বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

চার বছর আগে ভেঙেছিল ব্রিজটি, ঠিক হবে কবে?

  • প্রতিনিধি, বাগেরহাট   
  • ৪ অক্টোবর, ২০২৩ ১৮:৪৬

চন্ডিপুর গ্রামের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সজিব জোমাদ্দার বলেন, ‘অনেক সময় আমরা নৌকা পাই না। বিশেষ করে রাতের বেলা খেয়া বন্ধ হয়ে যায়। তখন সাঁতরে খাল পার হওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না।’

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলায় একটি ব্রিজের জন্য বছরের পর বছর ধরে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন ১০ গ্রামের হাজার হাজার মানুষ। বাঁশ, কাঠ, সুপারি গাছ ইত্যাদি দিয়ে এতদিন কাজ চালিয়ে নিলেও এবারের বৃষ্টির মধ্যেই ভেঙে গেছে তাদের যোগাযোগের ওই অবলম্বন। ফলে ফের ভোগান্তি শুরু হয়েছে স্কুল শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের।

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার চিংড়াখালী ইউনিয়নের প্রতন্ত গ্রাম চন্ডিপুর। এই গ্রামের দাউরা খালের ওপর নির্মিত আয়রন ব্রিজটি ভেঙ্গে গেছে প্রায় ৪ বছর হলো। ব্রিজটি ভেঙ্গে যাওয়ার পর তা পুনর্নিমাণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের গা ছাড়া ভাব দেখে এক পর্যায়ে স্থানীয় গ্রামবাসী প্রাথমিকভাবে নিজেদের ব্যবস্থা করে নেন।

ব্রিজের ভাঙা অংশ সুপারি গাছ, কাঠ ও বাঁশ দিয়ে মেরামত করে যাতায়াত করছিল খালের দুপাশের গ্রামবাসী। যাতায়াতের বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় এতদিন জীবনের ঝুঁকি থাকলেও ওই ব্রিজটি দিয়েই পার হতেন চন্ডিপুর, পূর্ব চন্ডিপুর, বড় জামুয়া, ছোট জামুয়া, কাছিকাটা, চড়গোপালপুরসহ ১০ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। তবে মাসখানেক আগে ব্রিজটি পুরোপুরি ভেঙ্গে যায়। এরপর থেকে ফের শুরু হয়েছে ভোগান্তি।

সুপারি গাছ দিয়ে ভাঙা ব্রিজ সংস্কার করে কাজ চালালেও মাসখানেক আগে তাও গিলেছে খালটি। ছবি: নিউজবাংলা

বর্তমানে নৌকায় করে পারাপার হতে হচ্ছে দুপাড়ের বাসিন্দাদের। পারাপারকালে অনাকাঙ্ক্ষিত নানা দূর্ঘটনার শিকারও হতে হচ্ছে, বিশেষ করে, স্কুল ও মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থী এবং নারীদের। এমতাবস্থায় ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

চন্ডিপুর গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আমেনা খাতুন বলে, ‘ব্রিজটি ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে আমাদের অনেক কষ্ট হচ্ছে। নৌকায় করে খাল পার হওয়ার সময় আমার ভয় লাগে। কিছুদিন আগে আমার এক বন্ধু নৌকা থেকে পড়ে গিয়েছিল। আমিও যদি অমন করে পড়ে যাই!’

একই গ্রামের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সজিব জোমাদ্দার বলেন, ‘অনেক সময় আমরা নৌকা পাই না। বিশেষ করে রাতের বেলা খেয়া বন্ধ হয়ে যায়। তখন সাঁতরে খাল পার হওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না।’

ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় পারাপার হতে হয় স্কুলপড়ুয়া শিশুদের। ছবি: নিউজবাংলা

পূর্ব চন্ডিপুর গ্রামের বাসিন্দা আসলাম শেখ বলেন, ‘এই ব্রিজটির জন্য আমাদের আশপাশের ১০ গ্রামের হাজার হাজার মানুষ চরম ভোগান্তির মধ্যে রয়েছে। ব্রিজটি ভেঙ্গে যাওয়ার পর আমরা গ্রামবাসী চাঁদা তুলে সুপারি গাছ গিয়ে ব্রিজটি কোনোমতে মেরামত করে ব্যবহার করছিলাম। কিন্তু একমাস আগে সেটা ভেঙে যাওয়ার পরও কেউ সেটা মেরামত বা সংস্কারের জন্য এগিয়ে আসেননি।’

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য জামাল শেখ বলেন, ‘দাউরা খালের ওপর ব্রিজটি দীর্ঘদিন ধরে ভেঙ্গে পড়ে আছে। আমি বিষয়টি চেয়ারম্যান, ইউএনওসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে জানিয়েছি। কিন্তু এটা নিয়ে কারও মাথাব্যাথা নেই। এই ব্রিজটির জন্য হাজার হাজার মানুষ ভোগান্তির মধ্যে রয়েছে। আমি সরকারের কাছে দাবি জানাই, ব্রিজটি যেন দ্রুত মেরামত করা হয়।’

বাগেরহাট স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী শরিফুজ্জামান বলেন, ‘ব্রিজটি নতুন করে নির্মাণের জন্য আমাদের পক্ষ থেকে মাটি পরীক্ষাসহ আনুসাঙ্গিক সকল কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তবে অর্থ বরাদ্ধ না হওয়ায় ব্রিজটি নির্মাণ করা যাচ্ছে না।’

বরাদ্ধ পেলে আগামী অর্থবছরে ব্রিজটি নির্মাণের করা হবে বলে জানান তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর