বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

প্রধানমন্ত্রীরও অধিকার নেই আমাকে অপমান করার: ভাণ্ডারী

  • প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম   
  • ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ২৩:৩৮

নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী বলেন, ‘গত ১৯ ‍জুলাই রাত্র পৌনে ১২টায় যখন আমি বেরিয়ে আসি গণভবন থেকে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সামনে দাঁড়িয়ে বলেছি- আপা, আগে অনেক সহ্য করেছি। কোনো ধরনের অপমান সহ্য করব না। ভালো না লাগলে বলবেন, এই মুহূর্তে রিজাইন করে চলে যাব। তবে রিজাইন করলে ঠিক থাকবেন কিনা সেটা চিন্তা করে দেখেন।’

মহাজোটের শরিক তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী আবারও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন।

একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য করে আলোচনায় আসা চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনের এই সাংসদ এবার বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীরও অধিকার নেই আমাকে অপমান করার।’

দেশের প্রাচীনতম রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের মধ্যে এক একটা হায়েনা ও শকুনের দল রয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

রোববার ফটিকছড়িতে উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত তিন দিনব্যাপী উন্নয়ন মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব মন্তব্য করেন তিনি।

নজিবুল বশর বলেন, ‘গত ১৯ ‍জুলাই রাত্র পৌনে ১২টায় যখন আমি বেরিয়ে আসি গণভবন থেকে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সামনে দাঁড়িয়ে বলেছি- আপা, আগে অনেক সহ্য করেছি। এবার কিন্তু সবাই সবকিছু চাইবে, আপত্তি নেই; কিন্তু কোনো ধরনের অপমান সহ্য করব না।

‘আপনি প্রধানমন্ত্রী, আপনাকে আমি সম্মান করি। আপনারও অধিকার নাই আমি নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারীকে অপমান করার। ভালো না লাগলে বলবেন, এই মুহূর্তে রিজাইন করে চলে যাব। তবে রিজাইন করলে ঠিক থাকবেন কিনা সেটা চিন্তা করে দেখেন। এতো সস্তা না দুনিয়াদারী। এতো সস্তা হলে তো বহুত কিছু হইতো।

‘নজিবুল বশর তারা বাইয়েরে ন আইয়্যিত কনোমিক্কাত্তুন (নজিবুল বশররা কোথাও থেকে ভেসে আসেনি)। সাগরত বাইয়িরে আইস্সে যে না কচুরিপনা? এত হস্তা নয়ত।’

নজিবুল বশর বলেন, ‘আওয়ামী লীগে একটা শকুনের দল আছে। তারাও জামায়াতের সঙ্গে আঁতাতের চেষ্টা করেছিল। দেশ একটা ক্রান্তিলগ্নে অবস্থান করছে। শকুনের দল একদিকে তাকিয়ে আছে। জামায়াত-শিবির ও বিএনপিসহ আরেক শকুনের দল, হায়েনার দল আওয়ামী লীগের মধ্যেই আছে।

‘এই ... বাচ্চারা জামায়াতের সাথে হাত মিলাতে চেয়েছিল। নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী দেয় নাই। গালি দিয়ে বললাম, নামও বলতে পারি, নাম বলব না। কোনো উপায় না দেখে ভারতের সহযোগিতা আমি নিয়েছি। এবং ইন্ডিয়ার সরকার স্পষ্ট বাংলাদেশ সরকারকে জানিয়ে দিয়েছে- নো জামায়াত। জামায়াতকে নিয়ে কোনো খেলা সরকার খেলতে পারবে না।’

তিনি বলেন, ‘কোনো জঙ্গিকে প্রশ্রয় দেয়া জামায়াতকে নিয়ে কোনো খেলা হবে না। আমি দায়-দায়িত্ব নিয়ে বলতেছি, আমি করেছি। সেই ক্ষমতা এবং হেডাম আছে বলেই করেছি। কেইসও করেছি ওদের বিরুদ্ধে।

