নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করতে থাকা বিএনপি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না বলে আবারও হুমকি দিয়েছে। দলটি বলছে, আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা ছাড়তেই হবে।
দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শুক্রবার বিকেলে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে রাজধানীর পুরানা পল্টনের কালভার্ট রোডে গণঅধিকার পরিষদ আয়োজিত সংহতি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ হুমকি দেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অনেক হয়েছে এবার যাও- এমন স্লোগান তরুণদের কণ্ঠে জোরালোভাবে ফুটিয়ে তুলতে হবে। শেখ হাসিনা পদত্যাগ না করলে তাকে জনগণের প্রবল আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত করা হবে। তারপর একটি নিরপেক্ষ ভোট হবে। সেই ভোটে অংশ নেবে বিএনপি। এদের অধীনে কোনো ভোটে যাবে না বিএনপি ও সমমনারা।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘কতদিন ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবেন আপনাকে গুনতে হবে। দেশটাকে জনগণ ইজারা দেয়নি। আপনাকে ক্ষমতা ছাড়তেই হবে। সময় থাকতে না ছাড়লে জনগণের প্রবল আন্দোলনে আপনি ক্ষমতাচ্যুত হবেন।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘শেখ হাসিনা সব সময় সংবিধান অনুযায়ী অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু তার এ কথা যে পুরোটাই মিথ্যা সেটার বড় প্রমাণ ২০১৮ সালের নির্বাচন। ওই নির্বাচনের আগে তিনি দেশবাসীর সামনে বলেছিলেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা হবে। অথচ আমরা দেখলাম আগের রাতে ভোট হয়ে গেল। আর ২০১৪ সালে কেমন ভোট হয়েছে তাও আমরা দেখেছি। ওই নির্বাচনে তো আমরা যাইনি।’
তিনি বলেন, ‘আবারও শেখ হাসিনা একটি ভোটারবিহীন পাতানো নির্বাচন করতে চান। সে লক্ষ্যে এগোচ্ছেন তিনি। কিন্তু এবার দেশের মানুষ জেগে উঠেছে। তারা আর শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় না রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মানুষ এখন সব ভয়কে জয় করতে রাজপথমুখী।
‘এবার শুধু দেশের জনগণ নয়, গোটা পশ্চিমাবিশ্ব এখন শেখ হাসিনার পাতানো নির্বাচনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা বলছে, এখানে নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে হবে।’
দেশের সর্বত্র অরাজকতা চলছে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রতি মাসে রিজার্ভ কমছে। গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানি কমছে। ব্যবসায়ীরা ঠিকমতো শ্রমিকদের বেতন দিতে পারছে না। মানুষ ঠিক মতো খেতে পারে না। কিন্তু অত্যাচারের ভয়ে কেউ কথা বলেন না। প্রতিবাদ করায় বিএনপির ৬০০ নেতা-কর্মীকে গুম করা হয়েছে। ৪৫ লাখ নেতা-কর্মীর নামে মামলা দেয়া হয়েছে।’
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের সভাপতিত্বে সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানের সঞ্চালনায় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহম্মদ ইবরাহীম, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, এনপিপির সভাপতি ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বিএলডিপি সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন সেলিম প্রমুখ।