অর্থ পাচারে দেশের অর্থনীতি ফাঁপা হয়ে গেছে মন্তব্য করে সমাজে ধনবৈষম্য বৃদ্ধির সমালোচনা করেছেন মির্জা ফখরুল।
রাজধানীর গুলশানে শুক্রবার সকালে সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি ওই সময় আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১৫ বছরের দেশের অর্থনীতির চিত্র তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘সরকারের ব্যাংকিং খাতে চরম অব্যবস্থাপনা, লাগামহীন দুর্নীতি ও অর্থ পাচারে দেশের অর্থনীতি ফোকলা (ফাঁপা) হয়ে গেছে। মানুষের প্রকৃত আয়ের ফারাক ও বৈষম্য দিন দিন বাড়ছে।
‘দেশে দুটি শ্রেণি তৈরি হয়ে গেছে। একটি শ্রেণি দামি পোশাক পরে, নামিদামি ব্র্যান্ডের গাড়িতে চড়ে, অন্য শ্রেণিটি ভিক্ষা করে, না খেয়ে মরে।’
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক খাতে ‘শনির আছর’ পড়েছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বর্তমানে দেশের অর্থনীতির প্রতিটি প্রধান সূচকের অবস্থান এতোটাই শোচনীয়, যা দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিকে এক মহাবিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিয়েছে। অথচ বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকট আগের তুলনায় অনেকটা কমেছে।’
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে পুরো সম্পদ তারা লুট করে নিয়ে চলে গেছে। সেই লুটের টাকা বিদেশে পাচার করেছে।’
তিনি বলেন, ‘এক দিকে দেশের সাধারণ মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় খরচ মেটাতে পারে না, হতদরিদ্র মানুষ পেট ভরে দুবেলা খেতে পারে না, অন্যদিকে আওয়ামী স্বৈরশাসকেরা উন্নয়নের গালগল্প করে দেশটিকে ঋণের জালে জর্জরিত করে দেউলিয়ার পথে ঠেলে দিয়েছে।’
‘বিভিন্ন পত্রিকা ও অন্যান্য নির্ভরযোগ্য সূত্র মারফত আমাদের জানা মতে ২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ সালের ১২ অক্টোবর পর্যন্ত ব্যাংকিং ও অন্যান্য খাত থেকে ৯০ হাজার কোটি টাকা লুট করেছে তারা।’
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘এখানে (দেশে) কোনো নতুন বিনিয়োগ নাই, কোনো নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয় নাই। যার ফলে দারিদ্র্য একই রকম রয়ে গেছে।’
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বরাত দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সংস্থাটি বলছে এখানে দুটি সোসাইটি তৈরি হয়ে গেছে। একটি হচ্ছে খুবই বড়লোক শ্রেণি, যারা বিদেশে যায়, দামি পোশাক পরে, দামি গাড়িতে চড়ে। অন্য শ্রেণিটি গুলশানেই দেখবেন সিগন্যাল পয়েন্টগুলোতে ভিক্ষার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে। অসংখ্য মানুষ আছে যারা প্রতিদিনের খাবারটুকুও সংগ্রহ করতে পারে না। এটাই হলো দেশের বর্তমান বাস্তবতা।’