খুলনায় বন বিভাগের কর্মীদের বিরুদ্ধে উদ্ধারকৃত ১২৫ কেজি হরিণের মাংস গায়েবের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জেলার কয়রা উপজেলা সংলগ্ন সুন্দরবনের কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশনের আওতাধীন বজবজা টহল ফাঁড়ির বনরক্ষীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
হরিণের মাংস আত্মসাতের বিষয়টি বৃহস্পতিবার সকালে ব্যাপকভাবে জানাজানি হয়।
স্থানীয়রা জানান, সোমবার রাতে কয়রা উপজেলার জোড়শিং লঞ্চঘাট থেকে ছেড়ে আসা খুলনা শহরগামী লঞ্চ থেকে একটি ড্রাম ও একটি ঝুড়িবোঝাই হরিণের মাংস উদ্ধার করে বন বিভাগ।
ওই লঞ্চে থাকা জোড়শিং গ্রামের ওমর ফারুক বলেন, “আমরা সাতজন একসঙ্গে জোড়শিং লঞ্চঘাট থেকে সোমবার রাতে খুলনা শহরে যেতে ‘মেসার্স ফারিহা-সাদিয়া’ নামের একটি লঞ্চে উঠি। লঞ্চটি যাত্রী তুলে ঘাট ছেড়ে কয়রার উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের হরিহরপুর লঞ্চঘাটের কাছাকাছি পৌঁছাতেই লঞ্চের দিকে টর্চের আলো ফেলে থামানোর ইঙ্গিত করে বন বিভাগের লোকজন।
“তখন লঞ্চটি হরিহরপুর পন্টুনে ভিড়লে বনরক্ষীরা লঞ্চের ভেতরে থাকা একটি বড় ড্রাম ও একটি মাছ পরিবহনের প্লাস্টিকের ক্যারেট (ঝুড়ি) বোঝাই হরিণের মাংস পন্টুনে নামিয়ে নেন। দুটি পাত্রবোঝাই হরিণের মাংস কোনো অবস্থাতেই ১৫০ কেজির কম হবে না।”
এ বিষয়ে কয়রা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত জানায়, বন বিভাগ ২৫ কেজি হরিণের মাংস জব্দের তথ্য দিয়েছে।
আদালতের স্টেনোগ্রাফার দেলোয়ার হোসেন বলেন, মঙ্গলবার একটি নীল রঙের ড্রামে ২৫ কেজি হরিণের জব্দ করা মাংস নিয়ে কয়রার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জমা দিয়েছিলেন সুন্দরবনের বজবজা বন টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুরেশ চন্দ্র মিস্ত্রি। ওই দিন বিকেল পাঁচটার দিকে আদালতের নির্দেশে হরিণের মাংস মাটিতে পুঁতে বিনষ্ট করা হয়।
সুরেশ চন্দ্র মিস্ত্রি হরিণের মাংসের পরিমাণ ও উদ্ধারের প্রকৃত তথ্য আড়াল করার বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। বিগত সময় হরিণের মাংস উদ্ধারের ছবি তোলা হলেও এ ঘটনার কোনো ছবিও তুলতে পারেননি বলে জানান তিনি।
সুন্দরবনের কাশিয়াবাদ স্টেশনের আওতাধীন এলাকায় সম্প্রতি বন অপরাধের মাত্রা বেড়ে গেছে। ওই অপরাধের সঙ্গে বন বিভাগের কর্মকর্তাদের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে গত বুধবার দৈনিক বাংলায় ‘রক্ষকই ভক্ষণ করছেন সুন্দরবন’ শিরোনামে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।