ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদের পিটুনিতে আহত হয়ে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসাপাতালে ভর্তি আছেন ছাত্রলীগ নেতা আনোয়ার হোসেন নাঈম।
রোববার বিকেলে একটি গণমাধ্যমকে হাসপাতালের বিছানায় শুয়েই সেই ঘটনার বর্ণনা দেন তিনি। কীভাবে তাকে পেটানো হয়েছে, কে ছিলেন এ ঘটনার মূলে- এসব জানিয়েছেন এই ছাত্রলীগ নেতা।
শাহবাগ থানায় তুলে নিয়ে শনিবার রাতে তিনি ও ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক মুনিমকে নির্যাতন করা হয়। এরই মধ্যে এডিসি হারুনকে রমনা বিভাগ থেকে প্রত্যাহার করে পিওএমে সংযুক্ত করা হয়েছে।
আনোয়ার হোসেন নাঈম বলেন, ‘শনিবার রাতে আমি এবং ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক মুনিম (শরীফ আহমেদ মুনিম) শাহবাগের বারডেম হাসপাতাল হয়ে ক্যাম্পাসের দিকে আসছিলাম। এরপর আমরা বারডেম হাসপাতালের সামনে রাষ্ট্রপতির এপিএস আজিজুল হক মামুন ভাইকে দেখতে পাই। আমরা নামতে নামতে দেখি, ভাই লিফটে করে কার্ডিওলজি বিভাগের সামনে চলে যান।
‘৫-৭ মিনিট পরে গিয়ে আমরা দেখি, ভাই এবং এডিসি হারুনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হচ্ছে। এরপর আমি এবং মুনিম ঘটনার মীমাংসা করার চেষ্টা করি। পরে সেখানে সেটা মীমাংসা হয়। এর কিছুক্ষণ পর এডিসি হারুন ১০-১৫ জন সন্ত্রাসী নামক পুলিশকে ফোন দিয়ে সেখানে নিয়ে আসেন। তারা আজিজুল হক মামুন ভাই, আমি এবং মুনিমের ওপর চড়াও হয়। এরপর সেখান থেকে মারতে মারতে মুনিমকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।’
তিনি বলেন, ‘এই ঘটনার ৫-৭ মিনিট পর আমি শাহবাগ থানায় যাই। আমি থানায় ঢুকলে এডিসি হারুন উপস্থিত পুলিশদেরকে দেখিয়ে বলে, এ আমাকে মারছে। একে তোরা মার। এরপর থানার ওসির রুমে এডিসি হারুনসহ ১০-১৫ জন এসআই এবং কনস্টেবল আমার ওপর পৈশাচিক নির্যাতন করে। তারা বুট জুতা দিয়ে লাথি, কিল, ঘুষি যে যেভাবে পারছে আমাকে মেরে আহত করেছে। সারা শরীর আমার এখন ব্যথা। আমার এই পর্যন্তই মনে পড়ছে। এরপরের ঘটনা আমার আর মনে নেই।’
আনোয়ার হোসেন নাঈম বলেন, ‘এই ঘটনার পর বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক আমাকে দেখতে এসেছেন। তারা আমাকে আশ্বস্ত করেছেন উনারা এটা নিয়ে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পর্যন্ত কথা বলবেন। রমনা জনের ডিসি মহোদয় এসেছিলেন। উনিও বলেছেন, ডিএমপি কমিশনার স্যার এবং আইজি স্যারের সাথে উনি কথা বলবেন। কিন্তু আমি এখানে ভরসা পাচ্ছি না।’
আক্ষেপ করে নাইম বলেন, ‘ছাত্রলীগ এতিমের সংগঠন। আর এই সংগঠনের একজন নেতার সঙ্গে হওয়া এই ঘটনার বিচার করতে পারবেন একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার কাছে আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাচ্ছি।
‘থানা হচ্ছে মানুষের নিরাপদ আশ্রয়স্থল আর সেই থানায় নিয়ে গিয়ে আমাকে হত্যার উদ্দেশে মারধর করা হয়েছে। আমি তাদেরকে আমার পরিচয় দিয়েছি কিন্তু তারপরও আমাকে এভাবে মেরেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি তার সুষ্ঠু বিচার চাই। সুষ্ঠু বিচার মানে এই জোন থেকে ওই জোনে বদলি নয়। তাকে চাকরিচ্যুত করতে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিনীত অনুরোধ করছি।’
এ সময় হাসাপাতালে থাকা আনওয়ার হোসেন নাইমের মা বলেন, ‘আমার বাজানকে তো মাইরা ফেলানোর জন্যই তো সেখানে নিয়ে গিয়েছিল। আজরাইলের মত ১৫-২০ জন আমার ছেলেকে কেন এইভাবে মারলো আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে এটার বিচার চাই।’