নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ৯ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণ পর নির্মমভাবে হত্যা মামলায় মোশারফ মিয়া নামে একজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। একইসঙ্গে তাকে ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে।
রোববার দুপুরে জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক নাজমুল হক শ্যামল আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। একই মামলায় লাশ গুম করায় আসামিকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত মোশারফ মিয়া রূপগঞ্জ উপজেলার কেন্দুয়া এলাকার মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে। নিহত শিশুটি দুঃসম্পর্কের নাতি হতো তার। তাকে দাদা বলে সম্বোধন করত শিশুটি।
আদালত পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান জানান, ২০২১ সালের ২২ অক্টোবর সকালে শিশুটির বাড়িতে আসেন মোশাররফ। এরপর শিশুটিকে চকলেট ও চিপস কিনে দেয়ার কথা বলে বাড়ির বাইরে নিয়ে যান তিনি। পরে দুপুর গড়িয়ে রাত হয়ে গেলেও শিশুটিকে নিয়ে বাড়িতে না ফেরায় তার খোঁজ শুরু করে পরিবারের লোকজন। এলাকায় মাইকিং চালিয়ে সন্ধান করাসহ থানা পুলিশকে ঘটনা জানানো হয়। পরদিন সকালে স্থানীয় লোকজন মোশাররফকে দেখতে পেয়ে শিশুর পরিবারের লোকজনকে খবর দেয়। পরে মোশাররফকে আটক করে শিশুটির বিষয়ে পুলিশি জিজ্ঞেসাবাদের এক পর্যায়ে তিনি জানান, তাকে অপহরণ করে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। এরপর পুলিশকে জাঙ্গীর এলাকার কবরস্থানের পাশের একটি কাশবনে নিয়ে যান তিনি। সেখানে উলঙ্গ অবস্থায় শিশুটির মরদেহ পাওয়া যায়।
পরিদর্শক আসাদুজ্জামান জানান, শিশুটির দুই হাত ভেঙ্গে ফেলা হয়েছিল, মরদেহের নাক-মুখ রক্তাক্ত ছিল। লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসে শিশুটিকে ধর্ষণের পর হত্যার বিভিন্ন আলামত।
এ ঘটনায় শিশুটির মা বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় মোশাররফকে আসামি করে মামলা করেন। ওই মামলায় সে বছরই অভিযোগ পত্র দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। মামলাটি আদালতে উঠলে সেখানে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন আসামি।
এ বিষয়ে আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রকিব উদ্দিন জানান, শিশুটিকে অপহরণের পর ধর্ষণ শেষে হত্যা, এরপর লাশ গুম করার মামলায় ১১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত রোববার আসামির উপস্থিততে এ রায় ঘোষণা করে।
তিনি জানান, রায়ে আসামি মোশারফ মিয়াকে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে লাশ গুম করায় অভিযোগে আরও পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।