বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মৌলভীবাজারে জমে উঠেছে পূজার কেনাকাটা

পূজায় নিরাপত্তা বিষয়ে কমলগঞ্জ থানার ওসি সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন,‌ ‘শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে পুলিশের একটি টিম প্রত্যেকটি বাজারে ডিউটি করছে। তাদের পাশাপাশি সাদা পোশাকে আরও একটি টিম কাজ করছে।’

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম উৎসব দুর্গাপূজা। ২০ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে সবচেয়ে বড় এ উৎসব।

এ উপলক্ষে মৌলভীবাজারের বিভিন্ন উপজেলায় জমে উঠেছে পূজার কেনাকাটা। দুর্গাপূজা আসার আর বেশি দিন না থাকায় ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপস্থিতি বেড়েছে বাজারে।

ব্যবসায়ীরা জানান, পূজার এখনও আট দিন বাকি আছে। এ কারণে এখন পূজার সামগ্রী বেশি বিক্রি হচ্ছে। বিক্রি হচ্ছে শাড়ি-কাপড়ও। গার্মেন্টস পণ্য এখনও সেভাবে বিক্রি শুরু হয়নি। আরও কয়েকটা দিন গেলে বাজারে বিক্রি বাড়বে বলে আশা তাদের।

জেলার বাজারগুলো ঘুরে বৃহস্পতিবার দেখা যায়, নিজেদের কেনাকাটার পাশাপাশি দেবী দুর্গাকে সাজাতে বিভিন্ন সাজ-সরঞ্জাম কিনছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।

এ ছাড়া, বাজারের বিভিন্ন শাড়ি ও কাপড় ও নানা প্রসাধনী সামগ্রীর দোকানে দেখা গেছে ক্রেতাদের ভিড়।

দোকানগুলোয় দেখা যায়, শাঁখা, শঙ্খ, সিঁদুর, প্রতীমার শাড়ি, কীর্তনের মালা, কদম মালা, ঘণ্টা, ঘট, প্রদীপ, আগরদানি, ঠাকুরের মালা, জবের মালা, মুকুট, ধুতি, পাঞ্জাবিসহ পূজার নানা জিনিসপত্র কেনাকাটা করছেন তারা।

দুর্গা আর সরস্বতীকে সাজাতে কিনছেন পছন্দের শাড়ি ও মুকুট। নিজেদের জন্যও নিচ্ছেন শাঁখা, শঙ্খ। দেবী দুর্গা, সরস্বতী, লক্ষ্মীকে সাজাতে বিক্রি হচ্ছে শাড়ি, মালা, মুকুট ও অন্যান্য সামগ্রীও।

পূজার কেনাকাটা করতে যাওয়া সুনীলা সিনহা বলেন, ‘আমাদের সবচেয়ে বড় উৎসব এটি। আমরা পূজার জন্য কেনাকাটা করে থাকি। আজকে এসেছি মা দুর্গার জন্য কিনতে। আরও দুই দিন বাসার সবার জন্য কেনাকাটা করব। মায়ের জন্য শাঁখা, সিঁদুর, আলতা, শাড়ি কিনেছি, মহালয়ায় এগুলো দিয়ে প্রতীমা সাজাব।’

পূজার শাড়ি কিনতে আসা মৌলভীবাজার সদরের শিক্ষক রনেন্দ্র কুমার দেব বলেন, ‘পূজার আর বেশি দিন নেই। তাই আগেই শাড়ি কিনে নিচ্ছি। একইসঙ্গে পরিবারের অন্য সদস্যদের পোশাক কিনেছি। এরপরে পূজার অন্য জিনিসপত্র কিনব।’

