জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের বলেছেন, সাইবার সিকিউরিটি আইন করা হয়েছে গণমাধ্যমের কন্ঠরোধ করতে। এ আইনের মাধ্যমে মানুষের বাক স্বাধীনতা, ভাব প্রকাশের স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানীস্থ কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় পেশাজীবী সমাজের সভায় রাখা বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
জি এম কাদের বলেন, ‘বাক স্বাধীনতাকে বাধা দেয়া হলে গণতন্ত্র থাকতে পারে না। সাইবার সিকিউরিটি আইনে যে কোনো সংবাদকেই সরকার রাষ্ট্রদ্রোহিতা হিসেবে গণ্য করতে পারবে। গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা করতে পারবে সাইবার সিকিউরিটি আইনে।
‘গণমাধ্যম কোনো সংবাদই করতে পারবে না। এতে সব নিউজ চ্যানেল বন্ধ হবার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। দেশে এখন গণতন্ত্র নেই, গণতন্ত্র চর্চা করার পরিবেশ নেই। দেশ এখন একদলীয় শাসন ব্যবস্থার দিকে চলে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, জনগণ রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য সরকার গঠন করে। মালিক হিসেবেই জনগণ যদি সরকারের সমালোচনা করতে না পারে, তাহলে সরকার রাষ্ট্রবিরোধী কোনো কাজ করলে তা ঠেকানোর উপায় কী? জনগণ যদি সরকারের সামলোচনা না করতে পারে সেখানে আর গণতন্ত্র থাকতে পারে না।
তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের সামলোচনাকে এখন রাষ্ট্রবিরোধী হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। রাষ্ট্র ও সরকার ব্যবস্থা কখনোই এক নয়। আইন করে যদি কথা বলার অধিকার বন্ধ করে দেয়া হয়, সরকার বিরোধী আন্দোলনে বাধা দেয়া হয় তখন আর গণতন্ত্র থাকে না।’
জাতীয় পেশাজীবী সমাজের সভাপতি ও জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর উপদেষ্টা ডা. মোস্তাফিকুর রহমান আকাশের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে জি এম কাদের আরও বলেন, নির্বাচন নিয়ে আমরাও শঙ্কিত। দুটি পক্ষ যেভাবে শক্ত অবস্থান নিয়ে দাঁড়িয়েছে তাতে সাধারণ মানুষের মাঝে সহিংসতার আশংকা সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি বলেন, সরকারি দল ক্ষমতায় থাকতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। দুটি দল মুখোমুখী হলেই বড় ধরনের সহিংসতা হতে পারে। দেশ ও জাতি ধংসের পথে চলে যেতে পারে। দেশ ও জাতিকে বাঁচাতে দায়িত্বশীল রাজনীতিবিদদের এগিয়ে আসতে হবে।
পেশাজীবীদের উদ্দেশে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, পেশাজীবীরা দেশ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন। রাজনীতিতে এলে দক্ষ কারিগর হিসেবে দেশের কল্যাণে ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারবেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দলীয়করণের মাধ্যমে পেশাজীবীদের রাজনীতিতে এনে লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে ব্যবহার করছে। জাতীয় পেশাজীবী সমাজ দলীয়করণের বিরুদ্ধে কাজ করবে।
পদ নেই তারপরও সরকার সরকাররি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঢালাওভাবে পদোন্নতি দেয়া মানে দেশকে ধংসের দিকে নিয়ে যাওয়া বলে মন্তব্য করেন তিনি ।
এ সময় জাতীয় পার্টি মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, প্রেসিডিয়াম সদস্য মোস্তফা আল মাহমুদ, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা শেরীফা কাদের অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।