বিদেশ থেকে একটি জঙ্গি দল গাজীপুরের টঙ্গীতে আসার কথা ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশেরে এন্টি টেরোরিজম ইউনিট (এটিইউ)। সংস্থাটি জানিয়েছে, তারা বাংলাদেশে নাশকতার পরিকল্পনা করছিল। নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের একজন জঙ্গি সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর এমন তথ্য পেয়েছে বলে জানিয়েছে এটিইউ।
গ্রেপ্তারকৃত জঙ্গি সদস্যের নাম- মোহাম্মদ আরিফ। বুধবার রাজধানীর ভাটারার যমুনা ফিউচার পার্ক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে এটিইউ। ২৩ বছর বয়সী আরিফ টঙ্গীর চেয়ারম্যান বাড়ি এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর বারিধারায় এটিইউ সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান এটিইউ-এর পুলিশ সুপার (অপারেশন) মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন।
পুলিশ সুপার ছানোয়ার হোসেন বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃত আরিফ ১৫-২০ দিন আগে বিদেশ থেকে কিছু জঙ্গি আসবে বলে একটি ফোন পান। বিদেশ থেকে ওই জঙ্গি দল আসার পর আরিফসহ টঙ্গী এলাকায় একটি মিটিং (বৈঠক) করার কথা ছিল। পরিকল্পনা ছিল, বৈঠক শেষে তারা নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালাবে। ইয়াকুব হুজুর নামে অপর একজন জঙ্গির সহযোগী হিসেবে কাজ করছিলেন আরিফ। এছাড়া এই পরিকল্পনার সঙ্গে ওমর ফারুক ও জাহাদ খান নামে আরও দুই জঙ্গি জড়িত রয়েছেন বলে জানা গেছে। এসব বিষয়ে গোয়েন্দা তথ্য এটিইউ-এর হাতে আসার পর বুধবার ভাটারা এলাকায় অভিযান চালিয়ে আরিফকে গ্রেপ্তার করা হয়।’
তিনি বলেন, ‘আরিফ আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সক্রিয় সদস্য। জসীম উদ্দিন রাহমানি ও তামিম আল আদনানীদের ওয়াজ শুনে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের যোগ দেন। আনসারুল্লাহ বাংলা টিমে যুক্ত হওয়ার পর আরিফ টঙ্গী বাজার চেয়ারম্যান বাড়ি এলাকায় গোপনে দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল। এছাড়া, গ্রেপ্তারের আগ পর্যন্ত আরিফ সংগঠনের সদস্য সংগ্রহ ও সংগঠিত করার পাশাপাশি সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রশিক্ষণের প্রস্তুতি নিচ্ছিল।’
এটিইউ কর্মকর্তা বলেন, ‘১৫-২০ দিনে আগে ইয়াকুব হুজুরের কাছ থেকে ফোন পান আরিফ। ফোন করে ইয়াকুব জানান, বিদেশ থেকে সংগঠনের আরও কিছু সদস্য আসবে। পরে তারা সবাই টঙ্গী এলাকায় একত্রিত হয়ে গোপন বৈঠক করবে এবং পরে নাশকতার বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গোয়েন্দা তথ্য পাওয়ার পর আমরা নজরদারি বৃদ্ধি করি। নজরদারির এক পর্যায়ে মনে হয়েছে তারা কোনো নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ঘটাতে এই বৈঠক করতে চাচ্ছে। পরে গতকাল অভিযান চালিয়ে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে অন্যদেরও গ্রেপ্তার করা হবে।’
মোহাম্মদ আরিফ এবং পলাতক আসামী ইয়াকুব হুজুর, ওমর ফারুক ও জাহাদ খানসহ তাদের অজ্ঞাতনামা সহযোগী আসামিদের বিরুদ্ধে টঙ্গী থানায় মামলা করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।