উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ক্ষতিপূরণ দাবির বিষয়ে সতর্ক থাকতে জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সভাকক্ষে মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় তিনি এই নির্দেশনা দেন। প্রধানমন্ত্রী একনেক সভায় সভাপতিত্ব করেন। সূত্র: বাসস
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বৈঠকশেষে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্বৃত্ত করে ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে সরকার ক্ষতিগ্রস্তদের জমির বাজার মূল্যের তিনগুণ ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে। তবে আমাদের খুব সতর্ক থাকতে হবে, প্রকল্পের জায়গায় যাতে কেউ রাতারাতি অস্থায়ী বা বাঁশের কাঠামো তৈরি করে সেই কাঠামোর ক্ষতিপূরণ দাবি করতে না পারে।’
প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রকল্প এলাকায় তাদের প্রথম সফরের সময় প্রকল্পের স্থানগুলোর ছবি তুলে রাখতে বলেন, যাতে অতিরিক্ত ক্ষতিপূরণ দাবির প্রবণতা রোধ করা যায়।
একনেক সভায় সোনাগাজীতে সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি সংশোধিত প্রকল্প অনুমোদনের সময় প্রধানমন্ত্রী সোলার প্ল্যান্টের খুঁটির উচ্চতা একটি আদর্শ স্তরে রাখার জন্য বাস্তবায়নকারী সংস্থাকে নির্দেশ দেন। উদ্দেশ্য, খুঁটির নিচে যেন সর্বোচ্চ বাতাস, পানি ও সূর্যের আলো যেতে পারে। এর ফলে জমিতে ভালো চাষাবাদ হতে পারে।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, ইঞ্জিনচালিত নৌকা ও অন্যান্য নৌযান চলাচলের পথ সুগম করার জন্য নড়াইলে নবগঙ্গা নদীর ওপর নির্মাণাধীন সেতুর দুটি অংশ ভেঙে ফেলতে হয়েছে। কারণ সেতুর উচ্চতা কম ছিল। নকশায় ভুলের কারণে নির্মাণাধীন সেতু ভেঙে ফেলার প্রয়োজন হওয়ায় একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী অসন্তোষ প্রকাশ করেন। সরকারি তহবিলের অপচয় রোধ করতে প্রকল্পের নকশা নির্ভুলভাবে প্রণয়নের নির্দেশ দেন তিনি।
চাঁদপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজ প্রকল্প অনুমোদনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রকল্প এলাকার বাঁধগুলোকে ভাঙনের হাত থেকে রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পরই মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের জন্য অবকাঠামো নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি এ ব্যাপারে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেন।
এম এ মান্নান বলেন, ‘এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধনের সময় আমরা সাধারণ মানুষের উচ্ছ্ব্সা ও আনন্দ দেখেছি। দেশবাসী এ ধরনের উন্নয়ন প্রকল্প আরও দেখতে চায়। আশা করি, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের অবশিষ্ট কাজ শিগগিরই শেষ হবে।’
জনগণকে খুশি করতে জাতীয় নির্বাচনের আগে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে আংশিকভাবে খুলে দেয়া হয়েছে কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী মান্নান বলেন, ‘আগামী নির্বাচনের দিকে যদি সরকারের সুদৃষ্টি থাকে তাহলে সেটা দোষের কিছু নয়। নির্বাচনের আগে ভোটারদের কাছে আমাদের যেতে হবে। ব্যবহারকারীদের স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য এক্সপ্রেসওয়ের আংশিক উদ্বোধন করা হয়েছে। বাকি অংশটি চালু হলে, সেটি নিশ্চয়ই আরও চমৎকার হবে।’
আগামী মাসে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু হচ্ছে বলে জানান তিনি।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে সরকারের জ্যেষ্ঠ এই মন্ত্রী বলেন, ‘কোনো তথ্য নিয়ে সরকার লুকোচুরি করে না। যখন তথ্য পাওয়া যাবে, তখন পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতির তথ্য প্রকাশ করা হবে।’