চট্টগ্রাম যেতে মহিপালে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন এক পুলিশ সদস্য ও তার স্ত্রী। পথে একটি মাইক্রোবাস তাদের সামনে এসে দাঁড়ায় এবং সহযোগিতা করার প্রস্তাব দেয়। অপরিচিত মানুষের এমন আন্তরিকতায় মুগ্ধ হয়ে মাইক্রোবাসে উঠে পড়েন ওই দম্পতি। তবে ওঠার পর তারা বুঝতে পারেন যে, অপহরণকারীদের খপ্পরে পড়েছেন তারা।
গাড়িটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের লালপোল এলাকায় পৌঁছালে তাদের দুজনের হাত-চোখ বেঁধে জিম্মি করে ফেলে। ওইসময় পুলিশ পরিচয় দিয়েও পাননি রেহাই। তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। পকেটে থাকা ২০ হাজার টাকা ও তিনটি মোবাইল ফোন ও ওই পুলিশ সদস্যের স্ত্রীর কানে থাকা দুল দিলেও তাদের মুক্তি মেলেনি।
লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে জখম করে তাদের কাছ থেকে আরও ১ লাখ টাকা দাবি করা হয়। উপায়ান্তর না পেয়ে পরে বিকাশের মাধ্যমে আরও ৮০ হাজার টাকা এনে দিলে রাত দশটার দিকে ফের লালপোল এলাকায় নিয়ে এসে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।
তবে এ ঘটনার পর ছাড়া পাননি ওই অপহরণকারীরা। প্রায় এক মাস পর ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার হয়েছে অপহরণকারী চক্রের তিন সদস্য।
গত মাসের ২৮ তারিখে ওই ঘটনা ঘটার পর পথচারীদের সহায়তায় তারা ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে পুলিশ সদস্যের স্ত্রী বাদী হয়ে অজ্ঞাত ৬ জনকে আসামি করে ফেনী মডেল থানায় মামলা করেন।
মামলা পেয়ে ঘটনার রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে পুলিশ। তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতায় ঘটনার ২৭ দিন পর রোববার তিনজনকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন।
সোমবার নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ফেনীর পুলিশ সুপার জাকির হাসান।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- বরগুনা জেলার বালিয়াতলী ইউনিয়নের ছোট তালতলী এলাকার লতিফ মিয়ার ছেলে ৫০ বছর বয়সী চাঁন মিয়া, বড়বগি ইউনিয়নের রিতুল বাড়িয়া এলাকার জব্বার হাওলাদারের ছেলে ৪০ বছর বয়সী হেকিম হাওলাদার এবং বরিশালের বাবুগঞ্জ থানার বোদারপুর ইউনিয়নের জামাল হোসেন খাঁনের ছেলে ৩০ বছর বয়সী মকিবুল হাসান।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) থোয়াই অং প্রু মারমা, ফেনী মডেল থানার ওসি শহিদুল ইসলাম চৌধুরীসহ পুলিশের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।