সরকার পরিকল্পিতভাবে দেশের রাজনীতি নষ্ট করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘গত তিনটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ কারচুপি করেছে। আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক, অবাধ, সুষ্ঠু না হলে দেশের জনগণ এবং আন্তর্জাতিক মহল মেনে নেবে না।’
রাজধানীর ধোলাইখালে সোমবার বিকেলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে এমন মন্তব্য করেন তিনি। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশে সুচিকিৎসা ও মুক্তির দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
আমেরিকার ভিসা নীতিতে সরকারের মাথা নষ্ট হয়ে গেছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বিভিন্ন গণমাধ্যমে তাদের উৎকণ্ঠার কথা প্রকাশ পেয়েছে। সচিবালয়সহ সর্বত্র একই আলোচনা।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি বিএনপি একা করেনি। এটা এক সময় আওয়ামী লীগেরও দাবি ছিল। এই দাবিতে তারা ২২ জনকে পুড়িয়ে মেরেছে। আজ তারা ক্ষমতায় থাকার জন্য জোর করে সেই আইন বাতিল করেছে।
‘আওয়ামী লীগ আগেও গণতন্ত্র হত্যা করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছিল। এবার তারা কৌশল বদলেছে। আদালতকে ব্যবহার করে তারা তত্ত্বাবধায়ক প্রথা বাতিল করে অবৈধ ক্ষমতাকে জায়েজ করে নিয়েছে। দশজন বিচারকের মধ্যে আটজনই এই প্রথা বাতিলের বিপক্ষে বলেছিলেন। তারপরও তারা গায়ের জোরে এটা করেছে।’
ফখরুল বলেন, ‘এক বছর ধরে সারাদেশে সভা-সমাবেশ করে আসছি। আমাদের ২২ নেতাকর্মী তাদের বুকের রক্ত বিলিয়ে দিয়েছেন। এই ফ্যাসিস্ট সরকার ১৬ বছরে আমাদের অসংখ্যা নেতাকর্মীকে গুম করেছে।
‘উদ্দেশ্য একটাই, গণতন্ত্রকামী মানুষকে আন্দোলন থেকে দূরে রাখা এবং একদলীয় নির্বাচন করা। তবে গ্রেপ্তার, গুম, খুন করে আন্দোলন দমিয়ে রাখা যাবে না।’
সমাবেশে প্রয়াত মেয়র সাদেক হোসেন খোকার স্মৃতিচারণ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বিএনপির এই নেতা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কারও সঙ্গে আপস করেননি। আরেক নেতা পিন্টুকে জেলের ভেতর হত্যা করা হয়েছে। আজ যারা বন্দি আছেন, তাদের মুক্ত করেই গণতন্ত্রকে মুক্ত করব।’
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘৩০ বছর আগের মামলায় বিএনপির নয়জনকে ফাঁসির আদেশ দেয়া হয়েছে। এক নেতাকে ৭০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এগুলো করে ২০১৪ ও ১৮ সালের মতো আবারও তারা ভোটবিহীন নির্বাচন করার পাঁয়তারা করছে।
‘সারা পৃথিবী বলছে- গত দুটি নির্বাচন চুরি করেছো; এবার নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে হবে। সরকার বলছে যে, নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। অবশ্য তা দেশের মানুষ তো দূরের কথা, পাগলও বিশ্বাস করে না।’
সরকারকে ইঙ্গিত করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘চাঁদপুরে ৬ হাজার কোটি টাকার বালু খেয়ে ফেলেছে। আর কিছুদিন ক্ষমতায় থাকলে দেশের অবশিষ্টগুলোও খেয়ে ফেলবে।’
সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব লিটন মাহমুদ।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সহ-স্বেচ্ছাসেবক সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েল, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ প্রমুখ।