অযোগ্যতা আর দুর্নীতির কারণে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সরকার চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে বলে দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও ঢাকার দুই সিটি মেয়রের পদত্যাগ দাবি করেছেন তিনি।
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রোববার সকালে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে ঢাকা উত্তর-ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন পুরোপুরি নির্বিকার। ডেঙ্গু জ্বরে কাঁপছে বাংলাদেশ। স্বাস্থ্য খাতে সর্বগ্রাসী দুর্নীতির কারণে ডেঙ্গু পরিস্থিতি এখন মহামারি আকার ধারণ করেছে।’
তিনি বলেন, ‘ডেঙ্গুতে প্রতিদিন ২০ জন মানুষ মারা যাচ্ছে। হাসপাতালে রোগীদের ঠাঁই হচ্ছে না। আবার চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে গিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে মানুষ। লাশের সারি প্রতিনিয়ত দীর্ঘ হচ্ছে। শিশুরা মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে। ইতোমধ্যে ডেঙ্গুতে যারা মারা গেছে তাদের বড় একটা অংশ শিশু।
‘সম্প্রতি ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৭ দিনের ব্যবধানে দুই সন্তান হারিয়ে পরিবারের ঢাকা ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার খবর ব্যর্থ এই সরকারের বিবেককে নাড়া দেয় না। তাদের এসব নিয়ে কোনো চিন্তা নেই, জবাবদিহিতা নেই।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকারি হিসাবে এ বছর ডেঙ্গুতে ৭১৬ জন মারা গেছে। তাদের মধ্যে ২০৩ জন ঢাকার বাইরে। মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৪৫ হাজারের বেশি।
‘নিম্নমানের কিট ও সরকারের উদাসীনতার কারণে কী পরিমাণ মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত সেই তথ্যও আমরা জানতে পারছি না। তবে ডেঙ্গুতে মৃত্যু ও আক্রান্তের বাস্তব সংখ্যাটা যে সরকারের দেয়া হিসাবের চেয়ে বেশি তা সহজেই অনুমান করা যায়।’
ফখরুল বলেন, ‘ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে শুধু ঢাকার বাজেটই দুই হাজার কোটি টাকার বেশি, যা ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা আত্মসাৎ করেছে। ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও মেয়র পরিবারের প্রমোদ ভ্রমণেই প্রমাণ হয় এই রোগ নিয়ে শাসক গোষ্ঠীর অবহেলা ও উদাসীনতা। মানবতাহীন অনির্বাচিত গণবিরোধী সরকার বলেই তারা জনস্বাস্থ্যের প্রতি ভ্রূক্ষেপহীন।
‘ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং দুই সিটি করপোরেশন যেহেতু ব্যর্থ হয়েছে, আমরা অবৈধ সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও দুই অনির্বাচিত মেয়রের পদ্যতাগ দাবি করছি।’
ডেঙ্গু দুর্যোগে দেশপ্রেমিক জনগণ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের বিগত নির্বাচনে আমাদের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ও ইশরাক হোসেন এবং ড্যাব ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে অনেক উদ্যোগ নিয়েছেন। সেগুলোতে সবাইকে যুক্ত হয়ে তা সফল করার আহ্বান জানাচ্ছি।’