বরিশালের বাকেরগঞ্জে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চালক ফয়সাল হত্যায় এক আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও তিনজনকে যাবজ্জীবন দিয়েছে আদালত।
বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক কে এম রাশেদুজ্জামান রাজা সোমবার এ রায় দেন।
আইনজীবী ওবায়দুল্লাহ সাজু জানান, আসামিদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামি রাসেল হাওলাদার বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের বাসিন্দা।
যাবজ্জীবন পাওয়া তিনজন হলেন বেল্লাল হোসেন, শাহিন মিয়া ও ইদ্রিস হাওলাদার।
রায়ে সৈয়দ মৃধাকে খালাস দেয়া হয়েছে। তিনি বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের বাসিন্দা।
রায় ঘোষণার সময় দণ্ডিত চার আসামি উপস্থিত ছিলেন।
প্রাণ হারানো ফয়সাল আহম্মেদের বাড়ি বাকেরগঞ্জ উপজেলার খয়রাবাদ গ্রামে।
মামলার বরাত দিয়ে আইনজীবী সাজু জানান, দণ্ডিত চারজন ২০১৯ সালের ৪ মার্চ উপজেলার বালিগ্রামে মো. শহিদুল ইসলামের বাড়িতে গভীর নলকূপ স্থাপন করতে যান। পরদিন ৫ মার্চ রাত সাড়ে ১১টার দিকে দিকে বালিগ্রামের সড়কে মোটর সাইকেল চালক ফয়সালকে একা পান তারা। তখন ফয়সালের পথরোধ করে গভীর নলকূপ স্থাপনের পাইপ বসানোর লোহার হ্যান্ডেল ও রড দিয়ে মাথায় ও মুখে আঘাত করেন।
এরপর গলায় রশি দিয়ে ফাঁস দিয়ে ফয়সালকে হত্যা করে পাশের ইউসুফ হাওলাদারের দোকানের পেছনে মরদেহ লুকিয়ে ফেলে। পরে ফয়সালের মোবাইল ফোন, টাকা ও মোটরসাইকেল নিয়ে চলে যান তারা।
মামলার বিবরণে উল্লেখ আছে, ওই দিন রাত সাড়ে ১২টার দিকে লুট করা মোবাইল ফোন, টাকা ও মোটর সাইকেলের ভাগবাটোয়ারা নিয়ে নিজেদের মধ্যে মারামারি হয়। গৃহকর্তা শহিদুল এসে মারামারি থামানোর সময় মোবাইল ফোনে ফয়সালের ছবি দেখতে পান। পরে ঘরে পেছনে মোটরসাইকেল পেয়ে ফয়সালের বাবা নুরুল ইসলামকে খবর দেন শহিদুল। তিনি এসে মোটরসাইকেল শনাক্ত করেন।
তারা ফয়সালকে হত্যা করে মরদেহ লুকিয়ে ফেলার কথা স্বীকার করেন। ভোরে পুলিশকে খবর দেয়া হলে ৬ মার্চ সকালে আসামিদের দেখানো স্থান থেকে ফয়সালের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
আইনজীবী সাজু জানান, ওই দিন নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে পাঁচজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও তিনজনকে আসামি করে বাকেরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন।
বাকেরগঞ্জ থানার পরিদর্শক নকীব আকরাম হোসেন পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে ২০২০ সালের ৩১ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।