বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বন কর্মকর্তা শ্যামা প্রসাদের নামে আবারও চাঁদাবাজির মামলা

  •    
  • ৪ অক্টোবর, ২০২৩ ১০:৪৫

কয়রার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. আজাহারুল ইসলাম মঙ্গলবার কয়রার এসি-ল্যান্ডকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন।

বোট লাইসেন্স সার্টিফিকেট (বিএলসি) নবায়ন ও বনে প্রবেশের অনুমতিতে অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণের অভিযোগে পশ্চিম সুন্দরবনের কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশন কর্মকর্তা (এসও) শ্যামা প্রসাদ রায়ের নামে আবারও চাঁদাবাজির মামলা করা হয়েছে।

মামলায় ওই স্টেশনের বোটম্যান (বিএম) নাসির উদ্দিন হাওলাদারকেও আসামি করা হয়েছে। ১২ জন জনপ্রতিনিধি ও জেলেকে এই মামলার সাক্ষী করা হয়েছে।

কয়রার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. আজাহারুল ইসলাম মঙ্গলবার কয়রার এসি-ল্যান্ডকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার মহারাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. সাইদ মোল্লা বাদী হয়ে শ্যামা প্রসাদের নামে মামলার আবেদন করেছিলেন।

সুন্দরবনে ঘুষের বিনিময়ে বিষ দিয়ে মাছ শিকারে সহায়তা, বিএলসি নবায়ন ও অনুমতিপত্রে কয়েক গুণ বেশি অর্থগ্রহণ, যাকে তাকে মারধর, জেলেদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়সহ অসংখ্য বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছিলেন শ্যামা প্রসাদ রায়।

এ নিয়ে গত ২০ সেপ্টেম্বর দৈনিক বাংলায় ‘রক্ষকই ভক্ষণ করছেন সুন্দরবন’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। ওই প্রতিবেদনটিও মামলার আবেদনের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে, যা আমলে নিয়েছে আদালত। দৈনিক বাংলায় প্রতিবেদন প্রকাশের পরের দিন ২১ সেপ্টেম্বর সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন স্বাক্ষরিত পত্রে তাকে পাটকোস্টা টহল ফাঁড়িতে বদলি করা হয়।

মামলার আরজিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বিএলসি নবায়ন ও অনুমতি প্রদানের সময় সরকারের রাজস্ব হিসাবে ২৪০ বা ২৫০ টাকা জমা দিতে হয়, তবে শ্যামা প্রসাদ রায় ও নাসির উদ্দিন হাওলাদার অতিরিক্ত ৬৫০, ৯০০, ২ হাজার বা ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা হিসেবে গ্রহণ করেন। তাদের চাহিদামতো টাকা জোগাড় করতে না পেরে স্থানীয় অনেক জেলে দিনের পর দিন অর্ধাহারে, অনাহারে দিনাতিপাত করছেন। এ ছাড়া বিষ প্রয়োগে সুন্দরবন ও সাগর থেকে মাছ পাচারের জন্য তারা অনেক জেলের কাছ থেকে লাখ টাকা আদায় করছেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা একাধিকবার বিষয়টি নিয়ে কাশিয়াবাদ স্টেশন কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করলেও সমাধান হয়নি।

মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়, গত ২০ সেপ্টেম্বর স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে শ্যামা প্রসাদকে সরকারি রাজস্ব মোতাবেক বিএলসি নবায়ন ও অনুমতি প্রদান করার সুপারিশ করা হলে তিনি পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এ ছাড়া গত ১০ সেপ্টেম্বর মামলার সাক্ষী শাহাদাত হোসেন ও মো. আবদুল হাকিম গাজীকে বিএলসি ও অনুমতি গ্রহণের সময়ে ৯ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে। তাদের (শ্যামা প্রসাদ রায় ও নাসির উদ্দিন হাওলাদার) বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গেলে জেলেদের খুন ও জখমের ভয় দেখান তারা।

বারবার মামলার আসামি শ্যামা প্রসাদ রায়

গত ২৬ জুলাই কয়রা উপজেলার মঠবাড়ি গ্রামের বনজীবী জেলে মো. কালাম গাজী বাদী হয়ে কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশন কর্মকর্তা (এসও) শ্যামা প্রসাদ রায়ের নামে মামলা করেন। বিচারক ওই মামলটি খুলনা জেলা পুলিশ সুপারকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

সেই মামলায় বলা হয়েছে, সুন্দরবনের কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশনের কর্মকর্তা (এসও) শ্যামা প্রসাদ রায় ও কমিউনিটি প্যাট্রলিং গ্রুপের (সিপিজি) সদস্য বিল্লাল হোসেন দীর্ঘদিন ধরে বনজীবী জেলে-বাওয়ালিদের নানাভাবে হয়রানি করছেন। সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী, ২৫ মণ ধারণক্ষমতার একটি নৌকার জন্য ১৫ টাকা হারে রাজস্ব দেয়ার কথা রয়েছে, কিন্তু তারা দুজন মিলে একেকটি নৌকার অনুমতিপত্র (বিএলসি) নবায়নে ২ হাজার টাকা করে ঘুষ আদায় করছেন। এ রকম ৯ শতাধিক নৌকা অনুমতিপত্র নবায়নের অপেক্ষায় রয়েছে।

এ ছাড়া কয়রা উপজেলার ৪ নম্বর কয়রা গ্রামের মুছানুর গাজীকে মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করেছেন শ্যামা প্রসাদ রায়। বিএলসি নবায়নের জন্য তার কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন স্টেশন কর্মকর্তা, তবে টাকা দিতে না চাওয়ায় স্টেশন কর্মকর্তা শ্যামা প্রসাদ রায় তাকে মারাত্মকভাবে মারধর করেছেন।

একাধিক সূত্রে জানা যায়, কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশন কর্মকর্তা (এসও) শ্যামা প্রসাদ রায় বর্তমান স্টেশনে আসার আগে ছিলেন নীল কমল অভয়ারণ্য কেন্দ্রে। এর আগে তিনি কালাবগি ফরেস্ট স্টেশনে এসও ছিলেন। তিনি বর্তমান স্টেশনে নানা নতুন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়াচ্ছেন এমন নয়। এর আগের দুই স্টেশনেও তিনি অনেক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন।

২০১৯ সালের অক্টোবরে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত শ্যামা প্রসাদের নামে মামলা করেছিলেন বিকাশ চন্দ্র বিশ্বাস নামের এক জেলে। তাতে নীল কমল এলাকার অভয়ারণ্যে মাছ শিকারে অতিরিক্ত ঘুষ আদায় ও জেলেদের মারপিটের অভিযোগ করা হয়েছিল।

ওই বছরের একই মাসে কয়রার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে তার নামে আলাদা আরেকটি মামলা হয়েছিল।

২০১৮ সালে কালাবগি ফরেস্ট স্টেশনে কর্মরত থাকার সময়ে তার নামে দাকোপ থানায় চাঁদাবাজির মামলা করেছিলেন জেলেরা।

এ ছাড়া কালাবগি ফরেস্ট স্টেশনের দায়িত্বে থাকার সময়ে তিনি এক বৃদ্ধ ব্যক্তির দাড়ি ধরে মারধর করেছিলেন। ঘটনাটি ব্যাপক আলোচিত হয়েছিল।

এ বিভাগের আরো খবর