বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অক্টোবরেই কক্সবাজারে চলবে ট্রেন

  • প্রতিনিধি, কক্সবাজার   
  • ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১৮:০১

কক্সবাজার রেল প্রকল্পের পরিচালক মফিজুর রহমান বলেন, ‘অক্টোবরের মাঝামাঝিতে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলবে। তবে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ট্রেন চালাতে আরও কয়েক মাস সময় লাগবে।‘

শতভাগ কাজ শেষ না হলেও আগামী মাস থেকেই কক্সবাজার-চট্টগ্রাম রেলপথ চালু হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। তারা জানিয়েছেন, ঝিনুকের আদলে তৈরি পর্যটন নগরী কক্সবাজারের দৃষ্টিনন্দন স্টেশনটি কাজ প্রায় আটাশি শতাংশ শেষ হয়েছে। তাই অক্টোবরের মাঝামাঝিই পরীক্ষামূলকভাবে এ রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হবে।

এ বিষয়ে কক্সবাজার রেল প্রকল্পের পরিচালক মফিজুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অক্টোবরের মাঝামাঝি পরীক্ষামূলক ট্রেন চলবে। তবে বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চালাতে আরও কয়েক মাস সময় লাগবে।’

২০১১ সালের ৩ এপ্রিল দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার ও রামু-ঘুমধুম পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সঙ্গে সারা দেশের যোগাযোগ সহজ করতে দোহাজারী-কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ প্রকল্প ২০১৬ সালে ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্প হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে সরকার। এ প্রকল্পের আওতায় মোট ১৩০ কিলোমিটার রেলপথ রয়েছে; যার মধ্যে দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০২ কিলোমিটার, আবার রামু থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার। তবে চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারী পর্যন্ত রেললাইন আগে থেকেই রয়েছে।

প্রকল্প সূত্র জানায়, ঝিনুকের আদলে তৈরি ছয়তলা-বিশিষ্ট স্টেশন ভবনটির আয়তন ১ লাখ ৮২ হাজার বর্গফুট। প্রতিটি ৬৫০ মিটার দীর্ঘ এবং ১২ মিটার প্রশস্ত মোট তিনটি প্ল্যাটফর্মও থাকছে স্টেশনটিতে। প্রকল্পটিতে মোট ব্যয় ধরা হয় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা।

২০১৮ সালের মার্চে শুরু হওয়া দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পটি ২০২৪ সালের জুন মাসে শেষ হওয়ার কথা। কক্সবাজার প্রধান রেল স্টেশনের পাশেই রেলওয়ের আবাসিক এলাকা গড়ে তোলা হয়েছে। সেখানে আটটি ভবনের নির্মাণকাজ প্রায় সমাপ্ত। স্টেশনটিতে আবাসিক হোটেল, ক্যান্টিন, লকার, গাড়ি পার্কিংসহ অন্যান্য ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। রয়েছে আধুনিক ট্রাফিক সুবিধা। স্টেশনের নিচতলায় থাকছে টিকেট কাউন্টার, অভ্যর্থনা কেন্দ্র, শপিংমল ও রেস্তোরাঁ ও থাকার হোটেল। পাশাপাশি থাকছে মসজিদ, শিশু যত্ন কেন্দ্র ও চলন্ত সিঁড়ি।

এটিএম বুথ, পোস্ট অফিস, ট্যুরিস্ট ইনফরমেশন বুথসহ নানা সুবিধা রেখে তৈরি হচ্ছে ঝিনুক আকৃতির রেল স্টেশনটি। ৪৬ হাজার যাত্রী শীততাপ নিয়ন্ত্রিত দেশের একমাত্র অত্যাধুনিক রেল স্টেশনে সময় কাটাতে পারবেন এবং পর্যটকরা স্টেশনের লকারে লাগেজ রেখে সারা দিন সমুদ্রসৈকতে এবং অন্যান্য দর্শনীয় স্থানে ঘুরতে পারবেন বলে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা ।

এ প্রকল্পের রেললাইন নির্মাণের জন্য সাঙ্গু, মাতামুহুরী ও বাঁকখালী নদীর ওপর নির্মাণ করা হয়েছে তিনটি বড় রেল সেতু। এছাড়াও এ রেলপথ নির্মাণ করার সঙ্গে আরও নির্মাণ হচ্ছে ৪৩টি ছোট সেতু, ২০১টি কালভার্ট এবং ১৪৪টি লেভেল ক্রসিং।

সাতকানিয়ার কেঁওচিয়া এলাকায় তৈরি হচ্ছে একটি ফ্লাইওভার। রামু ও কক্সবাজার এলাকায় দুটি হাইওয়ে ক্রসিং। হাতি ও অন্যান্য বন্যপ্রাণীর চলাচলে ৫০ মিটারের একটি ওভারপাস ও তিনটি আন্ডারপাস নির্মাণ করা হচ্ছে এ প্রকল্পের আওতায়।

রেল চালু হলে কক্সবাজারের পর্যটনসহ সামগ্রিক অর্থনীতিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে বলে আশা করছেন স্থানীয়রা। কম সময় ও খরচে কৃষিপণ্য, মাছ, লবণসহ স্থানীয় পণ্য পরিবহন করা যাবে এ রেলের মাধ্যমে।

রেল স্টেশনের পাশেই বসবাস অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমানের। তিনি বলেন, ‘রেল প্রকল্পটি চালু হলেই রাজধানী ঢাকার সাথে দক্ষিণ চট্রগ্রাম তথা সীমান্ত জেলা কক্সবাজারের মানুষের যোগাযোগ খাতে উন্নয়ন হবে।’

কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সরওয়ার কাবেরী বলেন, ‘রেল আসলে সীমান্ত জনপদের আমুল পরিবর্তন আসবে, পাশাপাশি পর্যটন শিল্প ও বাণিজ্যিক খাতে বড় ভূমিকা রাখবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই প্রকল্পটি।’

জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এস এম সাদ্দাম হোসাইন বলেন, ‘দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের অন্তত আটটি উপজেলার যাতায়াত ব্যবস্থা সহজ হওয়ার পাশাপাশি এই রেলপথ এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত করবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মাছ, লবণ, শুটকি, সবজিসহ অন্যান্য শিল্পের জন্য সহায়ক হবে এ রেল যোগাযোগ। যে নয়টি স্টেশন রয়েছে সেসব উপজেলাতেও কর্মচঞ্চলতা ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়বে।’

এ বিভাগের আরো খবর