‘আজকে আওয়ামী লীগ অনেক সুফল পাচ্ছে। একটা সুফল- জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে। নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারীই করেছে। দাবি কার? এটার সুফল কে ভোগ করতেছে? আওয়ামী লীগ।’

মাইজভাণ্ডারী বলেন, ‘আমরা নির্বাচন করব এবং ১৪ দলের জোটের ব্যানারেই নির্বাচন হবে। আর যদি তাদের কিছু লোক বাড়াতে হয়, অর্থাৎ কিছু সিট যদি বাড়াতে হয়, আমরাও চাই নিবন্ধিত দল যারা আছে তারা আসুক।

‘যেমন কালকে দেখেছি, আমার এখানে সুপ্রীম পার্টি- আমার ভাইপুত। সাইফুদ্দিন ইতে আঁর পোয়া। ও এখানে প্রোগ্রাম করেছে। আমি খুশি মনে স্বাগত জানাই তাকে। কারণ যত বেশি ইলেকশনে আসবে তত সরকারের জন্য লাভ। আর আঁল্‌লাই (আমার জন্য) তো বেশি লাভ, ফটিকছড়ি থেকে দাঁড়ালে। আমি নৌকা নিয়ে দাঁড়াব।’

আমলাদের সমালোচনা করে তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমলাতান্ত্রিক জটিলতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে, পাশ কাটিয়ে কিছু করা সম্ভব না। এরা অনেক বেশি শক্তিশালী।

‘আমি কথা বলতেছি তো? এখান থেকে গিয়ে সবার আগে মুখ্য সচিবের সাথে আমিই দেখা করব। কেন? আমার লাইন ঠিক রাখতে হবে তো! আমার কাজ-কর্ম করতে হবে। মন্ত্রী সাইন করলেও কাজ হয় না আজকাল। আমার যেতে হয় প্রশাসনের ওই স্তরের মধ্যে। এটা বাস্তব সত্য।

‘এই জিনিসগুলোর জন্য ঐকমত্যের দরকার। আমরা যারা জাতীয় রাজনীতি করি, আমাতের মধ্যে ঐকমত্য নাই। আমরা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য দেশ বিক্রি করে দিতে রাজি আছি। আমরা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নিজের ওপর অন্য কাউকে বসায় দিতে রাজি আছি। তারপরও ক্ষমতায় যেতে হবে! এই জিনিসগুলো ছাড়তে হবে।’

ফটিকছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান এইচ এম আবু তৈয়ব, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাব্বির রাহমান সানি, ভাইস চেয়ারম্যান জেবুননাহার মুক্তা ও অ্যাডভোকেট ছালামত উল্লাহ চৌধুরী শাহীন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) এটিএম কামরুল ইসলাম, ফটিকছড়ি পৌর মেয়র মো. ইসমাঈল হোসেন প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, মহাজোটের শরিক হয়েও নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী দীর্ঘদিন ধরেই সরকার ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে আসছেন। এর আগে চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি নিজের নির্বাচনী আসন ফটিকছড়িতে এক অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে সরকারকে এক প্রকার হুমকিই দেন তিনি।

তরিকত ফেডারেশন চেয়ারম্যান সে সময় বলেছিলেন, ‘আমার মুখ খোলাবেন না। মুখ খুললে অসুবিধা হয়ে যাবে। আমি আপনাদের সঙ্গে (আওয়ামী লীগ) আছি। আমাকে সাইজ করার চেষ্টা করলে নিজেরাই সাইজ হয়ে যাবেন।

‘ওরা এখনও নজিবুল বশর কী তা চিনে নাই। আমার জন্য অনেকে কথা বলবে। বিএনপিকে তো ঘরে ঢুকানো সম্ভব; কিন্তু নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারীকে না।’

সে সময় দুই ছেলের বিরুদ্ধে প্রায় ৪০ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা করায় একই বক্তব্যে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কমিশনারের বাড়ির ইট খুলে নেয়ার হুমকি দেন তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর