বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বাঁশখালীতে নলকূপে গ্যাস, আতঙ্কে পরিবারের সদস্যরা

  • প্রতিনিধি, আনোয়ারা ও বাঁশখালী (চট্টগ্রাম)    
  • ৭ অক্টোবর, ২০২৩ ১২:২২

বাঁশখালীর ইউএনও জেসমিন আক্তার বলেন, ‘ইতোপূর্বে আমরা এমন খবর পেয়েছি। সেটা বন্ধ হয়ে যাওয়ার খবর শুনেছিলাম। নতুন করে আবার গ্যাস নিঃসৃত হওয়ার বিষয়টি আপনার কাছে জানলাম। বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রেরণ করা হবে।’

দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন, পাশের গাছপালায় লাগছে সেই আঁচ। আলী করিম বিদেশ থেকে ছুটিতে এসে নলকূপ বসাচ্ছিলেন। সেই নলকূপেই মিলেছে গ্যাসের অস্তিত্ব।

চলতি বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার বাহারচরা ইউনিয়নের চার নম্বর ওয়ার্ডের জলকদর খালের বেড়িবাঁধ সংলগ্ন মইদ্দারো বাড়ির ছাবের আহমদের নতুন বাড়িতে ঘটনাটি ঘটে।

স্থানীয় লোকজনের মুখে শুনে প্রতিনিধি ছুটে যান ঘটনাস্থলে। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, ভেজামাটি দিয়ে স্থানটি আঁটোসাঁটো করে লেপ্টে দেয়া হয়েছে। ওপরের অংশটি প্রায় শুকিয়ে গেছে। সাংবাদিক আসার খবর পেয়ে ঘরের বাসিন্দাদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক ও কৌতূহল লক্ষ্য করা গেছে। কেউ কথা বলতে রাজি হচ্ছিল না।

ওই বাড়ির প্রবীণ ব্যক্তি আলী আকবরের সঙ্গে প্রতিনিধি কথা বললে বুঝতে পারেন, কেন তারা কথা বলতে রাজি হচ্ছিলেন না।

আলী আকবর জানান, স্থানীয়দের অনেকে ভয় দেখিয়ে বলেছিলেন, এটা জানাজানি হলে সরকার এ জায়গা নিয়ে নেবে। মূলত এ ভীতিতে তারা কথা বলতে রাজি হচ্ছিলেন না।

প্রবাসী আলী করিম দেশে এসে পরিবারের জন্য সুপেয় পানির ব্যবস্থা করতে নলকূপ বসানোর ব্যবস্থা করেন। নলকূপ মিস্ত্রি মাটির নিচে পাইপ বসাতে গিয়ে টের পান কোনো কিছুর অস্বাভাবিক চাপ। দমকা হাওয়ার চাপ এতটাই ছিল যে, প্লাস্টিকের পাইপ আর ভেতরে প্রবেশ করানো যায়নি। বাধ্য হয়ে নলকূপ মিস্ত্রি আরও দক্ষিণে গিয়ে নতুন করে নলকূপ বসান। সেখানে চাপ অনুভব করলেও মিস্ত্রিরা নলকূপ বসাতে সক্ষম হন।

প্রতিনিধি প্রবাসী আলী করিমকে ভিজিটিং কার্ড দিয়ে আসেন এবং তাকে আশ্বস্ত করেন যে, এখানে গ্যাস কূপ আবিষ্কৃত হলে এটি জাতীয় সম্পদে পরিণত হবে। সরকার এ জমি অধিগ্রহণ করলে তাদের জমির মূল্যের অনেক গুণ মূল্য তারা পাবেন। সেই সঙ্গে পুনর্বাসিত করার সুযোগও পাবেন। গ্যাসের আভাস পেলে ফোন দেয়ার অনুরোধ জানিয়ে চলে আসেন প্রতিনিধি।

৫ অক্টোবর বিকেলে প্রবাসী আলী করিম ফোন করেন এ প্রতিনিধির মোবাইল নম্বরে। তার কণ্ঠে এক ধরনের ভীতি কাজ করছিল।

আলী করিম বলেন, ‘আমি একজন প্রবাসী, দেশে এসে সুপেয় পানির জন্য নলকূপ বসাতে গিয়ে বিপত্তিতে পড়ে যাই। এটা নিয়ে হইচই পড়ে গেলে, আমার পরিবারের কোনো সমস্যা হতে পারে ভেবে এতটা প্রকাশ করতে চাইনি, কিন্তু বৃষ্টির পানিতে ঢেকে দেয়া মাটি সরে গেলে পুনরায় ওই কূপ থেকে বুদবুদ করে বাতাস উঠতে থাকে। ভয়ে আছি, বিষয়টিতে আমরা কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা চাই।’

ঘটনাস্থলে পুনরায় ছুটে যান প্রতিনিধি। সেখানে গিয়ে দেখেন, ওই স্থান দিয়ে বুদবুদ উঠছে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য মোহাম্মদ এনামের উপস্থিতিতে সেই জায়গাটির মুখ চারপাশ থেকে ভেজা কাদামাটি দিয়ে মুখটিকে ছোট করে আনা হয়। জমে থাকা পানি সরিয়ে আগুন দেয়া হলে আবারও আগুন জ্বলতে থাকলে বিষয়টা নিয়ে নতুন করে ভাবার সুযোগ এসেছে বলে জানান স্থানীয় কয়েকজন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ এনাম বলেন, ‘আমি ইতোমধ্যে বেশ কয়েকবার এসেছি। প্রায় ১৭ দিন ধরে এ জায়গা দিয়ে অনবরত গ্যাস নিঃসৃত হচ্ছে। বিষয়টি যদি পকেট গ্যাস কিংবা অল্প জমা গ্যাস হতো, তবে এতদিনে নিঃশেষ হয়ে যেত। আমি বাপেক্সসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আহ্বান জানাচ্ছি, বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য।’

বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেসমিন আক্তার বলেন, ‘ইতোপূর্বে আমরা এমন খবর পেয়েছি। সেটা বন্ধ হয়ে যাওয়ার খবর শুনেছিলাম। নতুন করে আবার গ্যাস নিঃসৃত হওয়ার বিষয়টি আপনার কাছে জানলাম। বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রেরণ করা হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর