নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় সাংবাদিক ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা পরিচয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি ভুয়া জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তার পরিচয়পত্রসহ চারটি পরিচয়পত্র উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন নোয়াখালী পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ৪৪ বছর বয়সী গোলাম মোস্তফা বুলবুল ও বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার হাজীপুর এলাকার ৩৮ বছর বয়সী রিয়াজুল ইসলাম সোহাগ।
সোমবার রাতে উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের নবগ্রাম বাজারে স্থানীয়রা তাদের আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। পরে এ নিয়ে মামলা হলে মঙ্গলবার দুপুরে তাদেরকে নোয়াখালীর মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে হাজির করা হয়।
কবিরহাট থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সাংবাদিক ও সরকারি কর্মকর্তা পরিচয়ে বল প্রয়োগ করে চাঁদা দাবির অভিযোগে নবগ্রাম বাজারের সার ব্যবসায়ী শহীদ উল্ল্যাহ বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।’
নবগ্রাম বাজারের সার ব্যবসায়ী ব্যবসায়ী শহীদ উল্ল্যাহ বলেন, ‘বুলবুল নিজেকে দৈনিক জাতীয় অর্থনীতির নোয়াখালী প্রতিনিধি ও প্রেসক্লাবের সদস্য এবং সোহাগ নিজেকে দৈনিক বিজয় বাংলাদেশের নোয়াখালী প্রতিনিধি পরিচয় দেন। সোমবার সন্ধ্যার দিকে আমার দোকানে এসে নিজেদের সাংবাদিক ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে সারের দাম মনিটরিং করতে এসেছেন বলে জানান।
‘এক পর্যায় তারা সারের দাম ও ওজনে গরমিল আছে বলে ৬০ হাজার টাকা দাবি করেন। এ সময় তাদের কথাবার্তা সন্দেহ হলে তাদের আটক করে থানায় খবর দেয়া হয়। পরে পুলিশ আসলে নিজেদের সাংবাদিক বলে পরিচয় দিয়ে কয়েকটি পরিচয়পত্র বের করেন তারা। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাদের থানায় নিয়ে যায়। এ ঘটনায় আমি থানায় মামলা করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই চক্র গত কয়েক মাসে উপজেলার ১৫ থেকে ২০ জন ব্যবসায়ীর কাছে নিজেদের সরকারি কর্মকর্তা পরিচয়ে চাঁদাবাজি করেছে।’
নোয়াখালী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবু নাছের মঞ্জু বলেন, ‘প্রেসক্লাবের কোনো সদস্য বা এর বাহিরেও কোনো সাংবাদিক যদি সাধারণ জনগণকে হয়রানি ও প্রতরণার সঙ্গে জড়িত থাকে তাদের বিরুদ্ধে গঠনতন্ত্র মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
নোয়াখালী প্রেসক্লাবের সভাপতি বখতিয়ার শিকদার বলেন, ‘সাংবাদিক পরিচয়ে বিভিন্ন সরকারি অফিস ও সাধারণ মানুষকে যারা হয়রানি করবে তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব। আমি পরিষ্কারভাবে বলছি যে, অপকর্মের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের প্রেসক্লাবের সদস্যপদ বাতিল করা হবে।’