নওগাঁ সদরের একটি বাসার শয়নকক্ষ থেকে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শহরের দয়ালের মোড়ের পাশে বউ বাজার এলাকার ভাড়া বাসা থেকে বুধবার রাত ১১টার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
প্রাণ হারানো ২৬ বছর বয়সী মিলন হোসেন নওগাঁ শহরের বাঙ্গাবাড়িয়া মহল্লার বাসিন্দা ছিলেন। তিনি অটোরিকশার চালক ছিলেন।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নওগাঁ শহরের দয়ালের মোড়ের পাশে বউ বাজার এলাকায় মোজাম্মেল হকের বাসায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। মোজাম্মেল শহরের বাসায় না থেকে গ্রামের বাড়ি জেলার মান্দা উপজেলায় বসবাস করেন। তার বাসাটি ভাড়া দেয়ার জন্য দায়িত্ব দিয়েছিলেন শাশুড়ি সাজেদা বেগমকে। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে মিলন ও শারমিন নিজেদের স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে বাসাটি ভাড়া নেন। রাতের কোনো এক সময় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।
বাসার জানালা খোলা থাকলেও মূল দরজায় তালা দেয়া ছিল। প্রতিবেশীরা নতুন ভাড়াটিয়ার খোঁজখবর নেয়ার জন্য এলেও দরজায় তালা দেখা ফিরে যান। বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঘরের জানালা খোলা থাকায় প্রতিবেশীরা উঁকি দিয়ে দেখেন, রক্তাক্ত অবস্থায় কেউ পড়ে আছে। পরে থানা পুলিশকে খবর দেয়া হয়। পুলিশ এসে তালা ভেঙে ঘরে ঢুকে মিলনের গলা কাটা মরদেহ উদ্ধার করে।
বাসার মালিকের শাশুড়ি সাজেদা বেগম বলেন, ‘বাসার দুইটা অংশ। মাঝখানে দেয়াল দিয়ে আলাদা করা আছে। এক পাশে ভাড়াটিয়া আছে। অপর পাশেও ফাঁকা ছিল।
‘বুধবার দুপুরে তারা দুইজন স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে মাসিক চার হাজার টাকা চুক্তিতে ভাড়া নেয়। তাদের কাছে জাতীয় পরিচয়পত্র চাওয়া হলে পরে দেবে বলে জানায়। বাসা পরিষ্কার করে তারা দুজনে থাকা শুরু করে, তবে রাতের কোনো এক সময় এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।’
নিহত মিলনের মা সেলিমা খাতুন বলেন, ‘পারিবারিক একটু ঝামেলার কারণের মিলন ও তার বউ দুজন মিলে ভাড়া বাড়িতে থাকার সিদ্ধান্ত নেয়। আমার ছেলের বউ শারমিন আলাদা থাকতে চাপ দেয়, যার কারণে মিলন ভাড়া বাসা নেয়।
‘এমনভাবে আমার ছেলেকে হত্যা করা হবে, তা কল্পনা করতে পারিনি। শারমিন তো পলাতক। সে এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। তাকে দ্রুত আটক করে কঠিন শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
নওগাঁ সদর মডেল থানার ওসি ফয়সাল বিন আহসান জানান, খবর পেয়ে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এ ঘটনার পর থেকে তার স্ত্রী পলাতক।
তিনি আরও জানান, মিলনের স্ত্রীকে আটকের চেষ্টা চলছে। শারমিন এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নাকি অন্য কেউও এর সঙ্গে যুক্ত আছে, এসব বিষয়ে তদন্ত চলছে।