বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বাইরের কারও হস্তক্ষেপ প্রত্যাশিত নয়: ল্যাভরভ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ২২:৪১

বাংলাদেশ রাশিয়ার অনেক পুরনো অংশীদার উল্লেখ করেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী। রোহিঙ্গা ইস্যুতে পশ্চিমারা বাংলাদেশকে চাপ দিলে হিতে বিপরীত হতে পারে বলেও সতর্ক করেন তিনি। এসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, ‘আমরা এ অঞ্চলে প্রক্সি ওয়ার চাই না। আমরা সব সমস্যার সমাধান শান্তিপূর্ণ সংলাপ ও আলোচনার মাধ্যমে করতে চাই।’

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বাইরের কারও হস্তক্ষেপ প্রত্যাশিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। এসময় বাংলাদেশের স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতির প্রশংসা করে তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের চাপের মধ্যেও বাংলাদেশ তার স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি বজায় রেখেছে।

বৃহস্পতিবার রাতে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বৈঠক শেষে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

এসময় ইন্দো-প্যাসিফিক ইস্যুতে তিনি বলেন, ‘চীনকে প্রতিহত ও ভারতকে একঘরে করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। এটি তাদের উদ্দেশ্য।’

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা সমাধানে আমরা জাতিসংঘসহ নানা প্ল্যাটফর্মে কাজ করছি। মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা করছি, যা অব্যাহত থাকবে।’

রোহিঙ্গা ইস্যুতে পশ্চিমারা চাপ দিলে হিতে বিপরীত হতে পারে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বাইরের কারও হস্তক্ষেপ প্রত্যাশিত নয় বলে মন্তব্য করে ল্যাভরভ বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ আমাদের ভালো এবং পুরোনো অংশীদার। অনেক ধরনের অসুবিধা থাকা সত্ত্বেও আমাদের রাজনৈতিক সংলাপ চালিয়ে গেছি। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের পর বাংলাদেশ আমাদের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার।’

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ শিডিউল অনুযায়ী চলছে জানিয়ে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে এলএনজি, সার, গম রপ্তানির জন্য আলোচনা চলছে। নিষেধাজ্ঞার কারণে সাপ্লাই-চেইনে সমস্যা হয়েছে সত্যি, তবে রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রের সব মালামাল সময়মতো বাংলাদেশে পৌঁছেছে।’

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লাভরভ। ছবি: ফোকাস বাংলা

এসময় রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থানে যুক্তরাষ্ট্রের চাপের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ নিজেদের পররাষ্ট্রনীতিতে অটুট থাকবে বলে ল্যাভরভকে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

তিনি বলেন, ‘আমাদের পররাষ্ট্রনীতি আছে। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়- আমরা ভারসাম্য কূটনীতি মেনে চলার চেষ্টা করি। আমরা আমাদের আগ্রহকে গুরুত্ব দিই। আমরা স্বাধীন ও সার্বভৌম সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকি।’

সংলাপ এবং আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ সব সমস্যার সমাধান করতে চায় জানিয়ে মোমেন বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, সংলাপ ও আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা। আমাদের অবস্থান পরিষ্কার- আমরা এ অঞ্চলে প্রক্সি ওয়ার চাই না। আমরা সব সমস্যার সমাধান শান্তিপূর্ণ সংলাপ ও আলোচনার মাধ্যমে করতে চাই। এটাই আমাদের অবস্থান।’

মস্কোর সঙ্গে ঢাকার গভীর সম্পর্কের কথা তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে রাশিয়া আমাদের সর্বাত্মকভাবে সাহায্য করেছে। মুক্তিযুদ্ধের পর দেশ গঠনে তারা আমাদের অনেক সাহায্য করেছে। আমাদের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক গভীর। বর্তমানেও তারা আমাদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাহায্য করছে।’

প্রায় আধঘণ্টার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে আলোচনা বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে আলোচনার মধ্যে আমরা অনেক ইস্যু তুলে নিয়ে এসেছি। আমাদের ইস্যু ছিল রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, এটা মোটামুটি যথাসময়ে শেষ হবে। রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এ ইস্যুতে তারা আমাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে।’

রাশিয়া বাংলাদেশকে এলএনজি এবং ক্রুড অয়েল আনার প্রস্তাব দিয়েছে বলেও জানান তিনি।

দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত ঘণ্টাব্যাপী ওই বৈঠক পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট দ্বিপক্ষীয় নানা বিষয়ের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক নানা ইস্যুতে তাদের মধ্যে অত্যন্ত খোলামেলা এবং ফলপ্রসূ আলোচনা হয়।

দুই দিনের সফরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকা পৌঁছান রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। এটিই প্রথম বাংলাদেশ সফর ল্যাভরভের। বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আবদুল মোমেন। বিমানবন্দর থেকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে যান রুশ মন্ত্রী। সেখানে বৈঠকে বসেন দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

শুক্রবার সকালে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু জাদুঘর পরিদর্শন করবেন তিনি। এরপর গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হবেন। এদিন বিকেলেই জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে নয়াদিল্লির উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

এ বিভাগের আরো খবর