দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ এবং তার অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা আজ লন্ডনে শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি তাদের এ আহ্বান জানান।
বিদেশে অবস্থানকারী কিছু গোষ্ঠীর লোকজন ইচ্ছাকৃতভাবে দেশের বিরুদ্ধে অপবাদ দিচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এদের মধ্যে কিছু লোক আছে, যারা বিভিন্ন অপরাধ, অপকর্ম বা দুর্নীতি করে দেশ ছেড়েছেন, বা অবৈধ কাজের কারণে চাকরি হারিয়েছেন। ইচ্ছাকৃতভাবেই দেশের বিরুদ্ধে অপবাদ ছড়াচ্ছেন। তারা (সরকারের) কোনো ভালো ও উন্নয়নমূলক কাজ দেখেন না, বরং তারা সারা বাংলাদেশে সবসময় শুধু সমস্যাই খুঁজে পান।’
এ সময় তার দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, তারা যেন দেশের মানুষের কাছে সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের প্রচার চালায়। খবর বাসসের।
সরকার এবং দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সমালোচকদের সারা বাংলাদেশে ঘুরে দেখার অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গ্রামীণ বাংলাদেশে কোনো অভিযোগ নেই। আমি দাবি করতে পারি যে, বাংলাদেশের গ্রামীণ জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়েছে এবং আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে, আমরা তাদের উন্নত জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় অবশিষ্ট সব কাজ করব।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশে চরম দারিদ্র্যের হার মাত্র ৫ শতাংশে নেমে এসেছে এবং বেকারত্বের হার এখন মাত্র ৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর জিয়াউর রহমান ও অন্যান্য সামরিক স্বৈরশাসক অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পর, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ১৯৮০ সালে লন্ডন থেকেই বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আন্দোলন শুরু করেন।’
সরকার প্রধান বলেন, ‘২০০৮ সালে নির্বাচনে জয়লাভ করে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে স্থিতিশীল গণতন্ত্র বজায় রয়েছে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কারণেই আজ দেশ এই অভূতপূর্ব উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করছে। দেশের অভ্যন্তরে আগুন সন্ত্রাসের মতো স্থানীয় ও বৈশ্বিক উভয় সমস্যা কাটিয়ে, আমরা এখন দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।’
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘আমার বাবা দেশের স্বাধীনতা এনেছেন এবং এই স্বাধীনতাকে ব্যর্থ করা যাবে না। এই স্বাধীনতার সুফল দেশের সকল মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। আর এ জন্যই আমার সংগ্রাম।’
যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের কথাও এ সময় শোনেন প্রধানমন্ত্রী। তারা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতারা নতুন কমিটি গঠনের মাধ্যমে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে সর্বসম্মতভাবে দাবি জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। লন্ডনে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। এতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।