বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি ১১ গণমাধ্যম ও অধিকার কর্মীর

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১৫:২৮

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নাগরিকদের সঙ্গে প্রয়োজনীয় এবং পর্যাপ্ত আলোচনা ব্যতীত, তাড়াহুড়ো করে এবং গণদাবি উপেক্ষা করে, বাতিলকৃত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রায় একই আদলে সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩ নামে নতুন আরেকটি গণবিরোধী আইন প্রণয়ন করেছে। সেই প্রেক্ষাপটে মুক্ত প্রকাশ সংগঠনের আমরা ১১ জন মুক্ত গণমাধ্যম ও ডিজিটাল অধিকার কর্মী নতুন আইন প্রণয়নে উদ্বেগ এবং আইনটি বাতিল করবার জন্য দাবি জানাচ্ছি।

বাতিল করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আদলে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩’ প্রণয়ন করা হয়েছে মন্তব্য করে এ আইন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন মুক্ত গণমাধ্যম ও ডিজিটাল অধিকার কর্মীরা।

গণমাধ্যমে ‘মুক্ত প্রকাশ’ পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়। এতে স্বাক্ষর করেছেন ১১ জন মুক্ত গণমাধ্যম ও ডিজিটাল অধিকার কর্মী।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘নাগরিকদের সঙ্গে প্রয়োজনীয় এবং পর্যাপ্ত আলোচনা ব্যতীত, তাড়াহুড়ো করে এবং গণদাবি উপেক্ষা করে, বাতিলকৃত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রায় একই আদলে সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩ নামে নতুন আরেকটি গণবিরোধী আইন প্রণয়ন করেছে। সেই প্রেক্ষাপটে মুক্ত প্রকাশ সংগঠনের আমরা ১১ জন মুক্ত গণমাধ্যম ও ডিজিটাল অধিকার কর্মী নতুন আইন প্রণয়নে উদ্বেগ এবং আইনটি বাতিল করবার জন্য দাবি জানাচ্ছি।

‘আমরা মনে করি নতুন আইনটিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রায় সকল নিবর্তনমূলক ধারাসমূহ প্রায় অক্ষুণ্ন রাখা হয়েছে যার ব্যবহারই অপব্যবহারে রূপ নিতে পারে এবং অযাযিতভাবে নাগরিকদের মৌলিক অধিকারসমূহকে ক্ষুণ্ন করতে পারে।’

এতে বলা হয়, আমরা বলিষ্ঠভাবে মনে করি, পুরাতন চারটি প্রশাসনিক সংগঠনগুলোর নতুন আইনে গঠন (জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা কাউন্সিল, জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি; জাতীয় কম্পিউটার ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম কিংবা ক্ষেত্রবিশেষে কম্পিউটার ইন্সিডেন্ট রেসপন্স টিম এবং ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাব) প্রক্রিয়ায় স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচারবিভাগীয় বা সংস্থা কর্তৃক তত্ত্বাবধানের সম্পূর্ণভাবে অনুপস্থিতি; অপরাধগুলোর সংজ্ঞায়নের ক্ষেত্রে অস্পষ্টতা ও অপ্রতুলতা; অপরাধের অভিপ্রায় সম্পর্কে পর্যাপ্ত তত্ত্বগত জ্ঞানের অনুপস্থিতি; আন্তর্জাতিক সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত চুক্তির বিকশিত মানগুলোর সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণতা; জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ড এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের মধ্যে পার্থক্য করতে পারবার ব্যর্থতা; আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক আইনের অপব্যবহার হলে বিচারিক জবাবদিহিতার অনুপস্থিতি; এবং শিশু আদালতের সংশ্লিষ্টতা ছাড়াই আগামীতে সাইবার পরিসরে অভিযুক্ত শিশুদের ‘বিচার’ এবং ‘শাস্তি’প্রদান করবার আইনগত ভিত্তি তৈরি করবে, যা নাগরিকদের চিন্তা, বিবেক ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা, ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকার, আইনে সমান আশ্রয় লাভের অধিকার, এবং শিশুদের জন্য অধিকতর সুরক্ষাপ্রদান এর মত মৌলিক মানবাধিকারগুলোকে ক্ষুণ্ন করবে।

