ব্রিটিশ রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ ক্রিস ব্ল্যাকবার্ন বলেছেন, অধিকারের মতো একটি এনজিওর ভুল তথ্য দিয়ে বাংলাদেশের অনেক প্রধান গণমাধ্যম ফ্যাক্ট চেক না করেই সংবাদ প্রকাশ করেছে। ভুল তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে বাংলাদেশে নাশকতা ছড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে।
স্থানীয় সময় বুধবার বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের (ইপি) সদস্য মাক্সিমিলিয়ান ক্রাহের আমন্ত্রণে পার্লামেন্টের একটি কক্ষে এক সেমিনারে প্রধান বক্তা হিসেবে তিনি এ কথা বলেন।
ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে ‘বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং মানবাধিকার সম্পর্কে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা মিশন- সঠিক তথ্য জেনে নিই’ শীর্ষক এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন স্টাডি সার্কেল সভাপতি সৈয়দ মোজাম্মেল আলী। ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের সদস্য ম্যাক্সিমিলিয়ান ক্রাহ এমইপি বলেন, ১০ থেকে ১২ বছর আগে বাংলাদেশ নিয়ে অনেক কটাক্ষমূলক নিউজ হতো। এখন সেই বাংলাদেশ অনেক দেশের জন্য উদাহরণ। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, মানবাধিকার চর্চা, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন ও দেশের উন্নয়নের মতো কাজগুলোর জন্য দক্ষিণ এশিয়ার রোল মডেল হিসেবে পরিণত হয়েছে।
সৈয়দ মোজাম্মেল আলী বলেন, সম্প্রতি দেখা যায় অনেক বড় গণমাধ্যম বাংলাদেশ নিয়ে ভুল তথ্য দিয়ে অনেক নেগেটিভ সংবাদ প্রকাশ ও প্রচার করে। এর পেছনে একমাত্র কারণ হচ্ছে কিছু মানুষ বর্তমান সরকারকে পছন্দ করে না। বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বের ৩৭তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ, বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি অনেক পশ্চিমা দেশের চেয়ে দ্রুত ও বেশি। এইসব সংবাদ কিন্তু প্রকাশ করা হয় না।
তিনি বলেন, অধিকারের আদিলুর রহমানকে নিয়ে এই ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে কথা হয়েছে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে বলে। অথচ তার শাস্তি হয়েছে দেশের ভেতরে নাশকতা ছড়ানোর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায়। তার দেয়া ভুল তথ্য দিয়ে বিবিসির মতো গণমাধ্যম ভুল সংবাদ প্রকাশ করেছে।
তিনি ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টকে অনুরোধ করেন, যেকোনো বিবৃতি দেয়ার আগে সেই তথ্যগুলো যাচাই করে নেয়ার জন্য।
মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ আইনজীবী ড. রায়হান রশীদ বলেন, ‘ভুল তথ্য মানুষকে ভুল পথে ধাবিত করে। ভুল তথ্য কীভাবে গণহত্যার দিকে নিতে পারে সেটার জন্য রুয়ান্ডা আর মিয়ানমারের গণহত্যা দেখলেই বোঝা যায়। ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে বাংলাদেশ নিয়ে যা আলোচনা হয় তার মধ্যে অনেক ভুল তথ্য থাকে।
‘এগুলো যাচাই-বাছাই না করেই আলোচনা করা হয়, মন্তব্য করা হয়। এইসব ভুল তথ্য ছড়ানোর পেছনে দুটি বিষয় অনুসন্ধান প্রয়োজন। এসবের পেছনে কি কোন ধরনের লবিং মানি ব্যবহার করা হয় অথবা এইসব ভুল তথ্য ছড়িয়ে দেয়ার পেছনে কী উদ্দেশ্য থাকতে পারে? বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে ভুল তথ্য দেয়া হচ্ছে। এগুলো যাচাই-বাছাই করার দায়িত্ব ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের।’
সেমিনারে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল আহাদ চৌধুরী, বেলজিয়াম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাংগীর চৌধুরী রতন, যুক্তরাজ্য স্টাডি সার্কেলের কো-অর্ডিনেটর জামাল আহমেদ খান, গৌরবের ৭১-এর সভাপতি ব্যারিস্টার ইমরান আহমেদ জনি। এ ছাড়া সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন বেলজিয়ামে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাহবুব হাসান সালেহ।