কমলগঞ্জ উপজেলার সরকারি মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষিকা গৌড়ি দেবী বলেন, ‘শাড়ি-কাপড়গুলো আগে কিনে নিলাম। নতুবা পরে মার্কেটে ভিড়ের মধ্য কিনতে হয়। একইসঙ্গে সম্ভব হলে জুতা, স্যান্ডেলও কিনে নেব। আর পূজার দুই-একদিন আগে প্রসাদসহ অন্য জিনিসপত্র কিনব।’

পবিত্র সরকার বলেন, ‘বাজার ঘুরে পোশাকের দাম মোটামুটি ভালো মনে হচ্ছে। তবে পূজার কয়েকদিন আগে কেমন দাম হবে সেটা বলা যাচ্ছে না। কারণ, সে সময়টা ক্রেতাদের উপস্থিতি বেশি থাকবে দোকানগুলোতে। তাই দাম বেশি হতে পারে। এ ছাড়া পূজার আট থেকে ১০ দিন আগে জিনিসপত্র কিনলে নতুন ডিজাইনের পছন্দমত জিনিসপত্র পাওয়া যায়।’

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যকরী কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্মল দাশ পাইনকা বলেন, ‘চা শ্রমিকদের পূজার কেনাকাটা এখনও শুরু হয়নি। বৃহস্পতিবার চা বাগানগুলোতে উৎসব ভাতা পাওয়ার পর চা শ্রমিকরা পূজার কেনাকাটা করবেন।’

চা শ্রমিক কন্যা লক্ষ্মী রাজভর জানান, বোনাস পাওয়ার পর পূজার কাপড় কেনা হবে।

কমলগঞ্জ উপজেলার শমসেরনগর বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী মুকুল বলেন, ‘পূজার এখনও আট দিন বাকি আছে। তাই পূজার কেনা-বেচা এখনও জমেনি। তবে বেচা-বিক্রি শুরু হয়েছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের নারীরা তাদের পছন্দের শাড়ি কিনছেন। আশা করা যাচ্ছে, আরও পাঁচ থেকে ছয় দিন পরে জমবে কেনাবেচা।’

কাপড় ব্যবসায়ী প্রেমানন্দ দেবনাথ বলেন, ‘পূজার বাজার আগে শুরু হলেও এ এলাকায় চা বাগানগুলোতে বোনাস দেয়ার পর কাপড়ের বাজার জমে উঠে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে কাপড়ের দোকানগুলোতে ক্রেতা বাড়ছে।’

কমলগঞ্জের শমসেরনগর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবদুল হান্নান বলেন, ‘বাজারে পূজার সামগ্রী বেশি বিক্রি হচ্ছে। জামা-কাপড় ও অন্যান্য পণ্য বিক্রি শুরু হয়েছে, তবে তুলনায় কম। পূজার এক সপ্তাহ আগে পুরোদমে শুরু হয় বেচাকেনা। আশা করা যাচ্ছে, আরও চার থেকে পাঁচ দিন পরে বেচাকেনা ভালো জমবে।’

পূজায় নিরাপত্তা বিষয়ে কমলগঞ্জ থানার ওসি সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন,‌ ‘শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে পুলিশের একটি টিম প্রত্যেকটি বাজারে ডিউটি করছে। তাদের পাশাপাশি সাদা পোশাকে আরও একটি টিম কাজ করছে।

‘কোনো ঝামেলা ছাড়া ব্যবসায়ীরা যেন ব্যবসা করতে পারেন ও কাপড় কিনতে আসা ক্রেতারা শপিং করে বাড়িতে ফিরতে পারেন সে জন্য আমাদের পুলিশের পক্ষ থেকে তাদের সহযোগিতা করা হচ্ছে। তা ছাড়া প্রত্যেক বিট অফিসার যার যার সংশ্লিষ্ট বিটের বাজারে নজর রাখছেন।’

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে মৌলভীবাজার জেলায় এক হাজার ৩৬টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ৮৮৪টি সার্বজনীন এবং ১৫২টি ব্যক্তিগত পূজামণ্ডপ।

এ বিভাগের আরো খবর