সরকারের সময়োচিত পদক্ষেপের ফলে দেশে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল আছে বলে দাবি করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। দ্রব্যের সরবরাহ স্বাভাবিক উল্লেখ করে বাজার যাতে অস্থিতিশীল না হয় সেজন্য সরকার সতর্ক রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান ও সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য আদিবা আনজুম মিতার তিনটি পৃথক প্রশ্নের জবাবে সংসদে এসব তথ্য জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাজারে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি যেন সৃষ্টি না হয় সেজন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর নিয়মিত মনিটরিং করছে। বাজারে সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখতে আমদানি বাধাসমূহ দূর করা, শুল্ক হার হ্রাস, গ্যাস-বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা, বন্দরে দ্রুত খালাস নিশ্চিত করা, এলসি অনুযায়ী পণ্য আমদানি তদারকি করাসহ সম্ভাব্য সকল ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। চিনি ও ভোজ্যতেলের ওপর আরোপকৃত শুল্ক হার অধিকতর যৌক্তিক করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে অনুরোধ করা হয়েছে।’
নিত্যপ্রয়োজনীয় পরিবহনে যেন রাস্তাঘাটে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না হয় সেজন্য জননিরাপত্তা বিভাগকে জানানো হয়েছে বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী। বলেন, ‘পোল্ট্রি বাজারে অনিয়ম বা মনোপলি রয়েছে কি না- সে বিষয়ে পরীক্ষার জন্য বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।’
আন্তর্জাতিক বাজারমূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সময়ে সময়ে ভোজ্যতেল ও চিনির স্থানীয় বাজার মূল্য সমন্বয় করা হয় বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন খানের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি, ডলারের মূল্য বৃদ্ধি ও চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আমদানি নির্ভর নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। যার প্রভাব গরম মসলাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যের উপর পরিলক্ষিত হচ্ছে।’
ঢাকা-২০ আসনের সংসদ সদস্য বেনজীর আহমদের প্রশ্নের উত্তরে বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, ২০২২-২৩ অর্থবছরে সার্কভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে ২৩ বিলিয়ন ডলার বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ঘাটতি ভারতের সঙ্গে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ভারত, চীন ও পাকিস্তানসহ সার্কভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ২৩ হাজার ৭৭ দশমিক ২৯ মিলিয়ন (প্রায় ২৩ বিলিয়ন) ডলার।
মন্ত্রী জানান, ভারতের সঙ্গে সর্বোচ্চ সাত হাজার ১৬০ দশমিক ৮১ মিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। আর পাকিস্তানের সঙ্গে ঘাটতি ৪৬৬ দশমিক ৩৩ মিলিয়ন ডলার, ভুটানের সঙ্গে ১৪ দশমিক ২৯ এবং আফগানিস্তানের সঙ্গে ১ দশমিক ৪৯ মিলিয়ন ডলার ঘাটতি রয়েছে।
তবে বাণিজ্য উদ্বৃত্ত আছে নেপাল, শ্রীলংকা ও মালদ্বীপের সঙ্গে। চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি ১৫ হাজার ৪৮৮ দশমিক ৮৪ মিলিয়ন ডলার জানান মন্ত্রী