বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জবই বিলের ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ

  • প্রতিনিধি, নওগাঁ   
  • ১২ অক্টোবর, ২০২৩ ২১:২৬

নওগাঁ জেলার সাপাহার উপজেলা ইউএনও আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘জবই বিল কেন্দ্রীক পর্যটন বিকাশে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রতিনিয়ত বহুমুখী পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। এরই একটি অংশ জবই বিলে নৌকাবাইচ। এই প্রতিযোগীতা আয়োজন করায় আবহমান বাংলার চিরায়ত চিত্র ধরে রাখার পাশাপাশি পর্যটকদের কাছে জবই বিল আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে বলে আশা করছি। এতে স্থানীয়দের জীবন জীবিকায় পরিবর্তন আসবে যদি আমরা এর মান বজায় রেখে এ ধারা বজায় রাখতে পারি।’

নওগাঁ জেলার সাপাহার উপজেলার জবই বিল। বিলের দুই পাড়ে প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে হাজারও মানুষের ঢল। থেমে থেমে হর্ষধ্বনিতে মুখরিত হচ্ছে নদীর চারপাশ।

বৈঠার ছলাৎ ছলাৎ শব্দ আর মাঝি-মাল্লাদের কণ্ঠের কোরাস ‘হেইও রে, হেইও’ শোনা যাচ্ছে একটু পর পর। একেকটি নৌকা ছুটে চললেই হর্ষধ্বনি দিয়ে দলগুলোকে উৎসাহিত করছেন দর্শকরা।

এভাবেই আনন্দঘন পরিবেশের মধ্য দিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার ঐতিহ্যবাহী জবই বিলে উদযাপিত হলো ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগীতা।

স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের আয়জনে হয় এই নৌকাবাইচ। এতে অংশ নেয় নওগাঁ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ আশেপাশের ছোট-বড় ৮টি নৌকা।

নৌকাবাইচের এমন আয়োজন দেখতে গিয়ে দেখা যায়, আয়োজন উপভোগ করতে তিব্র রোদ ও গরম উপেক্ষা করে দুপুরের পর থেকেই ভির জমতে শুরু করে জবই বিলের চারপাশে। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে জবই বিলের মাহিল প্রান্ত থেকে নৌকাবাইচ শুরু হয়ে মাছ চত্বর এলাকায় শেষ হয়।

নৌকাবাইচের দূরত্ব ছিল প্রায় ১ কিলোমিটার। এ সময় বিলের মাঝ দিয়ে চলে যাওয়া রাস্তার দুই পাশে মানুষের উপচে পড়া ভিড় ছিল দেখার মতো। নৌকাবাইচ দেখতে আসা দর্শনার্থীদের আনন্দ-উল্লাসে মুখরিত হয়ে ছিল বিলের চারপাশ।

এ সময় প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় কয়েকজন নৌকাবাইচ দেখতে আসা দর্শনার্থীর।

দর্শনার্থী মমিন হোসেন বলেন, ‘বাইচ দেখতে আমি দুপুর ২টার মধ্যে এখানে এসেছি। অনেকক্ষণ অপেক্ষার পর বিকেল সাড়ে চারটার দিকে শুরু হয়েছে নৌকাবাইচ। বাইচ দেখে খুব আনন্দ পেয়েছি।’

প্রতি বছর এমন আয়োজন করার আহ্বান জানিয়ে দর্শনার্থী রিনা খাতুন বলেন, ‘আমার জীবনে প্রথম নৌকাবাইচ দেখতে এসেছি। নৌকাবাইচ দেখে দারুণ আনন্দ পেয়েছি।’

নওগাঁ শহর থেকে নৌকাবাইচ দেখতে আসা সুমন আলী বলেন, ‘ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে নৌকাবাইচ উৎসবের কথা জেনে এখানে এসেছি বন্ধুদের সঙ্গে। এসে খুব ভালো লাগছে। গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী এই নৌকাবাইচ এখন বিলুপ্তির পথে, আশা করছি এখানে অন্তত এ ঐতিহ্য ধরে রাখবেন স্থানীয়রা।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘জবই বিল কেন্দ্রীক পর্যটন বিকাশে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রতিনিয়ত বহুমুখী পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। এরই একটি অংশ জবই বিলে নৌকাবাইচ। এই প্রতিযোগীতা আয়োজন করায় আবহমান বাংলার চিরায়ত চিত্র ধরে রাখার পাশাপাশি পর্যটকদের কাছে জবই বিল আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে বলে আশা করছি। এতে স্থানীয়দের জীবন জীবিকায় পরিবর্তন আসবে যদি আমরা এর মান বজায় রেখে এ ধারা বজায় রাখতে পারি।’

পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘আবহমান গ্রামবাংলার সংস্কৃতি ধরে রাখতে ও জবই বিলের ইতিহাস-ঐতিহ্যর ধারা বজায় রাখার একটি অংশ এই নৌকাবাইচ। নৌকাবাইচকে কেন্দ্র করে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। স্থানীয়দের মাঝে যেন প্রাণ ফিরে আসে।’

আগামীতে আরও বড় পরিসরে এই ধরনের আয়োজন করা হবে বলে জানান এ মন্ত্রী।

এ বিভাগের আরো খবর