বিবৃতিতে বলা হয়, নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের পূর্ব এবং পরবর্তী বাস্তবতায় আমরা মনে করি, জনগণের সাথে পর্যাপ্ত আলাপ আলোচনা এবং গণদাবীগুলোকে যথাযথভাবে আমলে নিয়ে আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়াকে মান্য না করে সরকার নিজেদের খেয়াল-খুশি মত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি সামান্য সংস্কার করে সাইবার নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করেছে। প্রায় সবগুলো অপরাধের শাস্তি কমানো এবং কিছু ধারার সংস্কার করা হয়েছে, কিন্তু এর পরেও আইনে শাস্তির পরিমাণ অধিকাংশ ক্ষেত্রে মাত্রাতিরিক্ত, অসম, অনুপাতহীন এবং অসামঞ্জস্যপূর্ণ রয়ে গেছে।

এতে বলা হয়, তবে নতুন এই সাইবার নিরাপত্তা আইনে মিথ্যা, প্রতারণা ও হয়রানিমূলক কোন মামলা করা হলে প্রতিকারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে এবং বিগত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সরল বিশ্বাসে সরকারি কর্মকর্তাদের কর্মকাণ্ডকে দায়মুক্তির বিধানকে বাতিল করা হয়েছে যা হয়তো সাধুবাদ যোগ্য। কিন্তু যারা এখন পর্যন্ত মিথ্যা, প্রতারণা ও হয়রানিমূলক মামলার বা সরকারি কর্মকর্তাদের কর্মকাণ্ডে ক্ষতির শিকার হয়েছিলেন এবং হচ্ছেন, তাদের সামাজিক, রাজনৈতিক ও আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদানের আইনি ব্যবস্থা না করা এবং নৈতিক হ্যাকিংকে অপরাধীকিকরণ করা নিন্দনীয় এবং গর্হিত। অন্যদিকে, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়া আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে ক্ষমতা অর্পণ বা কোনো আদালতের আদেশ ব্যতীত সন্দেহবশে গ্রেপ্তার, মালামাল জব্দ এবং অপরাধ হবার সম্ভবতায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে এক প্রকার অবাধ বিচারিক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, একই সঙ্গে, জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা কাউন্সিলে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, আমলা, বিভিন্ন বাহিনী প্রধান, বিভিন্ন সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার মহাপরিচালদের কথা পরিষ্কারভাবে উল্লেখ থাকলেও, নাগরিকদের অংশগ্রহণের ব্যবস্থা পরিস্কারভাবে উল্লেখ করা হয়নি এবং নাগরিক সমাজের সদস্যদের প্রয়োজনীয় এবং সমানুপাতিক অংশগ্রহনও নিশ্চিত করা হয়নি। এর ফলে সাইবার পরিসরে ব্যক্তি এবং সামষ্টিক সুরক্ষার ধারণা আরও সংকুচিত হবে এবং সাইবার পরিসরকে করে তুলবে গোয়েন্দাময়।

বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীরা হলেন আহম্মদ উল্লাহ, বাংলাদেশ মানবাধিকার সাংবাদিক ফোরাম; আহমেদ স্বপন মাহমুদ, ভয়েস; সাউথ এশিয়ান মিডিয়া সলিডারিটি নেটওয়ার্ক; মাইনুল ইসলাম খান, গণমাধ্যম অধিকারকর্মী; রেজাউর রহমান লেনিন, মানবাধিকার কর্মী ও গবেষক; রেজওয়ান ইসলাম, গ্লোবাল ভয়েসেস; মো. সাইমুম রেজা তালুকদার, আইনজীবী; সালিম সামাদ, এফইএক্সবি; সাঈদ আহমেদ, মানবাধিকার কর্মী; শারমিন খান, মানবাধিকারকর্মী ও আইনজীবী; শামীম আরা শিউলী, উন্নয়ন কর্মী ও ড. সৈয়দা আইরিন জামান, পেন ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ।

এ বিভাগের আরো খবর