কক্সবাজারে মাছ ধরার ট্রলারে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ আরও তিন জেলে মারা গেছেন। ওই দুর্ঘটনায় দগ্ধ ১২ জেলের মধ্যে এ নিয়ে ৬ জনের মৃত্যু হল।
সবশেষ মঙ্গলবার চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিন জেলের মৃত্যু হয়। তারা হলেন- ৩৮ বছর বয়সী রহিম উল্লাহ, ৩৫ বছর বয়সী শাহিন ও ২২ বছর বয়সী আরমান।
এই দুর্ঘটনায় এর আগে মারা যান ২০ বছর বয়সী ওসমান গনি, ৫৫ বছর বয়সী আইয়ুব আলী ও ৩৬ বছর বয়সী দ্বীন মোহাম্মদ। সিলিন্ডার বিস্ফোরণে এই ছয়জনের শরীরের ৬০ থেকে ৯০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। শ্বাসনালীও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
কক্সবাজার পৌরসভার ৬ নম্বর ঘাটে শুক্রবার সকালে ট্রলারে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ১২ জেলে দগ্ধ হন। ছবি: নিউজবাংলা
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান বলেন, ‘দগ্ধদের মধ্যে এই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ৭ জন। তাদের মধ্যে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রহিম উল্লাহ, বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল ৭টা ৫০ মিনিটের দিকে শাহিন ও দুপুর ১টায় আরমানের মৃত্যু হয়।’
এর আগে রোববার রাতে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজনের মৃত্যু হয় বলে জানান তিনি।
এদিকে দুর্ঘটনার পর দগ্ধ ১০ জনকে চমেক হাসপাতালে নিয়ে এলে ওইদিন রাতেই দ্বীন মোহাম্মদ ও আইয়ুব আলীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। তাদের মধ্যে আইয়ুব আলী ঢাকায় নেয়ার পথে শনিবার ভোরে মারা যান বলে জানান তার ছেলে মুহিব্বুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘ঢাকায় নেয়ার পথে শনিবার ভোরে আমার বাবা মারা গেছেন। আর ঢাকায় নেয়া দ্বীন মোহাম্মদ সোমবার মারা গেছেন।’
কক্সবাজার সদর থানার ওসি মো. রফিক বলেন, ‘দ্বীন মোহাম্মদ নামে একজনকে ঢাকায় নেয়া হয়েছিল৷ গতকাল তিনিও চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।’
এর আগে শুক্রবার সকালে কক্সবাজার পৌরসভার ৬ নম্বর ঘাটে মাছ ধরার ট্রলারে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ১২ জেলে দগ্ধ হন। তাদের মধ্যে ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের চট্টগ্রাম মেডি্যোল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
বর্তমানে চমেক হাসপাতালের আইসিইউতে দুজন ও বার্ন ইউনিটে আরও দুজন চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান।
‘এফবি লাকি’ নামের ওই ট্রলারটির মালিক সেলিস বহদ্দার। গভীর সাগর থেকে বৃহস্পতিবার মাছ ধরে ওই ট্রলার নিয়ে তীরে ফিরেছিলেন জেলেরা। শুক্রবার সকালে রান্নার জন্য নতুন গ্যাস সিলিন্ডারে চুলার সংযোগ দেয়ার সময় বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে ওই ট্রলারে থাকা ১৮ জেলের মধ্যে ১২ জন আহত হন।