আদালত অবমানার অভিযোগে মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মাদারীপুর অর্পিত প্রত্যাবর্তন ট্রাইবুনালে মামলাটি করেন মাদারীপুর শহরের ১ নম্বর শকুনী এলাকার খালেদা ইয়াসমিন নামে এক নারী।
অর্পিত প্রত্যাবর্তন ট্রাইবুনাল ও মাদারীপুর যুগ্ম জেলা জজ ১ আদালতের বিচারক কোহিনুর আরজুমান জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন।
সোমবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী প্রদীপ চন্দ্র সরকার।
মামলার বিবরণে জানা যায়, বাদীর ১০ শতাংশ জমি অর্পিত সম্পত্তির ‘ক’ তফসিলভুক্ত হয়ে গেজেট প্রকাশ হয়। এই সম্পত্তি অবমুক্তির জন্য অর্পিত প্রত্যাবর্তন ট্রাইবুনালে খালেদা ইয়াসমিন বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় ২০২১ সালের ৩০ জানুয়ারি বাদীর অনুকুলে রায় হয়। রায়ের পর জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে আপিল করা হয়। চলতি বছরের ১৭ মে ট্রাইবুনাল আপিল নামঞ্জুর করে আদেশ পুনর্বহাল রাখে এবং আদেশ বাস্তবায়নের জন্য জেলা প্রশাসককে অনুরোধ করে। এ ছাড়াও মাদারীপুর অর্পিত প্রত্যাবর্তন ট্রাইবুনাল থেকে চলতি বছরের ১৩ জুন ৫৪ নম্বর স্মারকে রায় ডিক্রি বাস্তবায়নের জন্য রায় ডিক্রির অনুলিপি প্রেরণ করে নির্দেশ দেয়া হয়।
তবে ট্রাইবুনালের রায় ও ডিক্রি মোতাবেক জমি অর্পিত তালিকা থেকে অবমুক্তির কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি জেলা প্রশাসক। পরে এ বিষয়ে বাদীর পক্ষ থেকে লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করা হয়। এরপরও তিনি কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করেননি।
মামলা এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ট্রাইবুনালের ডিক্রি বাস্তবায়ন না করা সুস্পষ্টভাবে আইনের লঙ্ঘন এবং আদালত অবমাননা আইন ২০১৩-এর ২ ধারার ৬ ও ৯ নম্বর উপধারা মোতাবেক শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী প্রদীপ চন্দ্র সরকার এ বিষয়ে বলেন, ‘আমার মক্কেল অর্পিত প্রত্যাবর্তন ট্রাইবুনালে একটি মামলা করেন। মামলায় আমার বাদী ডিক্রিপ্রাপ্ত হয়। এরপর ডিক্রি বাস্তবায়নের জন্য জেলা প্রশাসক কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। ডিক্রি বাস্তবায়নের জন্য লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করা হলেও তিনি তার জবাব দেননি। তাই তার বিরুদ্ধে গত ৩১ আগস্ট আদালত অবমামনার অভিযোগে মামলা করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইবুনালে আরও একাধিক মামলা হয়েছে।’
এসব ব্যাপারে জানতে মাদারীপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খানের ব্যবহৃত সরকারি মোবাইল নম্বরে ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও তার জবাব দেননি তিনি।