সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে এর ধারা অব্যাহত রাখতে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে ভোট চেয়েছেন জামালপুরের জেলা প্রশাসক মো. ইমরান আহমেদ। এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে জেলাজুড়ে।
সোমবার বিকেলে মাদারগঞ্জ পৌরসভার নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
জেলা প্রশাসকের ওই বক্তব্যের ১৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে মঙ্গলবার। এরপর থেকেই সরকারি কর্মকর্তার এমন বক্তব্য ঘিরে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে জেলার নানা শ্রেণী-পেশার মানুষের মাঝে। বিষয়টি টক অফ দ্য ডিস্ট্রিক্ট-এ পরিণত হয়েছে।
ভিডিওতে জেলা প্রশাসককে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘আমাদের অনেক কষ্টে অর্জিত এই স্বাধীনতা। আমাদের স্বাধীনতার সুফল যোগাযোগ ও উন্নয়ন। এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। যে সরকার এই উন্নয়ন করেছে, এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য সেই সরকারকে আবার পুনরায় নির্বাচিত করে, আবার ক্ষমতায় আনতে হবে। এটা হবে আমাদের প্রত্যেকের অঙ্গীকার।
‘আমি আশা করি, সামনের নির্বাচনের পর আমাদের সম্মানিত প্রধান অতিথি (মির্জা আজম) অবশ্যই একজন মন্ত্রী হিসেবে এই জেলায় আরও ব্যাপক উন্নয়ন করবেন। এটা আমি আশা করি এবং বিশ্বাস করি এটা হবে, ইনশাআল্লাহ।’
জামালপুরের মাদারগঞ্জ পৌরসভা প্রাঙ্গণে আয়োজিত পৌরসভার নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মাদারগঞ্জ পৌর মেয়র মির্জা কবিরের সভাপতিত্বে ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি। এছাড়াও জামালপুরের পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামানসহ অনেকে বক্তব্য দেন।
জামালপুরের জেলা প্রশাসক ইমরান আহমেদের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও ফোন রিসিভ না করায় এ বিষয়ে বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
মো. ইমরান আহমেদ ২৩ জুলাই জামালপুরের জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগদান করেন। এর আগে তিনি পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের তথ্য ব্যবস্থাপনা-১ অধিশাখার উপসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া তিনি জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের এপিএস, পাট মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ও সচিবের পিএসের (অতিরিক্ত দায়িত্ব) দায়িত্ব পালন করেছেন। ইমরান আহমেদের বাড়ি খুলনার দাকোপ উপজেলায়।
প্রসঙ্গত, এর আগে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভা আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারকে পুনরায় নির্বাচিত করতে প্রকাশ্যে ভোট চান দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানার ওসি শ্যামল চন্দ্র ধর।
ওই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তার পুলিশিং কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২৫ আগস্ট ওসি শ্যামল চন্দ্র ধরকে জামালপুর পুলিশ লাইনে বদলি করা হয়।