বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘ওবায়দুল কাদেরের কী করুণ দশা, ইউরেনিয়াম কী জিনিস তা জানেন না। আসলে দলে নিজের মনিবের প্রতি তোষামোদি করতে গিয়ে, মনিবকে খুশি করতে গিয়ে তিনি আগ বাড়িয়ে বিনোদনমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন।’
বেশি লাফালাফি করলে ইউরেনিয়াম মাথায় ঢেলে ঠাণ্ডা করে দেব- আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা বলেন।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে মঙ্গলবার এক আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন মির্জা ফখরুল। ‘গণতন্ত্র, সার্বভৌমত্ব ও রোহিঙ্গা সংকট’ শীর্ষক এই সভার আয়োজন করে গণঅধিকার পরিষদের একাংশ।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “দেশে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তাতে সভা-সমাবেশে সীমাবদ্ধ না থেকে এখন রাজপথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার বিকল্প নেই। আওয়ামী লীগ মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও কাজে গণতন্ত্রে বিশ্বাসী নয়। আওয়ামী লীগের গণতন্ত্রের কথা ‘ভূতের মুখে রাম নাম’। আজ দেশের সর্বস্তরের মানুষ এক মুহূর্তের জন্যও এই সরকারকে দেখতে চায় না।”
ফখরুল বলেন, ‘মানুষ বেশি কিছু চায় না, শুধু নিজের ভোট নিজে দিতে চায়। কিন্তু দেশে নির্বাচনই তো হয় না। আওয়ামী লীগ বলে যে ২০১৪ ও ২০১৮ সালে নির্বাচন করেছে। মানুষ সেসব দেখেছে। সাধারণ মানুষ ভোট দিতে পারেনি।
‘২০১৮ সালে বিএনপি ভুল করে হলেও কিছুটা বিশ্বাস করে সরকারের সঙ্গে সংলাপে গিয়েছিল। আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুন্দর সুন্দর কথা বলেছিলেন। অথচ আওয়ামী লীগ কথা রাখেনি।’
ডান-বাম উত্তর-দক্ষিণ বুঝি না মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘সব রাজনৈতিক দলকে দেশরক্ষায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছি। এবার মানুষ জেগে উঠেছে।’
আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে লুটেরাদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বর্গিদের মতো আচরণ করছে সরকার। এখন পুরনো মামলায় বিএনপি নেতাদের সাজা দেয়া হচ্ছে। আইনমন্ত্রী তালিকা করে দিচ্ছেন কার কার বিচার আগে হবে। বিশেষ সেল গঠন করতে বলা হচ্ছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দেশের সব সূচক নিচের দিকে নামতে শুরু করেছে। রিজার্ভের পরিমাণ এত কমেছে যে কয়েক মাস পর আমদানি করার টাকা থাকবে না। রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে চার গুণ বেশি খরচ করেছে শুধু কমিশন খাওয়ার জন্য, দুর্নীতির জন্য। পদ্মা সেতু দিয়ে রেলপথ উদ্বোধন করা হয়েছে ভালো কথা। কিন্তু কত টাকা বেশি খরচ করেছে খোঁজ নেন।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সামনে নির্বাচন। একই কায়দায় আবারও শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনের কথা বলা হচ্ছে। সংবিধানের দোহাই দেয়া হচ্ছে।
‘আর কোনো কথা না বলে, কালবিলম্ব না করে দল-মত নির্বিশেষে যারা দেশকে ভালোবাসেন দেশকে বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়ুন। আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় এলে সমস্যা নেই। কিন্তু বন্দুকের ভয় দেখিয়ে নির্বাচন আর হবে না। ভোটের ব্যবস্থা করতে হবে।’