বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

প্রকল্পের টাকা নিয়ে এলডিডিপি কর্মীদের নয়-ছয়

  • প্রতিনিধি, মেহেরপুর   
  • ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ২৩:০৬

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সাইদুর রহমান বলেন, ‘সমিতির সদস্যরা ডিজাউন অনুযায়ী শেড তৈরি করেন না। আবার অনেকেই আছেন যারা নগদ টাকা পেয়ে অন্য কাজে খরচ করে ফেলায় শেষ পর্যন্ত শেড তৈরি করা হয়ে ওঠে না। যা প্রকল্প বাস্তবায়নে একটি প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়।’

মেহেরপুর মুজিবনগরে সরকারি অর্থায়নে ছাগল ও মুরগির শেড নির্মাণ প্রকল্পের টাকা নিয়ে ব‍্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। কাজগুলো সম্পাদন করতে উপকারভোগীদের ব্যাংক হিসেবে টাকা দেয়ার কথা থাকলেও কৌশলে ওই টাকা প্রকল্পের কর্মীরা হস্তগত করে শেড নির্মাণ শুরু করেন। তবে নানা অনিয়মের অভিযোগে উপকারভোগীদের ক্ষোভের মুখে পড়েছেন তারা। ফলে মাঝপথে এসে থেমে গেছে প্রকল্পের কাজ।

জানা গেছে, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের আওতাধীন প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প (এলডিডিপি) কর্তৃক উপজেলা পর্যায়ে গঠিত প্রডিউসার গ্রুপের (পিজি) সদস্যদের জন্য ইনভেস্টমেন্ট সাপোর্টের আওতায় মুরগি ও ছাগলের পরিবেশবান্ধব শেড (ঘর) নির্মাণের জন্য এ বরাদ্দ দেয়া হয়। প্রকল্পের অর্থ দিয়ে ঘর নির্মাণের লক্ষ্যে পিজি সদস্যদের সঙ্গে ৩০০ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে চুক্তি সম্পাদন করেন ওই প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। প্রতিটি শেড নির্মাণের জন্য ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। সে হিসাবে মুজিবনগর উপজেলার মোট ১২০ জনকে সর্বমোট ২৪ লাখ টাকা দেয়া হয়। অগ্রণী ব্যাংকের মুজিবনগর শাখার পিজি সদস্যদের নামীয় অ্যাকাউন্টে এ টাকা দেয়া হয়। অ্যাকাউন্ট পে চেকের টাকা মালিক ছাড়া প্রাণিসম্পদ অফিসের পক্ষে উত্তোলন সম্ভব নয়। তবে উপকারভোগীদের ‘ম্যানেজ’ করে কৌশলে টাকাগুলো নিজেদের আয়ত্বে নেন এলডিডিপি প্রকল্পের প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তানিয়া আখতার ও প্রাণিসম্পদ মাঠ সহকারী মিঠুন আলী।

প্রকল্পের ডিজাইন অনুযায়ী নিজেরা শেড তৈরি করে দেবেন- এমন প্রতিশ্রুতিতে সদস্যদেরকে টাকা দিতে বাধ্য করেন তারা। তবে নির্মাণ কাজে নিম্নমানের ইট, পরিমাণে কম বালু ও সিমেন্ট দেয়ার অভিযোগ ওঠে। খড়ি হিসেবে বিক্রি হবে, এমন সব কাঠ দিয়ে শেডের বাটাম বানানো হয়। এতে উপকারভোগী সদস্যদের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।

এ বিষয়ে অভিযোগ জানিয়ে মোনাখালী ইউনিয়নের রামনগরের পিজি সদস্য রুপালী খাতুনের স্বামী আব্দুল মান্নান বলেন, ‘শেডের জন্য ইটের যে পিলার তৈরি করা হয়েছে, তা মাটির ওপর থেকে। মাটির নিচ থেকে পিলার তোলা না হলে কীভাবে ঘর টিকবে, তা নিয়ে সংশয় দেখা দেয়। এছাড়াও প্রয়োজনীয় বালু-সিমেন্টও দেয়া হয়নি।’

শেডের জন্য পিলারগুলোও নির্মাণ করা হয়েছে মাটির ওপরে। ছবি: নিউজবাংলা

উপকারভোগীদের প্রতিবাদের মুখে এক পর্যায়ে টাকা ফেরত দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তানিয়া আখতার ও প্রাণিসম্পদ মাঠ সহকারী মিঠুন আলী। নির্মাণাধীন এসব শেডের বাকি কাজ উপকারভোগীরা নিজেরাই করে নেবেন বলে জানান তারা। চলমান কাজ পর্যন্ত খরচের একটি আনুমানিক হিসাব করে উপকারভোগীদের বাকি টাকা ফেরত দেয়া হয়। এতে মাঝপথে টাকা ফেরতের সিদ্ধান্তে শেড নির্মাণ কাজ ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। কেননা, প্রকৃত ব্যয়ের সঙ্গে খরচের হিসাবের মিল নেই। তাই পকেট থেকে টাকা খরচ করে শেড নির্মাণ করতে হবে বলে অভিযোগ উপকারভোগীদের।

জানতে চাইলে এলডিডিপি প্রকল্পের প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তানিয়া আখতার ও প্রাণিসম্পদ মাঠ সহকারী মিঠুন আলী বলেন, ‘আমাদের বড় স্যারের (জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার) নির্দেশে টাকাগুলো নিয়ে শেড তৈরি করে দেয়া হচ্ছিল।’

তবে শেড নির্মাণের অনিয়মের বিষয়ে তাদের কাছ থেকে কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি।

তবে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সাইদুর রহমান বলেন, ‘সমিতির সদস্যরা ডিজাউন অনুযায়ী শেড তৈরি করেন না। আবার অনেকেই আছেন যারা নগদ টাকা পেয়ে অন্য কাজে খরচ করে ফেলায় শেষ পর্যন্ত শেড তৈরি করা হয়ে ওঠে না। যা প্রকল্প বাস্তবায়নে একটি প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়।’

তিনি বলেন, ‘প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যেই প্রকল্পের লোকজনকে ওই টাকা নিয়ে শেড নির্মাণ করতে বলা হয়েছিল। ঘর নির্মাণ শেষে যদি টাকা উদ্বৃত্ত থাকে, তাহলে সেই টাকা ফেরত দেয়ার নির্দেশও দেয়া হয়েছিল।’

এ বিভাগের আরো খবর