পাবনা সদর উপজেলার চরাঞ্চলে নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারী জালে ধরা পড়েছে দেশের বিলুপ্তপ্রায় সবচেয়ে বিষধর সাপ রাসেল ভাইপার। খবর পেয়ে স্নেক রেসকিউ টিম বাংলাদেশের সদস্যরা সাপটিকে উদ্ধার করে।
শনিবার দুপুরে উপজেলার হেমায়েতপুরের চর ভবানীপুর গ্রামের এক জেলের চায়না দুয়ারী জালে আটকা পড়ে এটি। সাপটিকে উদ্ধার করে বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগে হস্তান্তর করা হয়।
টিমের জ্যেষ্ঠ রেস্কিউয়ার এবং সভাপতি রাজু আহমেদ বলেন, ‘আজ সকালে আমাদের হটলাইনে ফোন আসে। ফোন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে টিমের সাধারণ সম্পাদক প্রীতম সুর রায়কে সঙ্গে নিয়ে আমরা ঘটনাস্থল যাই এবং সাপটিকে উদ্ধার করি।
‘উদ্ধারের পর সাধারণ জনগণের মধ্যে সচেতনতা তৈরি এবং সাপে কামড়ালে করণীয় সম্পর্কে সকলকে দিকনির্দেশনা দিই।’
প্রীতম সুর রায় জানান, রাসেল ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া হচ্ছে একটি মারাত্মক বিষধর সাপ। যে চারটি সাপের কামড়ে ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষেরা বেশি আক্রান্ত হন, সেগুলোর মধ্যে রাসেল ভাইপার অন্যতম। এদের বিষ মূলত হেমোটক্সিক। তবে এলাকাভেদে এদের বিষের মাত্রা এবং বিষের উপাদানের পরিমাণে কম-বেশি পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়।
রাসেল ভাইপার আমাদের দেশি সাপ নয়। নদীপথে ভারত থেকে এগুলো আমাদের দেশে আসে। ছবি: নিউজবাংলা
স্নেক রেসকিউ টিমের সদস্যরা বলেন, ‘মানুষ এবং বন্যপ্রাণীর মধ্যে একটি সহাবস্থান তৈরি এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে মূলত সাপ নিয়ে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ২০২০ সালে সিদ্দিকুর রহমান রাব্বি টিমটি প্রতিষ্ঠা করেন এবং অনেক কম সময়ের মধ্যে সদস্যদের প্রশিক্ষণ প্রদান ও উদ্ধার কাজ শুরু করেন তিনি।’
বর্তমানে টিমটিতে ২৫ জন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত রেস্কিউয়ার আছেন বলে জানান তারা।
যারা বিপদগ্রস্ত অথবা মানুষের বাসস্থানে ঢুকে পড়া কোন সাপ এবং অন্য বন্যপ্রাণীদের উদ্ধার করে আবার সেগুলোকে প্রকৃতিতে তাদের অবস্থানে ফিরিয়ে দেয় রেসকিউয়ার টিম। এছাড়া অসুস্থ সাপ এবং অন্যান্য বণ্যপ্রাণীর চিকিৎসার মাধ্যম্যে সেগুলো সুস্থ করে বনে অবমুক্ত করা হয়। এখন পর্যন্ত প্রায় ৩ হাজার সাপ উদ্ধার করেছে স্নেক রেস্কিউ টিম বাংলাদেশ।
এ বিষয়ে পাবনা অঞ্চলের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাশ্যপী বিকাশ চন্দ্র বলেন, ‘এ ব্যাপারে এখনও কোনো তথ্য আমাদের কাছে আসেনি। রাসেল ভাইপার আমাদের দেশীয় সাপ নয়। এগুলো ভারত থেকে আসে। ভারত থেকে পদ্মা নদী দিয়ে রাজশাহী, কুষ্টিয়া ও পাবনার কিছু অঞ্চলে এগুলো পাওয়া যায়।’