বঙ্গবন্ধুর বায়োপিক ‘মুজিব- একটি জাতির রূপকার’ সিনেমাটি মুক্তি পাচ্ছে আগামী ১৩ অক্টোবর। এ উপলক্ষে চলচ্চিত্রটির মুক্তির তারিখ ঘোষণা এবং ট্রেলার ও পোস্টার উদ্বোধন করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
রোববার রাজধানীর মিন্টো রোডে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের বলরুমে এ উপলক্ষে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়নে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ উদ্বোধন ঘোষণা করেন তিনি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এত খুশি যে, ১৩ই অক্টোবর এই ছবি সমগ্র বাংলাদেশে মুক্তি পেতে যাচ্ছে। এই ছবি শুধুমাত্র একটি সিনেমা নয়, এটি বঙ্গবন্ধুর বায়োপিক। ‘মুজিব-দ্য মেকিং অব আ নেশন’, ‘মুজিব- একটি জাতির রূপকার’ ছবিতে বাংলাদেশের ইতিহাস, অভ্যুদয়ের ইতিহাস আছে। কারণ এই বাংলাদেশ জাতিরাষ্ট্র গঠিত হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে।’
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার, প্রধান তথ্য কমিশনার ড. আবদুল মালেক, চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুজহাত ইয়াসমিন, বায়োপিক লাইন ডিরেক্টর সতীশ শর্মা অনুষ্ঠানে তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন ও শিল্পীদের নিয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে পোস্টার উন্মোচনে অংশ নেন।
চলচ্চিত্র অঙ্গণের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। দেশের বাইরে থেকে এ উপলক্ষে পরিচালক শ্যাম বেনেগাল এবং বঙ্গবন্ধুর চরিত্রাভিনেতা আরিফিন শুভর পাঠানো ভিডিও বার্তা ও সিনেমাটির ট্রেলার দর্শকদের ছুঁয়ে যায়।
ড. হাছান বলেন, ‘মুজিব- একটি জাতির রূপকার’ চলচ্চিত্রটি জাতির জন্য একটি দলিল। এটি শুধু সিনেমা নয়, এই ছবিটি জাতির ইতিহাসের একটি দলিল। বঙ্গবন্ধু কীভাবে একটি জাতির রূপকার হলেন, সেটিই এই ছবিতে চিত্রায়িত হয়েছে।
মন্ত্রী হাছান এ সময় বায়োপিকের পরিচালক শ্যাম বেনেগাল এবং ছবির নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত সবাইকে অকুণ্ঠ ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘গওহর রিজভী সাহেব, আমাদের প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এই ছবির নির্মাণ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সাজ্জাদ জহিরসহ বাংলাদেশ থেকে আরও অনেকেই যুক্ত ছিলেন। সবাইকে আমি ধন্যবাদ জানাই। শিল্পীরা প্রত্যেকেই অসাধারণ অভিনয় করেছেন। যাকে যে চরিত্র দেয়া হয়েছে ভালো অভিনয় করেছে।’
তথ্যমন্ত্রী জানান, ‘বেশ আগেই আমরা বায়োপিকের সেন্সর সার্টিফিকেট দিয়েছিলাম। খুব সহসা এটি ভারতে সেন্সর সার্টিফিকেটও পেতে যাচ্ছে। সুতরাং আমরা প্রথমে বাংলাদেশে মুক্তি দিতে চাই, কারণ বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের রূপকার, এই জাতির রূপকার, সে জন্য বাংলাদেশে মুক্তি দিতে চাই। পরে এটি ভারতবর্ষসহ পুরো পৃথিবীতে মুক্তি দেয়া হবে। আমি সবাইকে এই ছবি হলে গিয়ে দেখার জন্য অনুরোধ জানাই।’
তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে জাপানের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাত
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি (Iwama Kiminori)।
রোববার সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রীর দপ্তরে তাদের বৈঠক শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, ‘গত ৫২ বছরে বাংলাদেশের পথচলায় জাপান অর্থনৈতিকভাবে, অবকাঠামোগতভাবে আমাদের যেভাবে সহায়তা করেছে, সে নিয়ে জাপানের রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানিয়েছি। দেশের উন্নয়নে ভবিষ্যতে যেন আমরা আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে পারি, সে ব্যাপারে তার সঙ্গে আলোচনা করেছি।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তিনি আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছিলেন। আমি তাকে জানিয়েছি- আগামী নির্বাচন ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ট্রান্সপারেন্ট হবে। নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। ক্রমাগতভাবে নির্বাচন বর্জন করা যে, কখনও কারও জন্য সমীচীন নয়, সেটি আমি তাকে বলেছি।
‘একইসঙ্গে দেশে যাতে কোনো রাজনৈতিক ভায়োলেন্স না হয়, যেটি ২০১৩-১৪-১৫ সালে হয়েছে এবং সময়ে সময়ে বিএনপি করে এবং এখনও করার চেষ্টা করছে, উস্কানি দিচ্ছে- এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি আগামী নির্বাচন জনগণ এবং অনেক রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু, অবাধ, সুন্দর ও সর্বমহলে কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে, সেটি আমি তার সঙ্গে আলোচনায় বলেছি।’
‘সহিংসতা বরদাশত নয়’
এ সময় সাংবাদিকরা বিএনপির আন্দোলন নিয়ে প্রশ্ন করলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, “দেশে কেউ সহিংসতা করুক সেটি কখনও বরদাশত করব না। যে কেউ রাজনৈতিকভাবে আন্দোলন করতে পারে, সরকারের পদত্যাগও চাইতে পারে। কিন্তু তাই বলে দিনক্ষণ ঠিক করে ‘সরকারকে টেনে নামিয়ে ফেলবে’ বলা সমীচীন নয়, সেটি রাজনীতির ভাষা নয়।”
তিনি বলেন, ‘যে ভাষায় বিএনপি কথা বলছে, সেই ভাষা ইঙ্গিত দেয় যে, তারা দেশে সহিংসতা, নাশকতা করতে চায়। সেটি করতে কাউকে দেয়া হবে না। আমি আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবে বলছি- আওয়ামী লীগ রাজপথের দল। রাজপথে কীভাবে, কাকে মোকাবিলা করতে হয়, সেটি আমরা জানি।’