ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পাসপোর্ট-বোর্ডিং পাস ছাড়া বিমানে উঠে পড়া শিশু জোনায়েদ মোল্লা বাড়ি থেকে পালিয়ে বিমানবন্দরে গিয়েছিল। অবশ্য এবারই প্রথম নয়, সে প্রায়ই এভাবে পালিয়ে যায়।
১০ বছর বয়সী জোনয়েদ গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের পারইহাটি গ্রামের ইমরান মোল্লার ছেলে। বুধবার জোনায়েদের চাচা ইউসুফ মোল্লা তাদের বাড়িতে নিউজবাংলাকে তাকে নিয়ে ওই তথ্য দেন।
ইউসুফ মোল্লা জানান, তার ভাতিজা জোনায়েদ খুবই দুরন্তপনা বালক। তাকে হাফেজিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি করা হয়েছিল। সেখান থেকে সে বার বার পালিয়ে আসে বলে তাকে মাদ্রাসা থেকে এনে স্কুলে ভর্তি করা হয়েছে।
তিনি জানান, তবুও সে বাড়ি থেকে মাঝে মধ্যে হারিয়ে যায়, আবার একাই ফিরে আসে। তারই ধারাবাহিকতায় এক সপ্তাহ আগে সে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। এরপর তার আর খোঁজ মিলছিল না।
ইউসুফ মোল্লা বলেন, পরে জানতে পারি সে পালিয়ে গিয়ে বিমানে উঠেছে। তার বিমানে উঠে পড়ার ব্যাপারে আমরা কিছুই জানি না। বিমানবন্দর থানা থেকে আমাদের ফোন করা হলে তাকে বিমানবন্দর থানা থেকে নিয়ে আসছি। বর্তমানে সে আমাদের বাড়িতেই আছে।
এর আগে সোমবার রাত ৩টা ১০ মিনিটে ঢাকা থেকে কুয়েতগামী কুয়েত এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে (কেইউ-২৮৪) পাসপোর্ট ও বোর্ডিং পাস ছাড়াই উঠে পড়ে জোনায়েদ। পরে তাকে নামিয়ে দেয়া হয়। এরপর তাকে বিমানবন্দর থানা হেফাজতে রাখা হয়।
কীভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে সে বিমানে উঠে পড়ল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছ। দায়িত্বরত ১০ জনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে স্কোয়াড্রন লিডার রুদ্র জান্নাতকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক মিয়া জানান, শিশুটি থানা হেফাজতে ছিল। শিশুটির চাচা ইউসুফ মোল্লার কাছে তাকে হস্তান্তর করা হয়েছে।
শিশু জোনয়েদ মোল্লা জানায়, সে বিমানবন্দরের সব নিরাপত্তা রক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে বিমানে উঠে পড়ে। সে কোনো কিছু না ভেবে শখের বসে বিমানে ওঠে। সে জানেই না যে বিমানে উঠতে বোডিং পাস, পাসপোর্ট এবং ভিসা লাগে। সে ভুল করে বিমানে উঠে পড়েছে।
মুকসুদপুর থানার ওসি মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, বিমানবন্দর থানা থেকে আমাদের থানায় ফোন করা হলে আমরা তার পরিবারের খোঁজ করে তাদের সংবাদ দিই। সংবাদ দেয়ার পর তারা তাকে বিমানবন্দর থানা থেকে নিয়ে আসে। বর্তমানে শিশুটি তার বাড়িতেই আছে।