গাজীপুরের টঙ্গীতে হক গ্রুপের কারখানার ভেতরে আটকে রেখে বহিরাগতদের দিয়ে এক কর্মকর্তাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে।
টঙ্গীর হিমারদিঘি এলাকায় হক গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজের কারখানার ভেতরে বুধবার রাত ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
মারধরের শিকার মুশফিকুর রহমান ওই প্রতিষ্ঠানের মহাব্যবস্থাপক পদে কর্মরত।
ওই সময় গুরুতর আহত অবস্থায় মুশফিকুর রহমানকে তার স্ত্রী মলি রহমান উদ্ধার করে নিয়ে যান, তবে ঘটনার পর থেকে মুশফিকুর রহমান ও তার স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাদের ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ঘটনার একটি ভিডিও প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।
কারখানার শ্রমিক ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে মুশফিকুর রহমান ওই কারখানার মহাব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎসহ অভ্যন্তরীণ বেশ কিছু বিষয়ে অভিযোগ তোলে প্রতিষ্ঠানটি। এ নিয়ে কারখানার মালিকপক্ষের সঙ্গে মতবিরোধ চলছিল মহাব্যবস্থাপক মুশফিকুর রহমানের। বুধবার মুশফিককে কারখানার ভেতরে প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান আদম তমিজি হকের নির্দেশে আটকে রাখা হয়। পরে আদম তমিজির নির্দেশে কারখানার মানবসম্পদ কর্মকর্তা ঈশান খানের নেতৃত্বে বহিরাগত শতাধিক লোকজন মুশফিককে মারধর করেন।
শ্রমিক ও পুলিশ জানায়, কারখানার আধিপত্য নিয়ে ঈশানের সঙ্গে আগে থেকেই বিরোধ ছিল মুশফিকুর রহমানের।
প্রতিবেদকের হাতে আসা ভিডিওতে দেখা যায়, মুশফিকুর রহমান গুরুতর আহত অবস্থায় একজনের কাঁধে ভর করে হাঁটছেন। ওই সময় টঙ্গী পূর্ব থানার এসআই মাহবুব হোসেন ও এসআই মিজানুর রহমানসহ কারখানার অন্যান্য কর্মকর্তা ও বহিরাগত লোকজন অফিসকক্ষে উপস্থিত ছিলেন। পরে এসআই মাহবুব তার হাতে থাকা ব্যাগ থেকে একটি সাদা কাগজ বের করেন। কাগজে কোনোকিছু না লিখেই তিনি তাতে মহাব্যবস্থাপক মুশফিকুর রহমান ও তার স্ত্রী মলি রহমানের স্বাক্ষর নেন। এরপর স্বাক্ষর করা কাগজটি ব্যাগে ভরে ঘটনাস্থল থেকে চলে যান এসআই মাহবুব।
এ ছাড়াও ভিডিওতে মুশফিকুর রহমানকে মুঠোফোনে বিদেশে অবস্থানরত চেয়ারম্যান আদম তমিজি হকের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়।
এ বিষয়ে টঙ্গী পূর্ব থানার এসআই মাহবুব হোসেন বলেন, ‘কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় দাবি করে আমাদের কাছে কোনো কিছু খোলাসা করেনি।’
সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘মুশফিকুর রহমান তার কোনো অভিযোগ নেই মর্মে একটি আবেদন দিয়েছেন। তাতেই তিনি ও তার স্ত্রী স্বাক্ষর দিয়েছেন।’
টঙ্গী পূর্ব থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘হক গ্রুপের কারখানার দুই ম্যানেজারের মধ্যে মারামারি হচ্ছে, এমন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। বিষয়টি তাদের অভ্যন্তরীণ হওয়ায় তারা মালিকের সঙ্গে আলোচনা করে অভিযোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন।
‘এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কেউ থানায় লিখিত কিংবা মৌখিক অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ দিলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’