শাহবাগ থানায় নিয়ে গিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় দুই নেতাকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।
রোববার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক মো. মাহমুদুল হাসান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই উদ্বেগ জানানো হয়।
ঢাবি ছাত্রদল বলছে, ‘একজন নিম্ন পদস্থ পুলিশ কর্মকর্তার ভয়ে সমগ্র বাংলাদেশের ছাত্রলীগ আজ তটস্থ। এই পুলিশ কর্মকর্তা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডযোগ্য অপরাধ করার পরও ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে আইনগত কোনো ব্যবস্থা নেয়ার ন্যূনতম সাহস ছাত্রলীগের নেতারা দেখাতে পারেননি।
‘তারাও জানেন যে, পুলিশের সঙ্গে মিলেমিশে তারা যে মাৎস্যন্যায় প্রতিষ্ঠা করেছেন তাতে তাদেরও বিচার পাওয়ার কোনো সুযোগ অবশিষ্ট নেই।’
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের অন্যতম রক্ষাকর্তা এই অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার হারুন অর রশিদ। বিগত ১৫ বছর ধরে পুলিশের সহযোগিতায় ছাত্রলীগ সারা দেশের ক্যাম্পাসগুলোতে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। নির্যাতিত, মুমূর্ষু ছাত্রদের পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে।
‘বিরোধী ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীদের ওপর অমানবিক পুলিশি নির্যাতনের ঘটনাগুলোতে বুনো উল্লাস করেছে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। পুলিশ বাহিনী যখন ভোটভাকাতির দায়িত্ব নিয়েছে, তখন রাজনীতি ছেড়ে ছাত্রলীগের নেতারা টেন্ডারবাণিজ্য প্রশ্নফাঁস এবং চাঁদাবাজিতে ব্যস্ত হয়েছে।’
এতে বলা হয়, ‘আর আজ তাদের দুই নেতা পাশবিক নির্যাতনের শিকার হওয়ার পরও ছাত্রলীগের কেউ কোনো প্রতিবাদ জানাতে সক্ষম হয়নি। এতেই বোঝা যায় ছাত্রলীগ এখন নীতি-আদর্শহীন একটি দেউলিয়া সংগঠনে পরিণত হয়েছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘অতীতে পুলিশ কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষর্থী নির্যাতনের প্রতিবাদের কর্মসূচিতে ছাত্রলীগ হামলা চালিয়েছে। ছাত্রলীগের হামলার ভয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এখন ছাত্রলীগের কোনো নেতাকে নির্যাতনের প্রতিবাদ জানাতে ভয় পাচ্ছে।
‘পুলিশের অনুগ্রহ ভিক্ষা করে ছাত্রলীগের শীর্ষনেতাদের রাজনীতিতে টিকে থাকার অভিলাষের কারণে এখন পথে-ঘাটে ছাত্রনেতাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নির্যাতিত হচ্ছে।’
ছাত্রদলের দাবি, নিজেদের কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্যাতনকারী এক অফিসারের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবাদ না করে ছাত্ররাজনীতির ইতিহাসে ছাত্রলীগ কলঙ্ক লেপন করেছে।
ছাত্রলীগের মতো একটি পুরনো ছাত্রসংগঠনের এই অমর্যাদাকর অবস্থানের কারণে নিন্দা ও হতাশা প্রকাশ করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের সভাপতি খোরশেদ আলম সোহেল এবং সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম দুজন ছাত্রলীগ নেতাকে নির্যাতনসহ অতীতের সব পুলিশি নির্যাতনের দায়ে এডিসি হারুনকে বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন।