দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলায় যৌতুকের দাবিতে মারধর ও গ্যাসের ট্যাবলেট খাইয়ে এক গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর স্বামী ও শাশুড়িকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে বুধবার সকালে তার মৃত্যু হয়।
প্রাণ হারানো ১৪ বছর বয়সী সাদিয়া আক্তার সাথী গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার তল্লাপাড়া গ্রামের শাহাদত হোসেনের মেয়ে।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন ঘোড়াঘাট উপজেলার নয়াপাড়া গ্রামের ২০ বছর বয়সী লাইম মিয়া ওরফে নাহিদ ও তার মা ৪০ বছর বয়সী লাকি বেগম।
উপজেলার নয়াপাড়া গ্রামে মঙ্গলবার রাতে শ্বশুরবাড়িতে গৃহবধূকে মারধর ও গ্যাসের ট্যাবলেট খাইয়ে দেয়ার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় গৃহবধূর বাবা বাদী হয়ে বুধবার সকালে থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলায় বলা হয়, তিন থেকে চার মাস আগে বাড়ি থেকে উঠিয়ে নিয়ে গিয়ে সাথীকে বিয়ে করেন নাহিদ। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন প্রায়ই নির্যাতন করতেন সাথীকে। মঙ্গলবার দিনের বেলা যৌতুকের দাবিতে সাথীকে মারধর করার পর রাতে তার স্বামী সাথীকে ঘুম থেকে তুলে মুখে বিষজাতীয় গ্যাসের ট্যাবলেট ঢুকিয়ে দেন। ঘটনাটি অন্যদিকে নিয়ে যেতে শ্বশুরবাড়ির লোকজনই তাকে ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
মামলার বাদী সাথীর বাবা শাহাদত হোসেন বলেন, ‘যৌতুকের জন্য পরিকল্পিতভাবে আমার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। আমার জামাতা ইতোপূর্বেও দুটি বিয়ে করেছিল। যৌতুকের কারণে মারধর করায় সেই দুজন চলে গেছে। আমি হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) নুরে আজমির ঝিলিক বলেন, ‘অচেতন অবস্থায় পরিবারের লোকজন তাকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছিল। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় আমরা রোগীকে দিনাজপুর এম. আবদুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করি। পরে তাকে নেয়ার পথে হাসপাতালের সামনে তার মৃত্যু হয়।’
ঘোড়াঘাট থানার ওসি আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, ‘সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ দিনাজপুর এম. আবদুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।’
গৃহবধূর স্বামী ও শাশুড়িকে বুধবার বিকেলে দিনাজপুরের আদালতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান ওসি।