন ছাত্র ঐক্যপরিষদের বিক্ষোভ মিছিলে হামলার ঘটনায় যুবলীগ-ছাত্রলীগের ৫০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলাটি করেছেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্যপরিষদ কুমিল্লার সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ তাপস কুমার বকসী। এই ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
কুমিল্লার কোতোয়ালি থানার ওসি আহমেদ সনজুর মোর্শেদ সোমবার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন- কুমিল্লা নগরীর মোগলটুলি এলাকার বাসিন্দা নূর হোসেন স্বপন ও রাজবাড়ি কম্পাউন্ড এলাকার মহসিন আহমেদ শিপন। তারা যুবলীগের কর্মী বলে জানা গেছে।
মামলার আবেদনে উল্লেখ করা হয়, কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পূজা নিয়ে কটূক্তি, মুন্সীগঞ্জের জাতীয় সংসদ সদস্য মৃণাল কান্তি দাসকে স্থানীয় মেয়র কর্তৃক প্রকাশ্যে সাম্প্রদায়িক গালমন্দ, চারণ কবি রাধা রমণকে মারধর, সারাদেশে দুর্গামূর্তি ভাংচুর ও সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে কুমিল্লা জেলা শাখা প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে।
প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে মিছিল নিয়ে কান্দিরপাড় অভিমুখে রওয়ানা হন তারা। পুলিশ মিছিলটিকে কর ভবনের সামনে নজরুল এভিনিউ এলাকায় বাধা দেয়। এ সময় তারা অগ্রসর না হয়ে ফিরে আসতে থাকলে হঠাৎ অজ্ঞাতনামা আসামিরা অস্ত্র, রড, লাঠি, ইট, পাথর নিয়ে ধাওয়া করে। যুবলীগ-ছাত্রলীগের নামে স্লোগান দিতে দিতে ইট পাথর নিক্ষেপ করতে থাকে তারা। মিছিলে অংশগ্রহণকারী মহিলা ও পুরুষ সদস্যদের এলোপাতাড়ি মারধর করে জখম করা হয়।
এ বিষয়ে তাপস বকসী বলেন, ‘আমরা কুমিল্লার কোতয়ালি মডেল থানায় অজ্ঞাত ৫০০ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন পাঠিয়েছি। পুলিশ আবেদন গ্রহণ করেছে।’
কোতোয়ালি থানার ওসি আহমেদ সনজুর মোর্শেদ বলেন, ‘রোববার রাতে আমরা মামলা নিয়েছি। এই ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে তৎপরতা চলমান।’
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে পূজা উদযাপন নিয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের ‘মদমুক্ত পূজা’ করার আহ্বান জানিয়ে দেয়া একটি বক্তব্য নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৮ অক্টোবর বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ঐক্যপরিষদের দফতর সম্পাদক মিহির রঞ্জন হাওলাদার স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিনের বক্তব্যকে ‘সাম্প্রদায়িক উক্তি’ আখ্যা দিয়ে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। এই বক্তব্যসহ আরও কয়েকটি দাবিতে শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল করে বাংলাদেশ ছাত্র ঐক্যপরিষদ। এ সময় মিছিলে হামলার অভিযোগ ওঠে মহানগর যুবলীগ ও ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় আহত হন ৫জন।