মানবাধিকার সংস্থা ‘অধিকার’-এর সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিনের (এলান) কারাদণ্ডের রায়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ফ্রান্স ও জার্মানি। সূত্র: ইউএনবি
শনিবার সকালে ফ্রাঙ্কো-জার্মান যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ফ্রান্স এবং জার্মানি আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক অর্জনের প্রতি গভীরভাবে সংযুক্ত।’
‘সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানবাধিকার রক্ষাকারীদের প্রতি সমর্থন অব্যাহত থাকবে।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আদিলুর রহমান খান এবং এএসএম নাসিরুদ্দিন এলান সম্পর্কে বাংলাদেশের আদালতের সিদ্ধান্তের জন্য আমরা দুঃখিত।
‘আমরা এই পরিস্থিতিতে কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছি এবং এ ক্ষেত্রে তাদের সঙ্গে আমাদের সংলাপ বজায় রাখব।’
দুই দেশ স্মরণ করেছে যে, আদিলুর রহমান খান মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের পক্ষে ২০১৭ সালে মানবাধিকার এবং আইনের শাসনের জন্য ফ্রাঙ্কো-জার্মান পুরস্কারপ্রাপ্ত।
প্রসঙ্গত, রাজধানীর মতিঝিলে ২০১৩ সালে হেফাজত ইসলামের সমাবেশে অভিযান নিয়ে তথ্য বিকৃতির অভিযোগে তথ্য-প্রযুক্তি আইনে করা মামলায় আদিলুর ও এলানকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত।
বৃহস্পতিবার ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াত এই রায় ঘোষণা করেন।
হেফাজত ইসলাম ২০১৩ সালে ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে সমাবেশ করে। পরে সমাবেশস্থলে রাতযাপনের ঘোষণা দেন সংগঠনের নেতারা। তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দিতে যৌথ অভিযান চালায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। ওই অভিযানে ৬১ জন নিহত হয় বলে দাবি করেছিল অধিকার।
তবে সরকারের তথ্যমতে, সেই রাতের অভিযানে কেউ মারা যায়নি। শাপলা চত্বরে অভিযানের পর ২০১৩ সালের ১০ আগস্ট গুলশান থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন ডিবির তৎকালীন উপ-পরিদর্শক আশরাফুল ইসলাম।
তদন্ত শেষে ওই বছরের ৪ সেপ্টেম্বর ঢাকার একটি আদালতে আদিলুর ও এলানের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এতে ৩২ জনকে সাক্ষী করা হয়। ওই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর মামলাটি বিচারের অভিযোগ আমলে নেয় ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল। এরপর ২০১৪ সালে দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয় আদালত।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামি আদিলুর ও এলান ৬১ জনের মৃত্যুর ‘বানোয়াট, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মিথ্যা’ তথ্য দিয়ে প্রতিবেদন তৈরি ও প্রচার করে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি ও আইনশৃঙ্খলা বিঘ্ন করার অপচেষ্টা চালান। এতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, সরকার ও রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি দেশ-বিদেশে চরমভাবে ক্ষুণ্ন হয়।’