বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

প্রতিবন্ধকতা ডিঙিয়ে অদম্য ফজলুল

ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মো. মোস্তাফিজার রহমান বলেন, ‘ফজলুলের সম্পর্কে কিছুই আমার জানা নেই। তার সম্পর্কে খোঁজখবর নেয়া হবে। প্রয়োজনে আর্থিকভাবে সহায়তা করা হবে।’

ময়মনসিংহ সদর উপজেলার দাপুনিয়ার ইছাইল নতুনবাজার ফরাজিবাড়ি এলাকার গাছকাটা শ্রমিক লাল মিয়ার ছেলে ফজলুল হক। জন্ম থেকেই তার দুই পা বাঁকা। এর ফলে হামাগুড়ি দিয়ে বিদ্যালয়ে গিয়ে পিএসসি, জেএসসি ও এসএসসি পাস করতে হয়েছে তাকে।

অষ্টম শ্রেণি পাস করার পর থেকে টিউশনি করে নিজের লেখাপড়ার খরচ চালাচ্ছে ফজলুল।

জন্মের সময় ফজলুলের পা দুটো সামনের দিকে বাঁকা ছিল। বয়স তিন মাস হলে ফজলুলকে একাধিক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান তার বাবা, কিন্তু পা সোজা হবে না বলে জানান চিকিৎসকরা।

এরপর ধীরে ধীরে এভাবেই বেড়ে উঠেছে ফজলুল, তবে থমকে যায়নি ফজলুল। দুটি পায়ে হামাগুড়ি দিয়ে বিদ্যালয়ে গিয়ে পিএসসি, জেএসসি ও এসএসসি পাস করে এখন পড়ালেখা করছে দ্বাদশ শ্রেণিতে। নিজের ইচ্ছাশক্তিকে বাস্তবে রূপ দিতে চেষ্টার নেই কমতি।

ফজলুল হকের বাবা লাল মিয়া বলেন, ‘আমার পাঁচ ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে সবার বড় ফজলুল। মেয়েকে অনেক কষ্ট করে বিয়ে দিয়েছি। এক ছেলে হোটেলে কাজ করে। অপর তিন ছেলে ছোট। তারা বাড়িতেই থাকে।’

তিনি বলেন, ‘শৈশব থেকেই লেখাপড়ার প্রতি খুব আগ্রহ ছিল ফজলুলের। ফলে আমার আর্থিক অবস্থা ভালো না হওয়ার পরও থমকে যায়নি সে। অভাব-অনটনের মধ্যেও কখনও অটোরিকশা চড়ে আবার কখনও হাতে স্যান্ডেল পরে হামাগুড়ি দিয়ে কলেজে পড়ালেখা করছে।

‘ফজলুলকে পড়ালেখার খরচ দিতে পারি না। তাই অষ্টম শ্রেণি পাস করার পর থেকে সে টিউশনি করে নিজের লেখাপড়ার খরচ চালাচ্ছে।’

ফজলুল হক বলে, ‘বাড়ি থেকে কলেজ প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে। যেদিন গাড়ি ভাড়া থাকে, সেদিন অটোরিকশায় যাই। আর যেদিন গাড়ি ভাড়ার টাকা না থাকে, সেদিন হাতের তালুতে স্যান্ডেল পরে হামাগুড়ি দিয়ে তিন কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে কলেজে যেতে হয়।

‘টিউশনি করে যে টাকা পাই, তা দিয়ে পড়াশোনার খরচ চালাই। কিছু টাকা পরিবারকে দিই। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে একটা চাকরি করে পরিবারের হাল ধরতে চাই।’

হলি-চাইল্ড ইন্টারন্যাশনাল কলেজের অধ্যক্ষ নাজমুল হোসাইন বলেন, ‘ফজলুল নিয়মিত কলেজে আসে। আমরা ফজলুল হকের কাছ থেকে বেতন ও পরীক্ষার ফি নিই না। এখান থেকে সে যখন বের হবে, তখন ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য যে প্রতিবন্ধী কোটা থাকে, সেটার জন্য আমরা চেষ্টা করব।’

ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোস্তাফিজার রহমান বলেন, ‘ফজলুলের সম্পর্কে কিছুই আমার জানা নেই। তার সম্পর্কে খোঁজখবর নেয়া হবে। প্রয়োজনে আর্থিকভাবে সহায়তা করা হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর