বাজার নিয়ন্ত্রণে কেন সরকার ব্যর্থ হচ্ছে- এমন প্রশ্নে সাংবাদিকদের পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, ‘দুনিয়াতে কারোরই বাজার নিয়ন্ত্রণ করার শক্তি নেই। বাজার নিজেকে নিজেই নিয়ন্ত্রণ করে। তবে হ্যাঁ, কিছু অনুষঙ্গ আছে যেমন, সাপ্লাই-ডিমান্ড- এগুলোর তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ করা যায়।’
শুক্রবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন মন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, ‘একটা উদীয়মান অর্থনীতিতে সবসময় চাহিদা ও জোগানের মধ্যে অনেক পার্থক্য থাকে। স্থিতিশীল বুড়ো অর্থনীতিগুলোর বাজারে একটা ভারসাম্য আছে। উদীয়মান অর্থনীতিতে এই গ্যাপটা থাকবে। মাঝে মাঝে গ্যাপটা যখন বেশি হয় তখন ব্যথাটা বেশি অনুভূত হয়। আমরা স্বীকার করি এই মুহূর্তে ব্যথাটা বেশি আছে। গত মাসে সামান্য কমেছে। আমার বিশ্বাস এই মাসের শেষেও আরও সামান্য কমবে।’
সাংবাদিকেরা শ্রীলঙ্কার ঘুরে দাঁড়ানো অর্থনীতির প্রসঙ্গ তুললে পরিকল্পনন্ত্রী বলেন, ‘আমি আবার শুনলাম আইএমএফ তাদের টাকা দেবে না। শ্রীলঙ্কা আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র, তুলনা করে লাভ নেই। গত দুই বছর আগেও তো অনেকে বলেছিল, বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হয়ে গেছে। সেটা তো হই নাই। আমরা চাই, শ্রীলঙ্কা ভালো করুক। আমরা ভালো করতে পারবো। এই ধরনের তুলনা অনেক সময় মানুষ ভুলভাবে নেয়।’
তিনি বলেন, ‘শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি আমাদের অর্থনীতির দশভাগের এক ভাগও নয়। আবার শ্রীলঙ্কার অনেকগুলো বিষয় আছে যেগুলো আমাদের চেয়ে বেটার। যেমন, সাক্ষরতার হার। তুলনা করে লাভ নেই। শ্রীলঙ্কা যদি ঘুরে দাঁড়িয়ে থাকে তাহলে ভালোই। আমরাও ঘুরে দাঁড়াচ্ছি । ভয়ের বা সংকটের কোন বিষয় নেই বলে আমি মনে করি।
বাজারে সিন্ডিকেটের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘সিন্ডিকেট যদি দেখতে পারতাম বা ধরতে পারতাম তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা নিতাম। সিন্ডিকেট ধরা যায় না, এরা অধরাই থাকে। সিন্ডিকেট হয়, সিন্ডিকেট ভাঙ্গে; এরপর নতুন সিন্ডিকেট হয়। আমাদের মত উদীয়মান অর্থনীতিতে এই ধরনের কিছু বিকৃতি থাকবেই। তারা লাভের বা মুনাফার সুযোগটা নেবেই।
‘এগুলো মোকাবিলা করার জন্য আমাদের বিধিবিধান এনফোর্স করতে হবে। যেটা অর্ডারে আছে সেটাকে মাঠে নেমে অ্যাপ্লাই করতে হবে। এখানে মাঝে মাঝে আমাদের কিছু ঘাটতি হয়ে যায়। তবে বাজারে বা দোকানে গিয়ে লাথি মেরে এটা করা যাবে না। আমার মতে এটি ভয়ঙ্কর স্পর্শকাতর বিষয়।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ট্রাকে করে পণ্য বিক্রি করি। এক কোটি মানুষকে কার্ড দিয়ে তাদের সহায়তা করছি। এগুলো না করলে আমার ধারণা মুদ্রাস্ফীতি এখন ৮ দেখছেন, সেটা তখন ১২ হয়ে যেত। সুতরাং সরকার নানাভাবে শুল্ক মওকুফ করে দরিদ্র মানুষকে আর একটু সহায়তা দিয়ে এটি প্রশমিত করার চেষ্টা করছে।’