দেশব্যাপী সর্বোচ্চ সংখ্যক সিনেমা হলে বঙ্গবন্ধুর বায়োপিক ‘মুজিব-একটি জাতির রূপকার’ মুক্তি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ায় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানিয়েছে চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির নেতারা।
সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সোমবার বিকেলে সিনেমা হল মালিকদের সংগঠনের নেতারা তথ্যমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা দিয়ে ধন্যবাদ জানান। এ সময় মন্ত্রণালয়ের সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার উপস্থিত ছিলেন।
চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির প্রধান উপদেষ্টা সুদীপ্ত কুমার দাস বলেন, ‘বহু প্রতীক্ষিত বঙ্গবন্ধুর বায়োপিক সারাদেশে মুক্তি দেয়ার সিদ্ধান্তের জন্য আমরা তথ্যমন্ত্রী ও তার মন্ত্রণালয়কে অকুণ্ঠ ধন্যবাদ জানাই। এখনকার যে প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি তারা মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, পাকিস্তানিদের অত্যাচার, রাজাকার ও স্বাধীনতা বিরোধীদের সম্পর্কে একটা স্বচ্ছ ধারণা ও বাস্তব উপলব্ধি পাবে, সবার মাঝে আরও দেশপ্রেম জেগে উঠবে। সমিতির নেতাদের মধ্যে আমির হামজা, আব্দুল মতিন প্রধান, চান মিয়া, বিল্লাল হোসেন, মাসুদ পারভেজসহ আরও অনেকে এ বৈঠকে অংশ নেন।
স্বপ্রণোদিত হয়ে ধন্যবাদ জানাতে আসা সিনেমা হল মালিকদের স্বাগত জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা যে এই সিনেমা নির্মাণ সমাপ্ত করতে পেরেছি এই জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই কারণ এই ছবি চিত্রনাট্য থেকে শুরু করে প্রতি ধাপে ধাপে প্রধানমন্ত্রী মনিটর করেছেন, দেখেছেন, পরামর্শ দিয়েছেন। শ্যাম বেনেগাল যদি পরিচালক হন এখানে নির্দেশক হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং স্ক্রিপ্ট রাইটার যদি অতুল তেওয়ারি হয়ে থাকেন তাহলে স্ক্রিপ্ট রাইটারের প্রধান উপদেষ্টাও হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমি একটুও বাড়িয়েও বলছি না, যেটি বাস্তব সেটিই বলছি।’
বঙ্গবন্ধুর বায়োপিক সত্যিকার অর্থে ইতিহাসের একটি দলিল হয়ে দাঁড়াচ্ছে উল্লেখ করে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কিভাবে খোকা থেকে শেখ মুজিব, শেখ মুজিব থেকে বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধু থেকে জাতির পিতা হলেন সেটিও এই ছবির মধ্যে উঠে এসেছে। ভারতের পুরো টিম আগামীকাল আসছে। এই ছবি মানুষ দেখবে। এই ছবি জাতিকে নাড়া দেবে। আমি হল মালিকদের ধন্যবাদ জানাই, দেশের প্রায় সব ক’টি হলে প্রায় ২শ’ পর্দায় এক সাথে এই ছবি মুক্তি পেতে যাচ্ছে এবং সবাইকে অনুরোধ জানাবো হলে গিয়ে সিনেমাটি দেখার জন্য।’
এ সময় বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে এবং বেগম জিয়াও দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন বলে মন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দলকে বিএনপির নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার বিষয়টি জানানোর বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘বিএনপি এই কথা বারবার বলে আসছে, ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগেও বলেছিল, পরে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল। আমি আশা করবো এবারও তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলো কি করলো না সেটির চেয়েও বড় বিষয় হচ্ছে জনগণ অংশগ্রহণ করলো কি না। বিএনপি ও তার মিত্ররা যদি নির্বাচন বর্জনও করে, জনগণের অংশগ্রহণে একটি আন্তর্জাতিকমানের নির্বাচন বাংলাদেশে যথা সময়ে অনুষ্ঠিত হবে।’
বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমি মহান স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করি, বেগম জিয়া যেন বারংবারের মতো দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন। অতীতেও যখন বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ হয়েছিলেন তখনই বিএনপি বলেছিল এবং তখনও মেডিক্যাল টিম একই ধরনের ব্রিফ করেছিল যে, বেগম জিয়ার মৃত্যুঝুঁকি রয়েছে, বিদেশে না নিলে তাকে বাঁচানো যাবে না। কিন্তু স্রষ্টার কৃপায় বাংলাদেশের চিকিৎসদের মেধাবী চিকিৎসা, সেবা-শুশ্রূষায় তিনি প্রতিবারই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।’
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বেগম জিয়া যাতে সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যসেবা পান সে জন্য সরকার আন্তরিক এবং যত ধরণের সহযোগিতা প্রয়োজন সেটি করছে। দেশের সবচেয়ে ভালো একটি হাসপাতালে তার ইচ্ছা অনুযায়ী তিনি চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং সরকারের পক্ষ থেকে এটিও বলা হয়েছে, যদি কোনো বাইরের ডাক্তারও আনার প্রয়োজন পড়ে তারা আনতে পারেন। আর বিদেশ পাঠানো সেটি আদালতে এখতিয়ার। যদি তাদের সেটাই করতে হয় তাহলে তারা আদালতে শরণাপন্ন হতে পারেন।’