‘স্যাংশন যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব ব্যাপার’ মন্তব্য করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘কাকে যুক্তরাষ্ট্রে যেতে দেবে বা দেবে না— এটা সবসময় তারাই নির্ধারণ করে। তবে আমি বলি- ভিসা দিলে তো সবাইকেই দিতে হয়। এতে আমাদের কিছু বলার নেই।’
বৃহস্পতিবার বিকেলে নেত্রকোণার মোহনগঞ্জের আদর্শ নগরে পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের নবনির্মিত তিনতলা ভবন উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কে কী বলল— সেগুলো তাদের বিষয়। যে সমস্ত রাজনৈতিক দল নিজেদের সমর্থন হারিয়েছে, তাদের থেকে জনগণ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, তারা অনেক ধরনের কথা বলছে। অমুক হবে, তমুক হবে, কিন্তু সেটা বিষয় না। এসবে কান দেয়া ঠিক না। নির্বাচন যথাসময়ই হবে।’
‘বিনা অপরাধে পুলিশ হয়রানি করছে না’ উল্লেখ করে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘যার নামে আমাদের এখানে মামলা রয়েছে, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে, তাদের পুলিশ যেকোনা সময়ই ধরতে পারবে। এটা পুলিশের চলমান প্রক্রিয়া।
‘অপরাধ দমনের জন্য পুলিশ সবসময় তাদের অর্পিত দায়িত্ব পালন করে। এখানে কে পুলিং এজেন্ট বা কোনটি রাজনৈতিক দল সেটা প্রশ্ন না, প্রশ্ন হলো- সে দোষী কি না, দোষ করেছে কি না বা আদালত তাকে ওয়ারেন্ট (গ্রেপ্তারি পরোয়ানা) জারি করেছে কি না।
‘আমাদের কাছে এ ধরনের কোনো সংবাদ এখনও আসেনি। না জেনে পুলিশ কাউকে হয়রানি করেনি। সুনিশ্চিত হয়ে, অর্থাৎ যিনি অপরাধ করেন বা যার নামে ওয়ারেন্ট আছে, তাকেই গ্রেপ্তার করে।’
পুলিশ বাহিনীর প্রশংসা করে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সবসময় খেয়াল রাখেন এ দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা যেন অটুট থাকে। এ দেশে জঙ্গি-সন্ত্রাসের যেন আর উত্থান না ঘটে। সেজন্য শান্তি-শৃঙ্খলায় শুধু পুলিশ বাহিনী নয়, আনসার, বিজিবি, র্যাব, কোস্ট গার্ড- সবাইকে আমরা আধুনিক গার্ড হিসেবে, আধুনিক শান্তিরক্ষা বাহিনী হিসেবে তৈরি করছি। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের আমাদের পুলিশ বাহিনী যাচ্ছে, বিশেষ করে নারী পুলিশ সদস্যরা সুনামের সঙ্গে কাজ করছেন।’
‘পুলিশ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাহিনীকে পরিণত হয়েছে’ জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আধুনিক পুলিশ সৃষ্টি করেছি। বঙ্গবন্ধু পঁচাত্তরে রাজারবাগে বলেছিলেন- পুলিশকে হতে হবে জনগণের পুলিশ। পুলিশকে হতে হবে স্বাধীন বাংলাদেশের পুলিশ। আজকে পুলিশ সেই জায়গাটিতে এসেছে। যেকোনো চ্যালেঞ্জ তারা মোকাবিলা করতে পারে। দক্ষতা, অভিজ্ঞতা দিয়ে তারা কাজ করছে।
‘বৈশ্বিক মহামারি করোনার সময় মা কিংবা বাবার মৃতদেহ অনেক সন্তান নিতে যায়নি। কিন্তু পুলিশই তাদের দাফনসহ সমস্ত কাজ করেছে। কাজেই পুলিশ আজকে সেই জায়গাটিতে এসেছে। তাদের ওপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থা রয়েছে।’
পরে মন্ত্রী পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের সামনে শহীদ স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ের শহীদ মিনার উদ্বোধন করেন। সন্ধ্যায় সেখানে সুধী সমাবেশে যোগ দেন।
মোহনগঞ্জ পৌর মেয়র লতিফুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছাড়াও বক্তব্য দেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য সাজ্জাদুল হাসান, ময়মনসিংহ রেঞ্জ ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য, জেলা প্রশাসক শাহেদ পারভেজ, পুলিশ সুপার ফয়েজ আহমেদ, মোহনগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শহীদ ইকবালসহ অন্যরা।