প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এক টুইট পোস্টে তিনি এ তথ্য জানিয়েছেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে নয়াদিল্লিতে জি-২০ সম্মেলনে যোগ দিতে শুক্রবার তিন দিনের সফরে নয়াদিল্লি যান শেখ হাসিনা। এদিন সন্ধ্যায় নয়াদিল্লিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে এটিই শেষ আনুষ্ঠানিক বৈঠক।
বৈঠক শেষে টুইটারে নরেন্দ্র মোদি লিখেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। গত ৯ বছরে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের অগ্রগতি খুবই সন্তোষজনক। আমাদের আলোচনায় কানেক্টিভিটি, বাণিজ্যিক সংযুক্তি এবং আরও অনেক বিষয় অন্তর্ভুক্ত ছিল।’
বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় আলাদাভাবে পোস্টটি করা হয়।
এবারের জি-২০ সম্মেলনে বাংলাদেশসহ ৯টি দেশকে অতিথি রাষ্ট্র হিসেবে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছে আয়োজক ভারত। ভারতের সঙ্গে বিদ্যমান নানা সম্পর্কের ভিত্তিতে দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ সম্মেলনে আমন্ত্রণ পায়।
বাংলাদেশ ছাড়া আমন্ত্রিত অন্য দেশগুলো হচ্ছে মিসর, মরিশাস, নেদারল্যান্ডস, নাইজেরিয়া, ওমান, সিঙ্গাপুর, স্পেন ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।
দুই প্রধানমন্ত্রীর সফরে তিনটি সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনটি সমঝোতা স্মারক হলো: ‘কৃষি গবেষণায় সহযোগিতা’, ‘সাংস্কৃতিক বিনিময়’ এবং ‘দুই দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে আর্থিক লেনদেন সহজীকরণ।’
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে জি-২০ সম্মেলনে যোগ দিতে শুক্রবার দুপুরে নয়াদিল্লির উদ্দেশে রওনা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্থানীয় সময় শুক্রবার বেলা ১২টা ৪০ মিনিটে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে নয়াদিল্লিতে জি-২০ সম্মেলনে যোগ দিতে তিন দিনের সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেখানে পৌঁছালে লাল গালিচায় তাঁকে স্বাগত জানানো হয়। শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানান ভারতের রেল ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী দর্শনা বিক্রম জারদোশ। বিমানবন্দরে একটি সাংস্কৃতিক দল স্বাগত নৃত্যও পরিবেশন করে।
এর আগে সকালে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি বিশেষ ফ্লাইটে শেখ হাসিনা ও তাঁর সফরসঙ্গীরা নয়াদিল্লির উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন। এ সফরে বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানাও রয়েছেন।
তিন দিনের সফরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জি-২০ নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনের দুটি অধিবেশনে ভাষণ দেবেন। যেটি ভারতের নয়াদিল্লির প্রগতি ময়দানের মণ্ডপম সেন্টারে ‘এক পৃথিবী, একটি পরিবার এবং এক ভবিষ্যৎ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে শনিবার শুরু হতে যাচ্ছে।
তিনি বৈশ্বিক দক্ষিণে জলবায়ু পরিবর্তন, কোভিড-১৯-পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার এবং ইউরোপে চলমান যুদ্ধের কারণে জ্বালানি, খাদ্য ও সার এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বৈশ্বিক সরবরাহে ব্যাঘাতের মতো বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের দিকে আলোকপাত করবেন। তিনি সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী বিশ্বনেতাদের কাছে বিভিন্ন আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবিশ্বাস্য সাফল্যের অভিজ্ঞতা তুলে ধরবেন।
শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী শনিবার আরও চার থেকে পাঁচজন সফররত নেতার সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
সৌদি ক্রাউন প্রিন্স ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমান বিন আবদুল আজিজ, আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট আলবার্তো অ্যাঞ্জেল ফার্নান্দেজ, সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে (দ্বিপক্ষীয়) বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে।
বাংলাদেশসহ ৯টি দেশকে অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানিয়েছে জি-২০-এর চেয়ারম্যান ভারত। এ সম্মেলন ৯ ও ১০ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ১৯টি দেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত একটি আন্তসরকারি ফোরাম হলো জি-২০।
১০ সেপ্টেম্বর (রোববার) প্রধানমন্ত্রী দুপুর সাড়ে ১২টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি চার্টার্ড ফ্লাইটে নয়াদিল্লি ত্যাগ করে দেশে ফিরবেন।