লক্ষ্মীপুর আওয়ামী লীগ নেতা ওমর ফারুককে গুলি করে হত্যার ঘটনায় ৮ জনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা ও টা অনাদায়ে আরও ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন।
অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এ মামলায় আরও ৫ আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছে আদালত।
জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন বলেন, ‘রায়ের সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। ঘটনার পর থেকেই তারা পলাতক রয়েছেন।’
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন মো. কাউসার, সাইফুল ইসলাম, মো. সিরাজ, আলাউদ্দিন আলো, মো. আউয়াল, মো. রাজু, মো. জাকের ও মো. তুহিন। খালাসপ্রাপ্তরা হলেন মো. সুমন, মো. সুজন, সজিব হোসেন, রিয়াজ প্রকাশ চিতা ও মিলন প্রকাশ মিলা।
মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, ওমর ফারুক চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছিলেন। তিনি একই ইউনিয়নের পশ্চিম লতিফপুর গ্রামের বাসিন্দা। আওয়ামী লীগের রাজনীতি করায় বিএনপির সন্ত্রাসী বাহিনী প্রধান জিসানের সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব হয়। এর জের ধরে ২০১৪ সালের ৬ ডিসেম্বর জিসানসহ তার লোকজন ফারুককে গুলি করে। দীর্ঘদিন ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থেকে সুস্থ হয়ে ফারুক বাড়িতে ফেরেন। এর মধ্যে জিসান আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মারা যায়।
২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর সকালে প্রতিবেশি ইসমাইল হোসেন বাড়িতে এসে ফারুককে ডেকে নিয়ে যান। বাড়ির কাছাকাছি একটি দোকানে বসে তারা চা পান করছিল। কিছুক্ষণ পরই আসামিরা তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে আহত অবস্থায় ফারুককে উদ্ধার করে নোয়াখালী হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরদিন নিহতের স্ত্রী ফাতেমা বেগম বাদী হয়ে ৯ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ৮ জনের বিরুদ্ধে চন্দগ্রঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন।
২০১৬ সালের ১০ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) গোলাম হক্কানি ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এর মধ্যে মামলার প্রধান আসামি মিলন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মারা যাওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যহতি দেয়া হয়। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত বৃহস্পতিবার উক্ত রায় দেয়।