কক্সবাজারে মাছ ধরার ট্রলারে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ১২ জেলে দগ্ধ হওয়ার ঘটনায় তিন দিনে আরও দুই জেলের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৮ জন। সবশেষ বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২২ বছর বয়সী রফিকুল ইসলামের মৃত্যু হয়।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ট্রলারে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ওই ঘটনায় এর আগে মারা যান- ২২ বছর বয়সী রফিকুল ইসলাম, ২৬ বছর বয়সী শফিকুল ইসলাম, ৩৮ বছর বয়সী রহিম উল্লাহ, ৩৫ বছর বয়সী শাহিন, ২২ বছর বয়সী আরমান, ২০ বছর বয়সী ওসমান গনি, ৫৫ বছর বয়সী আইয়ুব আলী ও ৩৬ বছর বয়সী দ্বীন মোহাম্মদ। বিস্ফোরণে সৃষ্ট আগুনে তাদের শরীরের ৪৫ থেকে ৯০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। শ্বাসনালীও ক্ষতিগ্রস্ত ছিল।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান বলেন, ‘দগ্ধদের মধ্যে চমেক হাসপাতালে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তিনজন ভর্তি ছিল। তাদের মধ্যে দুজন আইসিইউতে এবং অন্যজন ওয়ার্ডে। বৃহস্পতিবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় আইসিইউতে রফিকুল নামের একজন মারা গেছেন।’
এর আগে মঙ্গলবার রাত পৌনে ১২টার দিকে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শফিকুলের মৃত্যু হয় বলে জানান তিনি।
এদিকে দুর্ঘটনার পর দগ্ধ অবস্থায় ১০ জনকে দগ্ধ অবস্থায় চমেক হাসপাতালে নিয়ে এলে ওইদিন রাতে দ্বীন মোহাম্মদ ও আইয়ুব আলীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। তাদের মধ্যে আইয়ুব আলী ঢাকায় নেয়ার পথে শনিবার ভোরে মারা যান বলে জানান তার ছেলে মুহিব্বুল্লাহ। তাছাড়া ঢাকায় নেয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৪ সেপ্টেম্বর দ্বীন মোহাম্মদের মৃত্যু হয় বলে জানান কক্সবাজার সদর থানার ওসি মো. রফিক।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার সকালে কক্সবাজার পৌরসভার ৬ নম্বর ঘাটে মাছ ধরার ট্রলারে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ১২ জেলে দগ্ধ হন। আহত ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদেরকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাদের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ৫ জনের মৃত্যু হয়। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত দগ্ধ ১২ জনের মধ্যে ৮ জনই মারা গেছেন।
‘এফবি লাকি’ নামের ওই ট্রলারটির মালিক সেলিম বহদ্দার। গভীর সাগর থেকে বৃহস্পতিবার মাছ ধরে ওই ট্রলার নিয়ে তীরে ফিরেছিলেন জেলেরা। শুক্রবার সকালে রান্নার জন্য নতুন গ্যাস সিলিন্ডারে চুলার সংযোগ দেয়ার সময় বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে ওই ট্রলারে থাকা ১৮ জেলের মধ্যে ১২ জন দগ্ধ হন।