রাজশাহীতে ৯৩ হাজার টাকার ইস্যু করা একটি চেক জালিয়াতি করে ৫ লাখ ৯৩ হাজার উত্তোলন চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। রোববার দুপুরে অগ্রণী ব্যাংকের কেশরহাট বাজার শাখায় টাকা উত্তোলন করতে গিয়ে এই ঘটনা সামনে আসে।
অভিযুক্ত কেশরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম।
এ বিষয়ে স্কুল কমিটির সভাপতির দাবি, ৯৩ হাজার টাকা উত্তোলনের জন্য তিনি চেকে সাক্ষর করেছিলেন। পরে প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম আরও ৫ লাখ টাকা যোগ করে টাকা উত্তোলনের চেষ্টা করেন।
তবে স্কুল কমিটির সভাপতির এ অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক দাবি করেছেন, টাকা উত্তোলনের সকল জায়গাতেই ৫ লাখ ৯৩ হাজার টাকা লেখা রয়েছে। সভাপতি সাহেব সবখানে সাক্ষরও করেছেন। এখন তিনি অস্বীকার করছেন।
স্কুলটির সভাপতি রুস্তম আলী প্রামানিক বলেন, “কেশরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম তার দোকানের এক কর্মচারী দেবাশীষকে টাকা উত্তোলনের জন্য রোববার দুপুরে ব্যাংকে পাঠান। ছেলেটি ব্যাংকে যাওয়ার পর ব্যাংক থেকে আমাকে ফোন করে নিশ্চিত হওয়ার জন্য। ব্যাংক থেকে আমাকে জানানো হয়, প্রধান শিক্ষক ও আমার স্বাক্ষর করা একটি ৫ লাখ ৯৩ হাজার টাকার একটি চেক ব্যাংকে দেয়া হয়েছে। তখন আমি ‘শুধু ৯৩ হাজার টাকার চেকে সাক্ষর করেছি’ বলে তাদের জানাই। এর পরই ব্যাংক ওই চেক আটকে দেয়।
“ঘটনা শুনে দ্রুত আমি ব্যাংকে যাই। আমি তাৎক্ষণিক প্রধান শিক্ষকেও ব্যাংকে আসতে বলি।’
তিনি বলেন, ‘আমি জানতাম ব্যাংকে মোট ৯৪ হাজার টাকা আছে। তবে ছুটির মধ্যে ব্যাংকে অনুদান হিসেবে আরও ৫ লাখ টাকা জমা হয়েছে। এই টাকা সরাতেই প্রধান শিক্ষক এভাবে চেক জালিয়াতি করতে চেয়েছিলেন। এ বিষয়ে আমি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব। আপাতত চেকটি ব্যাংকেই ম্যানেজারের কাছে আছে।’
এই ঘটনায় প্রধান শিক্ষক ক্ষমা চেয়েছেন বলেও জানান রুস্তম আলী প্রামানিক।
তবে কেশরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘একটি অনুদান এসেছে। এক চেকেই উত্তলনের জন্য আমি পাঠিয়েছিলাম। সভাপতি সাহেব সব জায়গাতেই কাগজে-কলমে ৫ লাখ ৯৩ হাজার টাকা লিখেছেন এবং সাক্ষরও করেছেন। এখন তিনি অস্বীকার করছেন। এখানে আমার কোনো দোষ নেই। আমি কোনো চেক জালিয়াতি করিনি।’
এদিকে প্রধান শিক্ষক ব্যাংকে উপস্থিত হলে সভাপতির সঙ্গে তার বাগবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে প্রধান শিক্ষককে ঘুষিও মারেন সভাপতি। পরে উপস্থিত লোকজন তাদের শান্ত করেন।
অগ্রণী ব্যাংক কেশরহাট শাখার ব্যবস্থাপক মনিরুজ্জামান খান বলেন, ‘চেকটির মুড়িতে ৯৩ হাজার টাকা লেখা ছিল। তবে মেইন চেকে ৫ লাখ ৯৩ হাজার লেখা দেখে আমাদের সন্দেহ হয়। পরে আমরা স্কুলের সভাপতিকে ফোন দেই।
‘দুই পক্ষ আসার পর থেকেই আমরা এটি নিয়ে সমাধানের জন্য বলেছি। এ বিষয়ে আমরা একটি চিঠিও দিয়েছি। তবে সমাধান না হাওয়া পর্যন্ত সবাই চেকটি আমাদের হেফাজতেই রাখতে বলেছেন। এজন্য চেকটি আমাদের হেফাজতেই রাখা হয়েছে।’