মানবাধিকার সংগঠন অধিকার-এর সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিন এলানকে বিচারিক আদালতের দেয়া দণ্ড বাড়াতে আপিল আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী শনিবার আপিল আবেদন করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, অ্যাটর্নি জেনারেলের নির্দেশে দণ্ড বাড়াতে আপিল ফাইল করা হয়েছে। আপিলে সাজা বাড়াতে বেশ কয়েকটি যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে।
কী কী যুক্তি দেয়া হয়েছে জানতে চাইলে রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী বলেন, ‘অ্যাটর্নি জেনারেলের নির্দেশনা ছাড়া বিস্তারিত বলা যাবে না।’
যে আইনে রায় ঘোষণা করা হয়েছে, সেটাতে সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন সাজা কত বছরের বিধান রয়েছে জানতে চাইলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী বলেন, ‘আইনে সর্বোচ্চ সাজা ২০ বছর এবং সর্বনিম্ন সাত বছর রয়েছে। সে হিসেবে আমরা আপিল আবেদন করেছি।’
এ সপ্তাহের যেকোনো দিন আপিলটি শুনানির জন্য হাইকোর্টের একটি বেঞ্চে উপস্থাপন করা হবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে আসামিপক্ষও খালাস চেয়ে গত ২৫ সেপ্টেম্বর আপিল আবেদন করেছেন।
দশ বছর আগে শাপলা চত্ত্বরের ঘটনায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের (আইসিটি) ৫৭ ধারার মামলায় গত ১৪ সেপ্টেম্বর আদিলুর ও নাসিরকে দুই বছর করে কারাদণ্ড দেয় ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে তাদের ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়। বর্তমানে তারা কারাগারে আছেন।
২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান নিয়ে অসত্য-বিকৃত তথ্য প্রচারের অভিযোগে আদিলুর ও নাসিরের নামে মামলা হয়।
এই মামলায় আদিলুর ২০১৩ সালের ১০ আগস্ট গ্রেপ্তার হন। পরে তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। ওই বছরের ১১ আগস্ট আদালতের অনুমতি নিয়ে অধিকারের কার্যালয়ে তল্লাশি চালিয়ে দুটি কম্পিউটার ও দুটি ল্যাপটপ জব্দ করা হয়। সে বছরের ৪ সেপ্টেম্বর আদিলুর ও নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
পুলিশের প্রতিবেদনে বলা হয়, আদিলুর ও নাসির ৬১ জনের মৃত্যুর ‘বানোয়াট, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মিথ্যা’ তথ্যসংবলিত প্রতিবেদন তৈরি ও প্রচার করে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি করেন, আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নের অপচেষ্টা চালান এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সরকার ও রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি দেশে-বিদেশে চরমভাবে ক্ষুণ্ন করেন। মামলায় আইসিটি আইনের ৫৭ (২) ধারায় ২০১৪ সালের ৮ জানুয়ারি আদিলুর ও নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এরপর বিচার শেষে রায় ঘোষণা করা হয়।