সাত দিন আগে ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়া ভাইকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছেন সদর উপজেলার পাঁচখোলা গ্রামের ইদ্রিস ফকির। চিকিৎসক তরল খাবার খাওয়াতে বললে ডাবের খোঁজে ইদ্রিস আসেন হাসপাতালের সামনে। একেকটি ডাব তার কাছে চাওয়া হয় ১২০ থেকে ১৫০ টাকা।
দামশুনে হতবাক ইদ্রিস ডাব না কিনেই ফিরে যান। তার মতো একই অবস্থা অন্য অনেক রোগীর স্বজনদের।
মাদারীপুরের বাগানগুলোতে যেখানে একেকটি ডাব ৩০ থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, সেখানে ভোক্তাকে বাজার থেকে কিনতে হচ্ছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত।
চলমান ডেঙ্গু পরিস্থিতিকে পুঁজি করে যে যেভাবে পারছেন, সেভাবেই বাড়াচ্ছেন ডাবের দাম।
স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, পুষ্টি গুণ বিবেচনায় ডাব খাবার স্যালাইনের বিকল্প মাত্র।
ইদ্রিস ফকির বলেন, ‘ডাব কেনার চেয়ে না কেনাই ভালো। যে ডাব আগে ৩০ থেকে ৪০ টাকায় কিনছি, সেই ডাব এখন ১২০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত। আমার ভাইয়ের ডেঙ্গু হয়েছে বিধায় ডাব নিতে এসে হতবাক হলাম।
‘এর চেয়ে কয়েক প্যাকেট স্যালাইন কিনলেই ভালো। প্রশাসন বিষয়টিতে নজরও দেয় না। খুবই দুঃখজনক বিয়ষটা।’
জেলার একটি বাগানের মালিক ইকরাম হোসেন বলেন, ‘আমাদের বাগান থেকে প্রতি পিস ডাব ৩০ থেকে ৪০ টাকা দরে কিনে নেয়। এর সঙ্গে মাঝে মাঝে গাছ পরিষ্কার করে দেয়। এই ডাবই খুচরা প্রতি পিস বিক্রি করে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। আমরা মলিকরা লসে থাকি।’
ডাব বিক্রেতা আমজাত হোসেন বলেন, ‘মাদারীপুর জেলায় ডাব গাছ বেশি না থাকায় পার্শ্ববর্তী বরিশাল ও গৌরনদী, পিরারবাড়ী, শশীকর এলাকার বাগান মালিকদের কাছ থেকে প্রতি পিস ডাব ৮০ থেকে ৯০ টাকা ধরে কিনে আনি। এ কারণে বাগান অথবা আড়ত থেকে বেশি দামে ডাব কিনতে হচ্ছে। ফলে বেশি দামে বিক্রি করছি। ডাবের দাম কমা-বাড়া আমাদের হাতে নেই।’
স্বাস্থ্যগুণ বিবেচনায় খাবার স্যালাইনের বিকল্প হলো ডাবের পানি। তাই ক্রেতাদের অতিরিক্ত ডাব না কিনে খাওয়ার স্যালাইন খাওয়ার পরামর্শ দেন সিভিল সার্জন মুনীর আহমদ খান।
তিনি বলেন, ‘ডাব স্যালাইনের বিকল্প মাত্র। এটার জন্য চড়া দামে ডাব কেনার কোনো অর্থ হয় না। এর চেয়ে খাবার স্যালাইন খেলেই ভালো হবে। তাতে মৌসুমী ডাব বিক্রেতাদের সঠিক জবাব দেয়া হবে।’