বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

প্রবাসীদের স্বজনদের জিম্মি করত চক্রটি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ১৩ অক্টোবর, ২০২৩ ১৫:২১

গ্রেপ্তারদের বরাত দিয়ে র‌্যাবের কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘বাংলাদেশ ও মধ্যপ্রাচ্যকেন্দ্রিক এ চক্রে ১২ থেকে ১৫ জন সদস্য রয়েছে। চক্রটি একজন বিমানযাত্রীর যে পরিমাণ মালামাল বহনের সুযোগ থাকে, তার সম্পূর্ণটাই তারা ব্যবহার করত। শুল্ক ফাঁকি দিতে তারা এমন কৌশলে পাঁচ থেকে ছয় বছর ধরে এভাবে স্বর্ণালংকারসহ বিভিন্ন পণ্য দেশে আনত।’

মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা প্রবাসীদের স্বজনদের জিম্মি করত একটি চক্র। সম্প্রতি এক প্রবাসীর বাবাকে জিম্মি করার অভিযোগে ওই চক্রের তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব।

রাজধানীর শান্তিনগর থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অপহৃত প্রবাসীর বাবাকে উদ্ধার ও জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার তিনজন হলেন খোরশেদ আলম, জুয়েল রানা মজুমদার ও মাসুম আহমেদ। ওই সময় তাদের কাছ থেকে বিপুল স্বর্ণ, ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রসাধনী ও অন্যান্য মূল্যবান পণ্যসামগ্রী জব্দ করা হয়।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে শুক্রবার দুপুরে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বাহিনীর আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, ‘গত সোমবার রাতে যশোরের চৌগাছা থেকে সৈয়দ আলী মন্ডল তার সৌদিফেরত ছেলেকে রিসিভ করতে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গিয়ে নিখোঁজ হন। সম্ভাব্য সকল জায়গায় খোঁজাখুজি করে পরিবার তাকে না পেয়ে নিখোঁজ আলীর জামাতা রাজধানীর মিরপুর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।

‘এ ছাড়াও পরিবার র‌্যাব-৪-এ উদ্ধারের জন্য আবেদন করে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায় র‌্যাব-৩ ও র‌্যাব-৪-এর যৌথ অভিযানে রাজধানীর শান্তিনগর এলাকার একটি বাসা থেকে নিখোঁজ ও অপহৃত সৈয়দ আলীকে উদ্ধার করা হয়।’

সৈয়দ আলীর ছেলে ও প্রবাসী নুরুন্নবীর বরাত দিয়ে কমান্ডার মঈন বলেন, ‘সৈয়দ আলীর ছেলে প্রবাসী নুরুন্নবী চলতি বছরে ২০ আগস্ট সৌদিতে যান, কিন্তু সেখানে ভালো চাকরির সুযোগ না পাওয়ায় দেশে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন।

‘ওই সময় চক্রের মধ্যপ্রাচ্যের হোতা আবু ইউসুফ ও তার সহযোগীরা নুরুন্নবীর আর্থিক দুর্বলতার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তাকে বাংলাদেশে আসার ফ্রি বিমানের টিকেট দেয়ার প্রস্তাব দেন। এ জন্য শর্ত দেয়া হয়, চক্রের দেয়া স্বর্ণালংকারসহ বেশ কিছু দামি প্রসাধনী পণ্য, ইলেকট্রনিকস আইটেম, চকলেট ভর্তি লাগেজ দেশে নিয়ে আসতে হবে। বিমানবন্দরে এসে চক্রের দেশীয় হোতা খোরশেদ আলমের কাছে পৌঁছে দেয়ার শর্ত দেয়া হয়।’

র‍্যাবের মুখপাত্র বলেন, ‘এ শর্তে রাজি হন প্রবাসী নুরুন্নবী। গত ৯ অক্টোবর রাতে নুরুন্নবীর বাবা সৈয়দ আলী বিমানবন্দরে ছেলেকে রিসিভ করতে ঢাকায় আসেন, কিন্তু চক্রের সদস্যরা তাকে অপহরণ করে। নুরুন্নবীর সঙ্গে পাঠানো ইউসুফের পণ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সৈয়দ আলীকে জামানত হিসেবে জিম্মি করা হয়।’

গ্রেপ্তারদের বরাত দিয়ে কমান্ডার মঈন বলেন, ‘বাংলাদেশ ও মধ্যপ্রাচ্যকেন্দ্রিক এ চক্রে ১২ থেকে ১৫ জন সদস্য রয়েছে। চক্রটি একজন বিমানযাত্রীর যে পরিমাণ মালামাল বহনের সুযোগ থাকে, তার সম্পূর্ণটাই তারা ব্যবহার করত। শুল্ক ফাঁকি দিতে তারা এমন কৌশলে পাঁচ থেকে ছয় বছর ধরে এভাবে স্বর্ণালংকারসহ বিভিন্ন পণ্য দেশে আনত।

‘চক্রটি মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে প্রবাসী বসবাস করে এমন এলাকাগুলোসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিত। এটা দেখে কেউ যোগাযোগ করলেই ফাঁদে পড়তেন প্রবাসীরা।’

এ ছাড়াও যারা ফ্রি টিকেটে দেশে আসতে চায় প্রথমে তাদের পাসপোর্টসহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজ চক্রের সদস্যরা নিজেদের জিম্মায় নিয়ে নেয় বলে জানান র‍্যাবের মুখপাত্র।

তিনি বলেন, ‘এরপর প্রবাসী বিমানে ওঠার পরে তার অজান্তেই স্বজনদের অপহরণ করে জিম্মি করা হতো। প্রবাসী ব্যক্তি ঢাকায় পৌঁছানোর পর চক্রের কয়েকজন সদস্য বিমানবন্দরে উপস্থিত থাকে। পরবর্তী সময়ে প্রবাসী যাত্রী বাংলাদেশে পৌঁছে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনা মালামালের লাগেজ চক্রের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করার পরে জিম্মি থাকা স্বজনকে মুক্তি দেয়া হয়।’

র‍্যাব জানায়, গ্রেপ্তার হওয়া চক্রের সদস্যরা এসর স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান পণ্য রাজধানীর গুলিস্তান ও পল্টনসহ দেশের বিভিন্ন মার্কেটে বিক্রি করতেন। বিদেশ থেকে নিয়ে আসা একটি লাগেজের পণ্য বাংলাদেশের বিভিন্ন মার্কেটে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকায় বিক্রি হতো।

এ বিভাগের আরো খবর